ফেন্সিডিলসহ ইউপি চেয়ারম্যান আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ফেন্সিডিলসহ আটক ইউপি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন /ছবি: সংগৃহীত

ফেন্সিডিলসহ আটক ইউপি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন /ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে ফেন্সিডিল ও ফেন্সিডিল তৈরির উপকরণসহ চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৬।

বুধবার দিবাগত রাতে কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকা থেকে মঈন উদ্দিনকে আটক করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ নভেম্বর) দুপরে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তারা জানতে পারেন কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় মাদক ব্যবসায়ীরা মাদক ক্রয়-বিক্রয় করছেন। এমন সংবাদের ভিত্তিতে পৌর এলাকার ইলিয়াছ হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Nov/22/1542883206608.jpg

এ সময় ১১০ বোতল ফেন্সিডিল, ফেন্সিডিলের খালি বোতল, ১১ কেজি ৯০০ গ্রাম ফেন্সিডিল সাদৃশ্য তরল পদার্থ, চার কেজি ফেন্সিডিল তৈরির উপকরণ, ২৫০ গ্রাম ফিটকিরিসহ মঈন উদ্দিনকে আটক করা হয়। মঈন উদ্দিন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের ইন্তাজ মণ্ডলের ছেলে।

মঈন কালীগঞ্জে ঐ বাসা ভাড়া নিয়ে মাদক ব্যবসা করে আসছিল। তিনি এলাকায় মাদকের ডিলার হিসেবে পরিচিত। দীর্ঘদিন যাবৎ লোকচক্ষুর আড়ালে এখানে মাদকদ্রব্য ফেন্সিডিল তৈরি করে আসছেন। তার নামে ঝিনাইদহ ও মহেশপুর থানায় মাদক সংশ্লিষ্ট দুইটি মামলা রয়েছে।

   

৫ দিন পর সচল বেনাপোল বন্দর



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচন, বাংলাদেশে উপজেলা নির্বাচন ও বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে টানা ৫ দিন বন্ধের পর বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সকাল থেকে সচল হয়েছে বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য।

এর আগে গত ১৮ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত লোকসভা নির্বাচন, ২১ মে বাংলাদেশে উপজেলা নির্বাচন ও ২২ মে বৌদ্ধ পূর্নিমার ছুটিতে বন্ধ ছিল দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি।

এদিকে আমদানি-রফতানি শুরু হওয়ায় কর্মব্যস্ততা ফিরেছে বেনাপোল বন্দরে। সকাল থেকে আমদানিকৃত পণ্য নিয়ে পণ্যবাহী ট্রাক আসছে বেনাপোল বন্দরে। বেনাপোল বন্দর থেকেও রফতানি করা পণ্য নিয়ে ট্রাক যাচ্ছে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে।

এপথে বছরে ৪০ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার পণ্য রফতানি হয়। প্রতিদিন সরকারের রাজস্ব আসে প্রায় ৪০ কোটি টাকা। আমদানি পণ্যের মধ্যে বড় একটি অংশ রয়েছে শিল্প ও কলকারখানার কাঁচামাল, খাদ্য দ্র্রব্য, তৈরী পোশাক, কেমিক্যাল ও মেশিনারিজ পণ্য। রফতানি পণ্যের মধ্যে পাট ও পাটজাত পণ্য বেশি।।

বেনাপোল বন্দর পরিচালক রেজাউল করিম জানান, ব্যবসায়ীরা যাতে দ্রুত তাদের পণ্য খালাস নিতে পারে তার সব ধরনের সহযোগীতা করা হচ্ছে।

;

১৪ দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ১৪ দলের শরিকরা। সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এ বৈঠকটি হবে।

১৪ দল সূত্রে জানায়, বৈঠকে শরিকদের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতির কাছে বেশ কিছু দাবি তুলে ধরা হবে। এছাড়াও জোটের ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে তার একটা স্পষ্ট দিকনির্দেশনা আসতে পারে। 

