হারিছ চৌধুরী লন্ডনে যাননি, বাংলাদেশেই ছিলেন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ঢাকায় মারা গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন তার প্রবাসী কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আব্বু আসামে কিংবা লন্ডনেও যাননি। বাংলাদেশেই আত্মগোপনে ছিলেন। তানজিনা জানান, ঢাকার একটি হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা তার বাবা গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর মারা যান।
আজ শনিবার মানবজমিন পত্রিকায় ব্যারিস্টার সামিরা তানজিন চৌধুরীর একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে। তানজিনা জানান, তার বাবার দাফন করা হয়েছে ঢাকার বাইরে। যেখানে যেতে এক-দেড় ঘণ্টা গাড়ি চালাতে হয়। গ্রামের বাড়িতে দাফন করানোর সাহস করতে পারেননি তার পরিবারের লোকজন।
সামিরা বলেন, চাচা আশিক চৌধুরী সাহস করতে পারেননি। তিনি তখন আমাদের বলেছেন- কোনো অবস্থাতেই গ্রামে নিয়ে এসো না। বারবার তিনি নিরাপত্তার কথা বলেছেন। তখন ভয় পেয়ে যাই। বাস্তব অবস্থা এমনই। কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। উপায় কি!
সম্প্রতি বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর তথ্য নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। এর আগে তার বড় বোন ও এক ছোট ভাই গণমাধ্যমকে বলেছেন, তারা শুনেছেন, তবে নিশ্চিত নন। তবে হারিছ চৌধুরীর চাচাতো ভাই আশিক চৌধুরী দাবি করেছেন, চার মাস আগে লন্ডনে মারা গেছেন হারিছ চৌধুরী। এদিকে মানবজমিনকে সামিরা বলেছেন, কেন তিনি বলেছেন সেটা আমি বলতে পারবো না। তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
হারিছ চৌধুরী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন। জোট সরকারের আমলে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এই নেতা এক-এগারোর পালাবদলের পর দেশ ছাড়েন। তার পর থেকে হদিস ছিল না তার। ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মী বা আত্মীয়-স্বজন কেউ তার ব্যাপারে কিছু বলতে পারেননি।
গত ২৪ আগস্ট হারিছ চৌধুরীর সঙ্গে ব্যারিস্টার সামিরার কথা হয়। তখন তার কথাবার্তা ছিল অগোছালো, অস্পষ্ট। কথা বলতে পারছিলেন না। হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছিলেন। সামিরা বলেন, ২৬ আগস্ট ঢাকায় পৌঁছার পর হাসপাতালে প্রথম দেখা। তখন তার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটেছে।
মানবজমিনকে সামিরা জানান, তার বাবার সম্পত্তি গ্রামে রয়েছে। ঢাকায় কোনো সম্পত্তি নেই। গ্রামে স্কুল, মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন তার বাবা। যা দেখভাল করেন আশিক চৌধুরী।
সিলেটের কানাইঘাটের দিঘিরপাড় পূর্ব ইউনিয়নের দর্পনগরে হারিছ চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি। পাঁচ ভাই, পাঁচ বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। হারিছ চৌধুরীর দুই ভাই মারা গেছেন। সবার ছোট ভাই কামাল চৌধুরী জন্মলগ্ন থেকেই অসুস্থ। তিনি গ্রামের বাড়িতে থাকেন। এক ভাই থাকেন ইরানে। তিনি পেশায় চিকিৎসক। হারিছ চৌধুরীর ছেলে ও মেয়ে যুক্তরাজ্যে থাকেন। মেয়ে ব্যারিস্টার, ছেলে বেসরকারি কম্পানিতে চাকরি করেন।