২৪ দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন ২৫ হাজার কর্মচারী
পদবি বদল ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে আজ মঙ্গলবার থেকে ২৪ দিনের কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন বিভিন্ন কার্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৫ হাজার সরকারি কর্মচারী।
পুরোনো আমলের পদবি আর নিম্ন গ্রেডের বেতনে কাজ করছেন বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের এসব কর্মচারীরা।
সংশ্নিষ্টরা জানিয়েছেন, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত তারা আন্দোলনে থাকবেন। কর্মচারীরা সকাল ৯টায় হাজিরা খাতায় সই করে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কাজ না করে অফিস চত্বরে অবস্থান করবেন।
দেশজুড়ে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনও এবং এসিল্যান্ড কার্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণির (১৩-১৬ গ্রেড) কর্মচারী রয়েছেন প্রায় ১৩ হাজার। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী আছেন প্রায় ১০ হাজার। বাংলাদেশ কালেক্টরেট চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সমিতিও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়েছে। ফলে মাঠ প্রশাসনে অচলাবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সংশ্নিষ্টরা।
২০১৩ সালের ৩০ মে তহশিলদার (বর্তমান ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা) এবং সহকারী তহশিলদারদের (বর্তমান ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা) পদ বদল করে বেতন গ্রেড পাঁচ ধাপ ওপরে তোলা হয়। তাদের বেতন গ্রেড ১৬ ও ১৭তম থেকে ১১ ও ১২তম গ্রেড করে আদেশ জারি করে ভূমি মন্ত্রণালয়। ভূমি অফিসের কর্মচারীদের এভাবে পদোন্নতি দেওয়ায় কালেক্টরেট অফিসগুলোতে দেখা দিয়েছিল ক্ষোভ। এ জটিলতা নিরসনে সে সময় চার সচিবের সমন্বয়ে কমিটি করে সেই আদেশ বাতিল করা হয়। এরপর প্রায় ৯ বছর সমস্যা জিইয়ে রেখে ২০১৩ সালের সেই বাতিল আদেশ ফের বহাল করা হয়েছে। গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি অফিসের কর্মচারীদের পদোন্নতিবিষয়ক প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। ওই প্রজ্ঞাপনে বেতন গ্রেড ২০১৩ সালের আদেশের দিন থেকে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়। ফলে বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, ইউএনও ও এসিল্যান্ড কার্যালয়ে কর্মরত তৃতীয় শ্রেণির হাজার হাজার কর্মচারী ক্ষুব্ধ হয়। শুধু ভূমি অফিসে পদোন্নতি দেওয়ায় হতাশা তারা।
বাংলাদেশ কালেক্টরেট সহকারী সমিতির (বাকাসস) সভাপতি মো. আকবর আলী গণমাধ্যমকে বলেন, আন্দোলন ঘোষণা করলেই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ডেকে আশ্বাস দেন। তবে কোনো কাজ করেন না। এবার কঠোর পথে যেতেই হলো।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের দাবি যৌক্তিক। কারণ সময়ের ব্যবধানে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছে। তাদের বিষয়টিও ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তাদের পদোন্নতির সারসংক্ষেপ অনুমোদন করেছেন।
জানা যায়, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি পদোন্নতি দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর এক বছরের বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে সেই পদোন্নতি প্রক্রিয়া। অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে যায় মাঠ প্রশাসনের সংস্কার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার থেকে টানা কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন তারা।