চাকরির নামে টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের ২ সদস্য আটক
রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকা থেকে সরকারি চাকরি দেওয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে প্রতারক চক্রের মূল হোতাসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে। গত ১৯ অক্টোবর রাতে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে। বুধবার (২০ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
আটক দুইজন হলেন- নরসিংদী পলাশ উপজেলার দাড়িহাওলা পাড়ার মো. আব্দুল মান্নান (৫০) এবং খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গজয়পুরের কাজী সোলাইমান হোসেন জনি (৩৬)।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এনএসআই ও র্যাব-৩ জানতে পারে ধানমণ্ডি এলাকায় একটি প্রতারক চক্র সরকারি বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার নাম করে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য র্যাব-৩ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। এর ধারাবাহিকতায় ভিক্টিমের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে এনএসআই ও র্যাবের একটি যৌথ আভিযানিক দল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ধানমণ্ডি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যদের আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র ও পরীক্ষার প্রবেশপত্র জব্দ করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক দুইজন প্রতারণার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা চাকরিপ্রত্যাশী বেকার যুবকদের অসহায়ত্ব ও অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতারণা করে আসছিল। আব্দুল মান্নান চাকরিপ্রত্যাশীদের টাকার বিনিময়ে সরকারি বিভিন্ন পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। প্রলোভনে রাজি হলে সে তাদের জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করে। তারপর চাকরিপ্রার্থীর যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন সরকারি পদে চাকরির প্রস্তাব দেয়। চাকরিপ্রার্থীর আর্থিক সক্ষমতা ও পদ অনুযায়ী টাকার পরিমান নির্ধারিত হয়। এভাবে একটি সরকারি পদে চাকরি দেওয়ার জন্য তারা প্রার্থীপ্রতি ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়ে থাকে। অভিভাবকদের সঙ্গে প্রাথমিক বোঝাপড়ার পর চুক্তি অনুযায়ী মান্নান প্রথমে অর্ধেক টাকা নিয়ে নেয় এবং বাকি টাকা নিয়োগপত্র পাওয়ার পর দিতে হবে মর্মে চুক্তি হয়। এরপর সে প্রার্থীকে কাজী সোলাইমান হোসেন জনির কাছে নিয়ে যায় এবং তাকে একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়।
এরপর প্রার্থীর কাছে ডাকযোগে ভুয়া নিয়োগপত্র পাঠানো হয় এবং নির্ধারিত তারিখে টাকাসহ চাকরিতে যোগদান করার জন্য বলা হয়। প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়ে প্রতারকচক্র কৌশলে পালিয়ে যায় এবং প্রার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এভাবে চক্রটি অভিযোগকারী এক ভিক্টিমকে সরকারি দপ্তরে কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকরির দেওয়ার প্রলোভন দিয়ে তার কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। ভিক্টিম চক্রটির কাছ থেকে পাওয়া নিয়োগপত্র পরিচিতজনদের দেখালে বুঝতে পারেন সেটি ভুয়া। এরপর তিনি র্যাব-৩ কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগকারী ছাড়াও প্রতারক চক্র বিভিন্ন সরকারি পদে চাকরির প্রলোভন দিয়ে ১৫ জনের কাছ থেকে কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।