দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’



এস এম জামাল, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’। ছবি: বার্তা২৪.কম

দেশের প্রথম রেলস্টেশন ‘জগতি স্টেশন’। ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের প্রথম রেলস্টেশন হচ্ছে কুষ্টিয়ার ‘জগতি স্টেশন’। তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে ঔপনিবেশিক বাংলায় রেলওয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে উন্নতি, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও পণ্য পরিবহনের কাজে এ অঞ্চলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে স্টেশনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গের রানাঘাট থেকে কুষ্টিয়ার দর্শনা ও পোড়াদহ হয়ে জগতি পর্যন্ত ব্রডগেজ এই রেলপথের উদ্বোধন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পর এই অঞ্চলের মানুষের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে জগতি স্টেশনটি। তখন জ্বালানি হিসেবে ‘কয়লা’ পুড়িয়ে সাদা-কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে ঝিকঝিক শব্দে স্টিম ইঞ্জিনের (বাষ্পচালিত) রেলগাড়ি এসে থামত স্টেশনে।

রেলগাড়ি দেখতে আশপাশের কৌতূহলী মানুষজনের ভিড় জমত। পণ্য পরিবহনসহ যাত্রীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল এই রেলস্টেশনটি। কিন্তু কালের বিবর্তনে পুরনো স্টেশনটি আজ তার জৌলুশ হারিয়ে ফেলেছে।

অবহেলা আর সংস্কারের অভাবে স্টেশনের লাল রঙের দ্বিতল ভবনের ছাদ জুড়ে জন্মেছে পরগাছা। ফটল ধরেছে তার সারা শরীরে। স্টেশনটি বর্তমানে প্রায় পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া স্টেশনের কয়েকশ বিঘা জমি অবৈধ দখলে চলে গেছে। এসব দেখভাল করার যেন কেউ নেই।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ১৮২৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জর্জ স্টিফেনসনের আবিষ্কৃত বিশ্বের প্রথম স্টিম ইঞ্জিনের রেল উদ্বোধন করা হয়। ‘লোকোমোশান’ নামের ওই ট্রেনটি ব্রিটেনের স্টকটন থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরে ডালিংটন পর্যন্ত যায়। প্রথম এই রেল ইঞ্জিনের প্রথম চালক ছিলেন রেলের আবিষ্কারক সিভিল ও মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জর্জ স্টিফেনসন নিজেই। ওই সময় ক্রমান্বয়ে বিশ্বজুড়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে রেলওয়ের বিপ্লব শুরু হয়। রেলের এই অগ্রগতিতে ইউরোপ ও আমেরিকার তুলনায় ব্রিটিশ শাসনাধীন বাংলাও পিছিয়ে ছিল না।

রাজনৈতিক, ভৌগোলিক ও কৌশলগত সুবিধাসহ বাণিজ্যিক স্বার্থ বিবেচনায় ব্রিটিশ সরকার ঔপনিবেশিক বাংলায় রেলওয়ে স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এই পর্যায়ে ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল গেট ইন্ডিয়ার পেনিনসুলার রেলওয়ে নামক কোম্পানির নির্মিত মুম্বাই থেকে থানে পর্যন্ত ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের উদ্বোধন করা হয়। এটিই ছিল ব্রিটিশ ভারতে রেলওয়ের প্রথম যাত্রা।

অপরদিকে ১৮৫৪ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে হুগলি পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে বাংলায় প্রথম রেলপথ চালু করা হয়।

এরপর বর্তমান বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমারেখার মধ্যে রেললাইন স্থাপনের বিষয়টিও ব্রিটিশ সরকার গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নেয়। ১৮৬২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে কর্তৃক কলকাতার শিয়ালদহ থেকে রানাঘাট পর্যন্ত রেলপথ উদ্বোধন করা হয়। পরে এই লাইনকে বর্ধিত করা হয়। ১৮৬২ সালের ১৫ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার (সাবেক নদীয়া) দর্শনা থেকে পোড়াদহ হয়ে জগতি পর্যন্ত ৫৩.১১ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রডগেজ লাইন নির্মাণের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভূ-খণ্ডে প্রথম রেল যোগযোগ স্থাপিত হয়।

