দেশে মৃগী রোগী প্রায় ১৪ লাখ
সচেতনতার অভাব, পারিবারিক ও সামাজিক কুসংস্কার, সঠিক চিকিৎসার অভাবে মৃগী রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছে না। দেশে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ মৃগী রোগে আক্রান্ত। আর প্রায় ৪০ শতাংশ রোগীর বয়স ১৫ বছরের নিচে। এছাড়া এই রোগে আক্রান্ত ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ রোগী সঠিক চিকিৎসাও পায় না।
বুধবার রাজধানীর একটি হোটেলে দেশে এই প্রথম ‘মৃগী রোগের সর্বস্বীকৃত জাতীয় চিকিৎসা নির্দেশিকা’ প্রকাশনা উৎসবে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভাপতিত্ব করেন সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. মো. রফিকুল ইসলাম।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সানোফির লজিস্টিক ও বৈজ্ঞানিক সহায়তায় প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন করে সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশ (এসএনবি)।
অনুষ্ঠানে নিজ সন্তানের মৃগী রোগের বিপন্নতার চিত্র তুলে ধরেন নাছিমা বেগম নামের একজন মা। সন্তান নাসিফের ছোটবেলা থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের কষ্টের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, মৃগী দেখা দিলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাথাটা যখন সামনের যেকোনো বস্তুর সঙ্গে বাড়ি মারতে থাকত, নিজের বুকটা খানখান হয়ে যেত। আমার সামনে আঘাত করতে থাকলেও কিছু করার থাকত না। খুব দ্রুত ঘটনা ঘটে যেত। এমন বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারকে ভালো কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাই।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, অন্য রোগীদের নিয়ে সরকার যেমন কাজ করছে, মৃগী রোগীদের জন্যও করছে। এ ধরনের রোগে যারা ভোগে তাদের জন্য নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট নির্মাণ করা হয়েছে; নাক, কান, গলা ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। ইপিলিপসি রোগীদের জন্যও আলাদা ইনস্টিটিউট করা দরকার।
তিনি বলেন, মৃগী রোগ নিয়ে একসময় গ্রামে অনেক ভুল ধারণা ছিল। বলা হতো ভূতে ধরেছে বা জিনে আছর করেছে। এই ভুল ধারণা থেকে মানুষ বের হয়ে আসছে। সোসাইটি অব নিউরোলজিস্টস অব বাংলাদেশ এ সমস্যাগুলোর সমাধানে কাজ করছে, যা প্রশংসার দাবি রাখে। নির্দেশিকাটি সামনে আনার জন্য এসএনবি ও সহযোগীদের অভিনন্দন জানাই।