বেড়েছে সাংবাদিক নির্যাতন

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আইন ও সালিশ কেন্দ্র

আইন ও সালিশ কেন্দ্র

২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ৯ মাসে সাংবাদিক নির্যাতন বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এসময় নারী-শিশু নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও হেফাজতে মৃত্যু, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ও ভয়াবহতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।

১০টি জাতীয় দৈনিক ও বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদ ও আসক-এর নিজস্ব সূত্র থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আসকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচ্য সময়ে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে একজন সাংবাদিক গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং ১৫৪ জন সাংবাদিক বিভিন্নভাবে নির্যাতন, হামলা-মামলা ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। নির্যাতিত সাংবাদিকদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ৮ জন, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মীদের দ্বারা ১৪ জন, স্থানীয় পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ১৩ জন, হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালে ১৩ জন সাংবাদিক আহত হন। এ ছাড়া ১০৬ জন সাংবাদিক ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল ও সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

গত নয় মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে এবং ‘ক্রসফায়ারে’ মোট ৪৮ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে কথিত ‘ক্রসফায়ার’, বন্দুকযুদ্ধ, গুলিবিনিময় বা এনকাউন্টারে’ নিহত হয়েছেন ৩৪ জন, বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ৯ জন ও নির্যাতনে ৪ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া গ্রেপ্তারের পরে হার্ট অ্যাটাকে (পুলিশের ভাষ্যমতে) একজনের মৃত্যু হয়।

বিজ্ঞাপন

এ বছরের ৯ মাসে কারাগারে অসুস্থতাসহ বিভিন্ন কারণে মারা যান ৬৭ জন। এর মধ্যে কয়েদি ২৫ ও হাজতি ৪২ জন।

এই নয় মাসে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, যৌন হয়রানি ও সহিংসতা, ধর্ষণ ও হত্যা, পারিবারিক নির্যাতন, যৌতুকের জন্য নির্যাতন, গৃহকর্মী নির্যাতন, এসিড নিক্ষেপসহ নারী নির্যাতনের ঘটনা গত বছরের নয় মাসের তুলনায় বেড়েছে। এ সময় ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১ হাজার ৮৫ নারী, যার মধ্যে একক ধর্ষণের শিকার হন ৮৭৯ জন এবং দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন ২০৩ নারী। ধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন ৩৯ জন এবং আত্মহত্যা করেছেন ৮ নারী। এ ছাড়া ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে ২৫৬টি।

আলোচ্য সময়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন ১০১ নারী, এর মধ্যে ১০ নারী আত্মহত্যা করেছেন এবং হত্যার শিকার হয়েছেন ৩ নারী। এ ছাড়া যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১ জন পুরুষ, যার মধ্যে ৪ জন পুরুষ খুন হয়েছেন।

এ ছাড়া আলোচ্য সময়ে পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ৫২৭ নারী, যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছেন মোট ১৮২ নারী, ৩৮ জন গৃহকর্মী নির্যাতন ও হত্যার শিকার হন।

আলোচ্য সময়ে শিশুর প্রতি সহিংসতা ও নির্যাতনসংক্রান্ত পরিসংখ্যানও উদ্বেগজনক। গত ৯ মাসে হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে ১ হাজার ৬৩৬ শিশু।

গত ৯ মাসে হিন্দু সম্প্রদায়ের ১০২টি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিমা, মন্দির ও পারিবারিক পূজামন্ডপে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে ৭৮টি।

গত ৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে মোট ৩২১টি। এতে নিহত হয়েছেন ৬৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৪ হাজার ৪০৫ জন।