পরে ঢাকার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর করতে ১৮৭১ সালের ১ জানুয়ারি জগতি স্টেশন থেকে বর্তমান রাজবাড়ী জেলার পদ্মা তীরবর্তী গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত রেললাইন চালু করা হয়।

এ সময় মানুষ কলকাতা থেকে ট্রেনে চেপে জগতি স্টেশন হয়ে গোয়ালন্দ ঘাটে নামতেন এবং স্টিমারে পদ্মানদী পার হয়ে চলে যেতেন ঢাকায়।

ব্রিটিশ সরকার জগতি রেলস্টেশন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে আরও কিছু অবকাঠামো গড়ে তোলা হয় এখানে। কিন্তু কালের বিবর্তনে সেগুলো আজ শুধুই স্মৃতি হয়ে রয়েছে। স্টেশনের ওয়েটিং রুম ভেঙে পড়েছে। প্লাটফর্মে ইট ও গাঁথুনি ক্ষয়ে গেছে। সংস্কারবিহীন স্টেশনের দ্বিতল ভবনের ছাদে জন্মেছে আগাছা। রেলের স্টিম ইঞ্জিনে পানি খাওয়ানোর জন্য প্লাটফর্মের দুই পাশে নির্মিত বিশাল আয়তনের ওভারহেড পানির ট্যাংক দুটি ইতোমধ্যে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে। ট্যাংক দুটিতে সে সময় কয়লার ইঞ্জিনচালিত পাম্প দিয়ে ভূগর্ভ থেকে পানি উত্তোলন করা হতো।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/05/1541416397435.gif

স্বাধীনতার পূর্বে কুষ্টিয়ায় চিনিকল প্রতিষ্ঠার পর এখানে আখ সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল এই স্টেশনের। তখন আশপাশের জেলার জন্য ট্রেনে আনা খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী খালাস ও যাত্রী ওঠা-নামা করত এই স্টেশনে। অথচ জগতি স্টেশনটি আজ কোলাহল মুক্ত নীরব নিথর। বর্তমানে এখানে যাত্রীসেবামূলক কিছুই নেই। চারদিকে বিরাজ করে নির্জন এক ভুতুড়ে পরিবেশ। স্টপেজ না থাকায় বর্তমানে এই স্টেশনের ওপর দিয়ে চলে যায় রাজশাহী-গোয়ালন্দঘাটগামী আন্তনগর ট্রেন মধুমতি এক্সপ্রেস।

এখানে শুধুমাত্র স্টপেজ রয়েছে সরকারের লিজ দেয়া খুলনা-গোয়ালন্দঘাট মেইল ট্রেন নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস এবং পোড়াদহ ও রাজবাড়ির মধ্যে চলাচলকারী শাটল ট্রেনের। এই দুটি ট্রেনের অল্পসংখ্যক যাত্রী ওঠা-নামা করে।

তবে স্টেশনে যাত্রীসেবা না থাকায় তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। জনবলের অভাবও রয়েছে প্রকট। বর্তমানে এই স্টশনে স্টাফ রয়েছে মাত্র পাঁচজন। এদের মধ্যে ১ জন স্টেশন মাস্টার, ৩ জন পয়েন্সম্যান ও ১ জন গেটম্যান।

অপরদিকে ২ জন স্টেশন মাস্টার, ৩ জন বুকিং সহকারী, ৩ জন ল্যামম্যান, ৩ জন পয়েন্সম্যান ও ২ জন সুইপারের পদ দীর্ঘদিন থেকে শূন্য রয়েছে।

