সিজারে শিশুর হাত ভেঙে ফেলার অভিযোগ, বন্ধ আরামবাগ হাসপাতাল

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফরিদপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শিশুর হাত ভেঙে ফেলার অভিযোগে বন্ধ হল আরামবাগ হাসপাতাল

শিশুর হাত ভেঙে ফেলার অভিযোগে বন্ধ হল আরামবাগ হাসপাতাল

ফরিদপুরে এক প্রসূতির ডেলিভারির সময় শিশুর হাতের কনুইয়ের হাড়ের জয়েন্ট ছুটিয়ে ফেলার অভিযোগে শহরের পশ্চিম খাবাসপুরে অবস্থিত আরামবাগ হাসপাতাল নামে একটি প্রাইভেট হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ। অসুস্থ শিশুটি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে নবজাতকের হাত ভাঙার অভিযোগটি সঠিক নয় বলে দাবি করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গত শনিবার আলমদিনা হাসপাতালে নবজাতকের কপাল কেটে ফেলার ঘটনা মাত্র চারদিন পর আরামবাগ হাসপাতালের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠল। এর আগে মঙ্গলবার অনুমোদন না থাকায় আলফাডাঙ্গায় দুটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদান না থাকায় বন্ধ করে দেয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র জানায়, বুধবার ১৯ জানুয়ারি বেলা ১২টার দিকে জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আক্তার আরামবাগ হাসপাতালে অভিযান চালান। এ সময় তারা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন। তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর জন্য সাতদিনের সময় দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, এর আগে মঙ্গলবার শহরের পশ্চিম খাবাসপুরের আরিফুল  আলম সজল নামে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, গত ১৩ ডিসেম্বর আরামবাগ হাসপাতালে তার স্ত্রী  মুক্তার সিজার অপারেশন করা হয়। সন্তান বের করার সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতকের হাতের কনুইয়ের হাড়ের জয়েন্ট ছুটিয়ে ফেলেন। পরে তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এরপর তিনি জেলা সিভিল সার্জনের নিকট এ ব্যাপারে অভিযোগ করেন। এতে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অবহেলা ও অনিয়মের অভিযোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

আরিফুল আলম বলেন, স্ত্রীর সিজারিয়ানের পর ছাড়পত্র নিয়ে তারা বাড়ি ফিরেন। পরের দিন বাচ্চার ব্যথা অনুভব হওয়ায় পুনরায় শিশুর এক্সরে করিয়ে শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল্লাহিস সায়াদকে দেখান। তিনি অর্থোপেডিক সার্জন ডা. সৈয়দ আসিফ উল আলমের নিকট প্রেরণ করেন। এরপর ডা সৈয়দ আসিফ উল আলম শিশুটিকে ঢাকা হেলথ এন্ড হোপ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা. সারোয়ার ইবনে সালামের নিকট পুনরায় রেফার্ড করেন। সেখানে ডা. সরোয়ার ইবনে সালাম তাদের জানান, সিজারিয়ান করে বের করার সময় টানাটানির কারণে নবজাতকের হাতের কনুইয়ের হাড়ের জয়েন্ট ছুটে গেছে। বর্তমানে ঢাকার হাসপাতালে বাচ্চার চিকিৎসা চলছে। এঘটনার পর আরামবাগ হাসপাতালে যোগাযোগ করলে সেখানে কর্তব্যরত ডা. শারমিন সুলতানা জুই তার সাথে অসম্মানজনক আচরণ করে এ ঘটনার কোন দায় নিতে পারবে না বলেও হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন আরিফুল আলম।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ঘটনা জানতে পেরে অনিয়ম ও অবহেলার অভিযোগে হাসপাতালটি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আরামবাগ হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত ডাক্তার ও নার্স না থাকা এবং অপ্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে আরামবাগ হাসপাতালের এমডি মাসুদুর রহমান জানান, শিশুর হাড় ভাঙার অভিযোগটি সঠিক নয়। তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় তারা কোনো অভিযোগ তোলেননি। এমনকি বাসায় নেওয়ার পরও অভিযোগ তোলেননি। ঘটনার মাস খানেক পর অভিযোগ তোলা কতটুকু যুক্তিযুক্ত। আমাদের হাসপাতালে অন্য কিছু সমস্যা ছিল। এ কারণে সিভিল সার্জন সাময়িক বন্ধ রাখতে বলেছেন। আমরা সমস্যাগুলো সমাধান করে নতুন করে চালু করার ব্যবস্থা করবো।