নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরক্লার্কে ইউনিয়নে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে তিনটি বসতঘর ও দুইটি গবাদি পশু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে বসত ঘরের আসবাবপত্র সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেন ক্ষতিগ্রস্থ নুরনবী।
রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ভোর রাতের দিকে চরক্লার্কে ইউনিয়নে ৫নম্বর ওয়ার্ডে মরহুম খোরশেদ আলমের ছেলে নুরনবীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সূত্র জানায়, দিনমজুর নুরনবী রাতে হঠাৎ দেখতে পান তার বসত ঘরে আগুন লেগেছে। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে বসত ঘর, রান্নাঘর ও গরু ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসী এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও বসত ঘরের সকল আসবাব ও গোয়াল ঘরে থাকা দুইটি গরু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সুবর্ণচর ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ নুরনবী চৌধুরী বলেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যাওয়ার আগেই এলাকাবাসী আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এর মধ্যে বসতঘর ও গোয়াল ঘরে থাকা দুইটি গরু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানায়, একসময় এই খাল দিয়ে নৌকা চলাচল করতো কিন্তু বিভিন্ন শিল্প কারখানা মাটি ভরাট করে খাল জবরদখল করে ফেলে। প্রশাসনের উদ্ধার কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এদিকে ভালুকা পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার ভূমি ফারহান লাবীব জিসান বলেন, মাটি ভরাট করে অনেক অংশে দীর্ঘদিন যাবৎ পানি প্রবাহ আটকে ছিলো। পানিপ্রবাহ টিকিয়ে রাখতে ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি লাগবে পৌর ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য ও খবরের কাগজ প্রতিনিধি মোহাম্মদ রফিকুল ইসলামের বাড়িতে একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন দাউদপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এ হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে চন্দ্রগঞ্জ থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনা নিশ্চিত করেন।
সাংবাদিক রফিকের স্বজনরা জানায়, রাত সাড়ে আটটার দিকে একটি মোটরসাইকেল ও একটি সিএনজি অটো রিকশা করে 8 জন সন্ত্রাসী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রফিকুল ইসলামের বাড়িতে হানা দেয়। সন্ত্রাসীদের উপস্থিতি টের পেয়ে পরিবারের সদস্যরা ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে দেয়।
এসময় তারা রফিকুল ইসলামের সাথে জরুরী কথা আছে বলে ঘর থেকে বাইরে ডেকে নেওয়ার চেষ্টা চালায়। রফিকুল ইসলাম ঘর থেকে বের হতে অস্বীকৃতি জানালে সন্ত্রাসীরা ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম থানা পুলিশ ও প্রতিবেশীদের ফোনে খবর দিলে প্রতিবেশীরা রফিকুল ইসলামের বাড়িতে ছুটে আসছে জেনে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তার প্রতিবেশী বন্ধু মোহাম্মদ নুর আলম নুরু টেইলারের মামলার তদারকি করায় মামলার এজাহার নামীয় ও খুনের সাথে জড়িত আসামি নিকু ও তার গ্রুপের সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালাতে পারে।
এদিকে এ ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে লক্ষ্মীপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি হোসাইন আহমদ হেলাল, সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম পাবেল, লক্ষ্মীপুর রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক গাজী মমিন উল্লাহ, যুগ্ন সম্পাদক আব্দুল মালেক নিরব, লক্ষ্মীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি জহির উদ্দিন সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্বাছ হোসেন, চন্দ্রগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন পৃথক পৃথক বিবৃতিতে সাংবাদিক রফিকুল ইসলামের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
তারা অবিলম্বে হামলার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ও সাংবাদিক পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কায়সার হামিদ জানান, হামলায় জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ তৎপর রয়েছে।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামে রাতের আঁধারে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। এতে একদিকে নদী ভাঙনের কবলে পড়ছে গ্রামের ফসলি জমিসহ মানুষের বসত বাড়ি। ইতোমধ্যে ভিটেমাটি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শতাধিক পরিবার।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ভোরে রামপ্রসাদের চর গ্রামের পাড় ঘেঁষে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলনের চিত্র দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের নলচর গ্রামের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই ড্রেজিং কার্যক্রমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে দিনের পরিবর্তে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন।