নিরাপত্তা কর্মী না থাকায় লাইনের সঙ্গে সংযুক্ত পিনসহ রেলের মূল্যবান সম্পদ খোয়া যাচ্ছে বলে জানান রেলওয়ে কর্মচারীরা।

রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার সময় জগতি স্টেশনের আওতায় রেলের অন্তত ৭শ বিঘা জমি ছিল। কিন্তু এসব জমির অধিকাংশই এখন স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলে। এসব জমি উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো উদ্যোগ নেই।

এদিকে কালের সাক্ষী হয়ে টিকে থাকা ঐতিহ্যের ধারক দেশের প্রথম এই স্টেশনটি আধুনিকায়ন না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে রয়েছে চাপা ক্ষোভ। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় আধুনিকায়নসহ স্টেশনটির হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হোক।

কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ও জগতি গ্রামের বাসিন্দা শিমুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমাদের এই জগতিতে অবস্থিত দেশের প্রথম রেলওয়ে স্টেশনটির এ বেহালদশা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আগের সেই হারানো সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনাসহ স্টেশনটি আধুনিকায়ন করে যাত্রী সেবার মান উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছি।’

জগতি স্টেশন মাস্টার মুসলিম উদ্দিন মোল্লা বার্তা২৪.কমকে জানান, জরাজীর্ণ স্টেশন ভবন, লোকবলের অভাব, যাত্রীসেবা না থাকাসহ নানা সঙ্কটে জগতি স্টেশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

   

সাবেক আইজিপি বা সেনা প্রধান দোষী হলে সরকার বাঁচাতে যাবে না: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, 'বিচার বিভাগ ও দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট (রক্ষা) করতে যাবো না, সে সাবেক আইজিপি বা সেনা প্রধান হলেও।'  

শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'বিষয়টি দেখতে হবে, অপরাধী যত প্রভাবশালী হোক, প্রশ্ন থেকে যায় সরকার অপরাধের শাস্তি পাবার ব্যাপারে সৎ সাহস দেখিয়েছে কি না। শেখ হাসিনা সরকারের সে সৎ সাহস আছে। কেউ পারবে না। বিচার বিভাগ, দুদক স্বাধীন। সেখানে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে আমরা তাকে প্রটেক্ট করতে যাবো না। সেখানে কোন সাবেক আইজিপি বা কোন সাবেক সেনা প্রধান হোক না কেনো। সরকারের কাউকে প্রটেকশন দেয়ার বিষয় নেই।'

আবরার হত্যাকাণ্ড যাদের দণ্ড হয়েছে তাদের সবাই ছাত্রলীগের উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'কিন্তু সরকার তাদের প্রটেকশন দিতে যায়নি। বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে যাদের ফাঁসি হয়েছিল তাদের সরকার প্রটেকশন দিতে যায়নি। কথা হচ্ছে ব্যক্তি অপরাধ করতে পারে কিন্তু কথা হচ্ছে সরকার প্রটেকশন দিচ্ছে কি না। শেখ হাসিনা সরকার এখানে জিরো টলারেন্স। অপরাধ করলে শাস্তি তাকে পেতেই হবে।'

এসময় সাবেক সংসদ সদস্য, '৭৫'র প্রতিরোধ যোদ্ধা ও নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মানু মজুমদারের প্রয়াণে তার কথা স্মরণে তিনি বলেন, খুবই প্রচার বিমুখ ছিলেন। কখনো তাকে ক্যামেরার সামনে মুখ দেখানো, চেহারা দেখানো এবং এর জন্য আমাদের কিছু কিছু লোকের যে প্রবণতা সেটা মানু মজুমদারের মধ্যে কখনো দেখিনি। তিনি আমাদের সংসদ সদস্য ছিলেন। গত সংসদে তিনি ছিলেন। তার সবচেয়ে বড় পরিচয় বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে প্রতিরোধ যোদ্ধা নামে একটি সংগঠন জন্ম নিয়েছিলো, তার সাধারণ সম্পাদক হিসবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। যাবজ্জীবন দণ্ড দেয়া হয়েছিলো, যেখানে সুদীর্ঘ তেরো বছর কারাগারে ছিলেন। আমার সাথেও জেলে দেখা হয়েছিলো।' 

এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;

এমপি আনার হত্যার আরও তথ্য জানতে জিহাদকে তোলা হচ্ছে আদালতে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার জিহাদ হাওলাদারকে (২৪) শুক্রবার (২৪ মার্চ) কলকাতা আদালতে তোলা হচ্ছে। 

নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর তার মরদেহ টুকরো টুকরো করে কাশিপুর থানার অন্তর্গত ভাঙরের কৃষ্ণ মাটিতে ফেলা হয়েছে। মাংস ও হাড় আলাদা করে কিমা বানিয়ে করা হয় প্যাকেট।

বৃহস্পতিবার রাতে এমপি আজিমের হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ক্যাব চালকের এমন স্বীকারোক্তির পর ওই স্থানে তল্লাশি শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এদিন বাংলাদেশি জিহাদ হাওলাদার জিহাদ নামে এক যুবককে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে আটক করে সিআইডি। জিহাদ ভারতের মুম্বাইয়ে অবৈধভাবে বসবাস করে, সে বাংলাদেশের খুলনা জেলার দীঘলিয়া থানার বারাকপুরের জয়নাল হাওলাদারের ছেলে। মুম্বাইয়ে একটি মাংসের দোকানে কসাইয়ের কাজ করত।

জানা গেছে পরিকল্পিত নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

এমপিকে হত্যার পরে তার শরীর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করে ফেলে। মূলত পরিচয় নষ্ট করার জন্য এমপির মাংস কিমা করে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়। আর হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো টুকরো করে নেয়। পরে ওই ব্যাগগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে নানা ধরনের পরিবহণ ব্যবহার করে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে ফেলে দেয়। 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তের বক্তব্য যাচাই করতে এবং শরীরের বাকি অংশগুলো উদ্ধার করতে তাকে বারাসাত আদালতে তুলে রিমান্ড চাওয়া হবে।

;

মানু মজুমদারের মরদেহে আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

সাবেক সংসদ সদস্য, ৭৫'র প্রতিরোধ যোদ্ধা ও নেত্রকোণা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সদ্য প্রয়াত মানু মজুমদারের মরদেহে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ মে) সকালে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর সম্মুখে এ শ্রদ্ধা জানানো হয়। প্রথমে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ও পরে আওয়ামী লীগের পক্ষে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

এসময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে,গত চার দিন আগে ঢাকার বাসায় অসুস্থ হয়ে যান মানু মজুমদার। পরে তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার বিকেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ভারতের বেঙ্গালুরুর নারায়ণা ইনস্টিটিউট অব কার্ডিয়াক সায়েন্সে ভর্তি করা হলে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান।

উল্লেখ্য, মানু মজুমদারের পৈতৃক বাড়ি কিশোরগঞ্জের তাড়াইলে। তার শ্বশুরবাড়ি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলা সদরের মন্তলা গ্রামে। তিনি প্রায় ১০ বছর আগে কলমাকান্দার সীমান্তবর্তী রংছাতি ইউনিয়নের পাঁচগাঁও এলাকায় বাড়ি করে সেখানে ও ঢাকায় বসবাস করতেন।

মানু মজুমদার নেত্রকোনা-১ আসন থেকে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যার ঘটনার প্রতিবাদে তিনি আন্দোলন গড়ে তোলেন। পরে তাকে কারাবন্দি করা হয়। দীর্ঘসময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন।

;

নজরদারির অভাবে অধিকাংশ সবজির চড়া দাম



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নজরদারির অভাবে বেশির ভাগ সবজির দাম চড়া বাজারে। সরবরাহের কোন ঘাটতি না থাকার পরেও ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি। একই সাথে মাছ মাংসের বাজারের লেগেছে বাড়তি দামের প্রভাব। ক্রেতাদের অভিযোগ, ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে দাম নিচ্ছেন নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্যের। অন্যদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে সবজি তাই দাম একটু বেশি।