মঙ্গলবার জোটের গুরুত্বপূর্ণ শরিকরা নিজেদের মধ্যে একটি পরামর্শ বৈঠক করেছেন। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতির সামনে জোটের শরিকরা কী কী দাবি তুলে ধরবেন, সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

বৈঠক বিষয়ে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আগামী ২৩ মে প্রধানমন্ত্রী আমাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমরা সেখানে যাবো, সেখানে জোট নেত্রী কী বলেন, কী প্রস্তাব দেন সেটা আমরা শুনবো। পরবর্তীতে আমরা দলগতভাবে সিদ্ধান্ত নিব।

;

‘বন্ধুর ছকে’ এমপি আনার খুন, চুক্তি ৫ কোটি টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের কলকাতার একটি বাড়িতে অবস্থানকালে ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক অংশীদার আখতারুজ্জামান শাহীনের ষড়যন্ত্রে তাকে হত্যা করা হয়। 

বুধবার (২২ মে) এমন তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একজন কর্মকর্তা।

ডিবি সূত্র জানায়, পাঁচ কোটি টাকার চুক্তিতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক আখতারুজ্জামান ভাড়াটে খুনিদের এমপি আজীমকে হত্যার দায়িত্ব দেন।

যার মূলে রয়েছেন আমান উল্লাহ আমান নামের এক সন্ত্রাসী।

তিনি ঝিনাইদহের বাসিন্দা ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। শাহীনের ভাই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌর মেয়র। এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক বন্ধু ও চরমপন্থি নেতা আমানউল্লাহ আমানকে। কলকাতায় বসে হত্যার চূড়ান্ত ছক এঁকে বাংলাদেশে চলে আসেন শাহীন। পরে আমানসহ ছয়জন মিলে এমপি আজীমকে সঞ্জীবা গার্ডেন নামের একটি ফ্ল্যাটে ট্র্যাপে ফেলে ডেকে আনেন। এরপর তাকে জিম্মি করে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করা হয়। পরে মরদেহ কেটে টুকরো টুকরো করে ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলা হয় অজ্ঞাত স্থানে।

তদন্ত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল হত্যাকাণ্ডের পর। তাদের মিশন সফল হওয়ার পর আনারের মরদেহের টুকরোগুলো গুম করার জন্য সিয়াম ও জিহাদ নামের দুজনকে দায়িত্ব দিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আমান। ঢাকায় এসে দেখা করেন আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে। তবে শাহীন পরবর্তী সময়ে তাকে কত টাকা দিয়েছেন সেটা জানা যায়নি।

এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে তিনজনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওয়ারী বিভাগ। তারা হলেন- এ হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া চরমপন্থি দল পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা আমানউল্লাহ আমান, মোস্তাফিজ ও ফয়সাল। 

পাঁচ কোটি টাকায় চুক্তি

গোয়েন্দা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আমান জানিয়েছে, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার জন্য পাঁচ কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। হত্যাকাণ্ডের আগে তাকে কিছু টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকা দেওয়ার কথা ছিল হত্যাকাণ্ডের পর।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, ঢাকায় এসে মোহাম্মদপুরের বোনের বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন আমান। সেখান থেকেই তাকে আটক করা হয়েছে।

খুনের পরিকল্পনা ও নারীর ফাঁদ

গত ৩০ এপ্রিল শাহীন চরমপন্থি নেতা আমান তার বান্ধবী সিলিস্তি রহমানকে নিয়ে কলকাতা যান। সেখানে আগে থেকেই ভাড়া করে রাখা নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনের একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাটে ওঠেন তারা। কলকাতায় আরও আগে থেকেই অবস্থান করছিল শাহীনের দুই সহযোগী সিয়াম ও জিহাদ। সেখানে বসে তারা এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

হত্যার পুরো দায়িত্ব আমানকে বুঝিয়ে দিয়ে ১০ মে দেশে চলে আসেন শাহীন। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমান বাংলাদেশ থেকে আরও দুই ভাড়াটে কিলারকে নিয়ে যায় কলকাতায়। ফয়সাল শাজী ও মোস্তাফিজ নামে দুই ভাড়াটে খুনি ১১ মে কলকাতায় গিয়ে আমানের সঙ্গে যোগ দেন।