স্থানীয়দের তথ্যমতে, নলচর গ্রামের আঃ বারেক, তার ছেলে মহসিন, আলী হোসেন ও হাসনাত প্রধান, হাবিবুল্লার ছেলে মো. রবিউল ইসলাম রবি, সোবহান মিয়ার ছেলে মো. জোয়েল এবং আক্কাস আলীর ছেলে মো. টিটু এই কার্যক্রমে সরাসরি যুক্ত। ব্যবহৃত ড্রেজারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাম হলো ‘এমবি তানসিল জিসান এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল-মদিনা এন্টারপ্রাইজ’, ‘এমবি সরকার এন্টারপ্রাইজ’, ‘আল্লাহর রাসূল এন্টারপ্রাইজ’, ‘রিয়া সুপার-১,২,৩,৪’ এবং ‘এমবি তোহা লোডিং ড্রেজার’।
৫ আগস্ট দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ১২ অক্টোবর চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ একটি ড্রেজার জব্দ করে। এরপর ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাতে যৌথবাহিনীর অভিযানে দুজনকে আটক করা হলেও অপরাধীদের কার্যক্রম থামেনি।
রামপ্রসাদের চর গ্রামের বাসিন্দা হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন বলেন, কয়েক বছর আগে সরকারি নিষেধাজ্ঞার কারণে বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় আবার রাতের আঁধারে ড্রেজিং শুরু হয়েছে। নদীর এক তৃতীয়াংশ ইতোমধ্যেই বিলীন হয়ে গেছে। শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি হারিয়ে শহরে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন ধরে চালিভাঙ্গা ও রামপ্রসাদের চর এলাকায় ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে। তারা সরকারি আইন অমান্য করে প্রভাব খাটিয়ে নিজেদেরে ইচ্ছেমত বালু উত্তোলন করছে। পাশাপাশি নদীপথে চাঁদাবাজির মতো গুরুতর অপরাধেও তারা জড়িত।
এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে অভিযুক্ত মো. রবিউল ইসলাম রবি এবং অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তারা কল রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের ইজারা বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর বিগত দুই বছর বালু উত্তোলন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও বর্তমানে তা আবার পুরোদমে শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে মুসলিমা বলেন, মেঘনা নদীতে বালু উত্তোলনের জন্য সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। যেকোনো ধরনের বালু উত্তোলনই অবৈধ। যারা ইতোমধ্যে এই কাজের সঙ্গে জড়িত বা ভবিষ্যতে জড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, প্রশাসন এ বিষয়ে সতর্ক রয়েছে এবং অবৈধ কার্যক্রম প্রতিহত করতে নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্বব্যাংক সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের জন্য দেশের ছাত্র, তরুণ ও যুব সমাজের আশা ও আকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান কেন্দ্রিক অনুপ্রেরণামূলক দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র বা গ্রাফিতির এক প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত দৃকপাঠ ভবনে 'পেইন্ট দ্য স্কাই, মেক ইট ইওরস: ফিউচার বাংলাদেশ ইন দ্য আইজ অব দ্য ইয়ুথ' শীর্ষক এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে তিনি একটি প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন। এ সময় সেখানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর (বাংলাদেশ ও ভুটান) আবদৌলায়ে সেক, কান্ট্রি ডিরেক্টর ও প্রতিনিধি (এশিয়া ও প্যাসিফিক) ড. ভ্যালেন্টাইন আচানচো এবং বিশ্বব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেন, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ গঠনে তরুণরা যে মূল ভূমিকা পালন করে তার স্বীকৃতি বিশ্বব্যাংক বরাবরই দিয়ে এসেছে।
একটি অভূতপূর্ব ত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে সে বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি জানাতে বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণরা তাদের সৃজনশীলতা এবং শিল্পকে ব্যবহার করেছে। ছবিগুলো তরুণদের পরিবর্তন আনয়নকারী হওয়ার সীমাহীন সম্ভাবনার কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয়।
প্রদর্শনীতে উপস্থিত জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট ও কমিক বুক আর্টিস্ট সৈয়দ রাশাদ ইমাম তন্ময় বলেন, একটি বিপ্লবের পর এই দেয়াল লিখন বা গ্রাফিতিগুলো আমাদের বাংলা সংস্কৃতির ও ইতিহাসের অংশ হয়ে উঠে। ম্যুরাল, গ্রাফিতি কিংবা কার্টুন যেহেতু সমাজের নেতিবাচক দিকগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করে থাকে তাই এগুলো নিয়ে এতদিন সেভাবে কোন উৎসব হয়নি। কিন্ত এখন হচ্ছে। আর তা তরুণদের ব্যাপারে আমাদের ধারণা একেবারে পাল্টে দিয়েছে, এ বিষয়টি খুব ভালো লাগছে।
প্রদর্শনীতে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, কুমিল্লা, রংপুর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানসহ ১২টি জেলার তরুণ-যুবাদের আঁকা শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত দেয়াল লিখন ও দেয়ালচিত্র স্থান পেয়েছে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে তুলে ধরেছে।
প্রদর্শনীটি আজ শুরু হয়েছে। এটি আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে বিশ্বব্যাংক আয়োজিত এ প্রদর্শনী।