মাংসের বাজারে অস্বস্তি!
বেশকিছু দিন ধরে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে অস্থিরতা চলছে। কোনভাবেই লাগাম ধরতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। এখনও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে নিত্যপণ্য। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩৫-৪০টাকা বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম কমে এখন ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বাড়ছে মাংসের দাম।
বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বাড্ডা,গুলশান এলাকায় ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
মাংসের বাজারে দেখা যায় গত সপ্তাহে ৫৫০টাকা কেজির গরুর মাংস ৫০টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা করে। ব্রয়লার কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা, লেয়ার ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৪০টাকা, গত সপ্তাহের ৩৩০ টাকার সোনালি এখন কেজিপ্রতি ৩৫০টাকা, দেশি মুরগির দাম বেড়ে হয়েছে ৪৫০ টাকা।
মাংসের বাজারে আসা একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমাদেরই এখন মাংস খাওয়া সম্ভব হয়ে উঠছে না। মাস শেষে পাওয়া বেতন আর নিত্যবাজারের খরচে হাঁপিয়ে উঠতে হয় আমাদের। সেখানে জবহীন লোকদের অবস্থা কতরা নাজুক বুজতেই পারছেন।
অন্যদিকে পাইকারি ডিমের শতক ৮৯০ টাকা করে বিক্রি হলেও খুচরা বাজারে হালি বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ টাকা করে।
অপরদিকে মাছের বাজারেও রয়েছে ক্রেতাদের হতাশা। ইলিশের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে বাজারে উঠলেও চোখে পড়েনি তেমন। ছোট ইলিশের কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৫৫০ টাকা। ১৬০ টাকার তেলাপিয়া গত সপ্তাহের ব্যবাধানে বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০টাকা, কার্প মাছের কেজি ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০টাকা করে, রুই মাছের কেজি ২২০-২৬০ টাকা, পাঙাস-১২০ টাকা, শিং বেড়ে হয়েছে ৪০০ টাকা কেজি।
মাছের বাজারে আসা মধ্য বয়সী একজন নারী জানান, মাংস এখন বড়লোকের খাবার। বাজারে আসলে মাংস বিক্রি যেদিকে হয় ওদিকে ভুলেও যায় না। অথচ এখন দেখি মাছও নাগালের বাইরে! এমন হলে মাছ ভাত ছাড়া আমাদের পানি-ভাত খাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না বলে জানান তিনি।
সবজির বাজারেও রয়েছে অস্বস্তি।গত সপ্তাহের ২৫টাকার আলু বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২৮ টাকা করে, টমেটো কেজিপ্রতি ১৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি, রসুন ৬০ টাকা, ১১০ টাকার শিম বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে, ঢেঁডশ কেজিপ্রতি ৬০ টাকা, পটল ৫০, পেঁপে-২৫-৩০,শসা ৫০, চড়া ৫০ টাকা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা করে। আদা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা।
সবজি বাজারের এমন দাম বৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করে রিকশাচালক লোকমান জানান, মাছ, মাংস যখন খেতে হিমশিম তখন সবজি খেয়ে অন্তত বেঁচে থাকার চেষ্টা। আর এখন দেখি সবজির দাম আগের থেকে কমেও না বরং বাড়ছে হু হু করে। এমন হলে আমাদের মত গরিবদের কি হাল হবে আল্লাহ জানে।
এদিকে সয়াবিন তেলের লিটার প্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা।
চালের দামে অপরিবর্তনে আটাশ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০টাকা। মিনিকেট খুচরা বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তবে নাজিরশাইল কেজিপ্রতি ১৫টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা কেজি করে।
চালের দাম বাড়াতে খুচরা দোকানদাররা বলছেন, এসব দাম কমা-বাড়ার হাত হলো পাইকারি বিক্রেতাদের হাতে। তারা আমাদের কাছে যত বেশি রাখে আমাদেরও তত বেশিতে বিক্রি করতে হয়।