শুক্রবার ( ২৪ মে ) রাজধানীর মহাখালী কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

বাজার ঘুরে দেখা যায় গেলো সপ্তাহের মতো এখনো বাড়তি ডিমের দাম। ফার্মের লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা ডজন। আর সাদা ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা ডজন। এছাড়া দেশি হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা ডজন।

এখনো বাড়তি ডিমের দাম

এদিকে সবজির বাজারে ৬০ টাকার নিচে মিলছে না কোন সবজি। সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা করে। এছাড়া ফুলকপি প্রতি পিছের দাম ৫০ টাকা। পটল পাওয়া যাচ্ছে ৪০ করে কেজি। সেই সাথে লাউ প্রতি পিছ ৫০ টাকা, কাকরল ৮০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা,জালি কুমড়া ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, আলু ৫৫-৬০ টাকা, লেবু হালি বিক্রি হচ্ছে ২৫-৩০ টাকা, ধনেপাতা ২৫০ টাকা কেজি এবং ক্যাপসিকাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা কেজি।

এছাড়া পেঁয়াজের আমদানি শুরু হলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব পরেনি। এখনো আগের দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা কেজি। আর রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ কেজি। এদিকে কিছুটা বেড়েছে আদার দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ২০ টাকা বেড়ে আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা করে।

বাইল্লা ১০০০, টেংরা ৮০০, রুপচাঁদা ১২০০

তবে গত সপ্তাহের দামেই বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি, খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১১০০টাকা কেজি। ব্রয়লার মুরগী ২৩০ টাকা, আর লাল মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া পাকিস্তানি কক মুরগী বিক্রি হচ্ছে ৩৭০ টাকা করে।

মাছের বাজারে মাছের পর্যন্ত আমদানি থাকলেও বিভিন্ন অযুহাতে এখনো বাড়তি মাছের দাম। বাজারে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকা, রুই মাছ ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৮৫০-৯০০ টাকা কেজি আর বড় চিংড়ি ৭০০ টাকা এছাড়া পাবদা ৪০০, বড় বোয়াল ৬০০, ছোট বোয়াল ৫০০, বাইল্লা ১০০০, টেংরা ৮০০, রুপচাঁদা ১২০০, কালিবাউশ ৬০০, মৃগেল ২৮০-৩২০, কার্ফু ৩০০ টাকা করে।

মাছ ব্যবসায়ী জলিল বার্তা ২৪ কে বলেন, চাহিদার তুলনায় বাজারে কম সরবরাহ রয়েছে মাছের। এছাড়া তিনি অভিযোগ করেন কাওরান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা মাছের ওজনের কম দেয়ায় খুচরা ব্যাবসায়ীদের ঘাটতি হয়। তাই পাইকারি বাজারের তুলনায় খুচরা বাজারে দামের হেরফের তুলনামূলক বেশি থাকে।

লাল মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৩০০ টাকা কেজি দরে

মহাখালী ডিওএইচ থেকে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন মামুন। মামুন বলেন, আমি যে বাসায় কাজ করি তাদের পুরো সপ্তাহের বাজার আমি করি। আগে স্যার টাকা যা দিত তাই দিয়ে সপ্তাহের বাজার শেষ করে হাতে আরও টাকা থাকতো। কিন্তু এখন আর ব্যাগ ভরে বাজার করা সম্ভব হয়না। তাই দিন দিন বাজারের জন্যে যে বাজেট আছে তা বৃদ্ধি করতে হচ্ছে। এছাড়া তার অভিযোগ বাজার তদারকির যারা দায়িত্বে আছের তারা ঠিকঠাক তদারকি করছেন না। তাই বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরেও সব পণ্যের দাম চড়া। 

;