রাজশাহী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের বেহাল দশা
পুরো বাস টার্মিনালের ভেতর কাদাপানি। এর ভেতরে বাসগুলো কেবল রাখা হয়েছে। কিন্তু ভেতরে যাত্রীদের যাওয়ার জো নেই। শুধু বর্ষাকালে নয়, সারাবছরই এমন বেহাল দশায় থাকে রাজশাহীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল।
নগরীর শিরোইল এলাকায় অবস্থিত এই বাস টার্মিনালটিই সবচেয়ে পুরনো। রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আরডিএ) এটির রক্ষণাবেক্ষণ করে। টার্মিনালের ভেতর কাদাপানিতে একাকার থাকায় বাসগুলোকে যাত্রী তুলতে হয় সড়কে। বাসের মেরামতের কাজও চলে সড়ক দখল করে। ফলে রাস্তাটিতে যানজট লেগেই থাকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টার্মিনালের বেশিরভাগ অংশই কাদাপানিতে ডুবে আছে। পানিতে বসে আছে মশাদের দল। পুরো টার্মিনালই ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। ভেতরে কিছু গাড়ি রাখা হলেও যাত্রী ওঠা-নামা করা হচ্ছে টার্মিনালের বাইরের সড়কে। ফলে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে সেখানে যানজট দেখা দিচ্ছে।
বাস টার্মিনালের সামনের সড়কের ওপর জাহাঙ্গীর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বাসের মেরামতের কাজ চলছিল। বাসটির চালক সাদ্দাম হোসেন বলেন, টার্মিনালের ভেতর কাদায় দাঁড়ানোর মতোও জায়গা নেই। সেখানে গাড়ির নিচে শুয়ে মেকানিক কাজ করবে কীভাবে? কোন উপায় নাই। বাধ্য হয়েই সড়কে কাজ করাতে হয়।
টার্মিনাল থেকে বেরিয়ে রাস্তায় গাড়ি রেখে যাত্রী তুলছিল জাহিদ এন্টারপ্রাইজ নামের একটি বাস। বাসের চালক মো. সুইট বলেন, যাত্রী কাদাপানির ভেতর গিয়ে গাড়িতে উঠবে না। তাই তিনিও বাধ্য হয়ে রাস্তায় এসে যাত্রী তুলছেন।
আবদুল হালিম নামের এক হেলপার বলেন, শুধু যে বর্ষাকালে কাদাপানি তা নয়, সারাবছরই এ রকম বেহাল দশা থাকে টার্মিনালের। তিনি জানান, এখন বৃষ্টির পানি জমে কাদা হয়েছে। কিন্তু অন্য সময় গাড়ি ধোয়া-মোছার পানি জমা হয়। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় এ রকম খারাপ অবস্থা। হালিম আরও বলেন, টার্মিনালের ভেতর অনেক আগে বিছানো ইটগুলো কোথাও কোথাও আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। দীর্ঘদিন ধরে কোন সংস্কার কাজও হয়নি। সে কারণে টার্মিনালের এই বেহাল দশা।
রাজশাহী জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, টার্মিনালের ভেতরেও গর্তে পড়ে অনেক সময় গাড়ির পাতি ভেঙে যায়। আমরা বার বার আরডিএ চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি কর্ণপাত করেন না। ফলে রাস্তাতেই মেরামত এবং যাত্রী ওঠানামার কাজ করতে হয়।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে একাধিকবার আরডিএ চেয়ারম্যান মো. আনওয়ার হোসেনের সরকারি মোবাইলে কল দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি। এস্টেট অফিসার মো. বদরুজ্জামানের সরকারি মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া গেছে। তাই তাঁদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।