হত্যার প্রক্রিয়া

আমানকে জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, এমপি আনার যে ১২ মে কলকাতায় যাবেন তা আগে থেকেই জানতেন শাহীন। তাকে হত্যার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে বলেন তার গ্যাংকে। তারা একাধিক চাপাতিও সংগ্রহ করে রাখে।

গত ১২ মে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় যান আনার। প্রথম দিন তিনি তার বন্ধু গোপালের বাসায় থাকেন। পরদিন ১৩ মে কৌশলে এমপি আনারকে নিউটাউনের সেই ফ্ল্যাটে কৌশলে ডেকে নিয়ে যান হত্যাকারীরা।

বিকেলের দিকে এমপি আনার সঞ্জীবা গার্ডেনের সেই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করেন। এরপর আমান তার সহযোগী ফয়সাল, মোস্তাফিজ, সিয়াম ও জিহাদ মিলে এমপিকে চাপাতির মুখে জিম্মি করে। এসময় তারা এমপির কাছে শাহীনের পাওনা টাকা পরিশোধের কথাও বলে। বিষয়টি নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে সবাই মিলে আনারকে জাপটে ধরে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে। হত্যার পর আমান বিষয়টি শাহীনকে জানায়।

মরদেহ গুম করতে করা হয় টুকরো টুকরো

আমানের দেওয়া তথ্যের বরাতে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, শাহীনের পরামর্শ মতো মরদেহ গুম করতে কেটে টুকরো টুকরো করা হয়। এরপর ফ্ল্যাটের কাছেই শপিংমল থেকে আনা হয় দুটো বড় ট্রলিব্যাগ ও পলিথিন। এমপি আনারের মরদেহের টুকরোগুলো পলিথিনে পেঁচিয়ে ট্রলিব্যাগে ভরা হয়। ঘটনার রাতে মরদেহের টুকরোসহ দুটি ট্রলিব্যাগ বাসাতেই রাখা হয়। এর মধ্যে তারা বাইরে থেকে ব্লিচিং পাউডার এনে ঘরের রক্তের দাগ পরিষ্কার করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কলকাতা পুলিশ ওই ফ্ল্যাট ও আশপাশের ভবনের সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আমান ও তার সহযোগীদের ট্রলিব্যাগ আনা-নেওয়া, এমপি আনারের বাইরে রাখা জুতা ভেতরে নেওয়ার দৃশ্যও দেখা যায়। এছাড়া সিলিস্তি রহমান নামে শাহীনের বান্ধবীর বাইরে থেকে পলিথিন ও ব্লিচিং পাউডার নিয়ে আসার দৃশ্যও সিসি ক্যামেরার ফুটেজে আছে।

মরদেহের টুকরো ফেলা হয় ট্রলিব্যাগে করে

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমানের স্বীকারোক্তি ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন বিকেলে একটি ট্রলিব্যাগ হাতে নিয়ে বাসা থেকে বের হন আমান।

জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে তিনি জানান, বাসা থেকে বের হয়ে পাশের একটি শপিংমলের সামনে সেই ট্রলিব্যাগটি সিয়ামের হাতে তুলে দেন। সিয়াম সেই ব্যাগ নিয়ে তাদের আগে থেকেই ভাড়া করে রাখা গাড়ি নিয়ে অজ্ঞাত স্থানের দিকে চলে যান। তবে সেই গাড়িচালক কলকাতা পুলিশকে জানান, সিয়াম কিছুদূর যাওয়ার পর ব্যাগটি নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন।

মরদেহের টুকরো আরেকটি ব্যাগে ছিল। সেই ব্যাগ থেকে দুর্গন্ধও ছড়ানো শুরু করেছিল। সেই ব্যাগটি সহযোগীদের অন্য কোথাও ফেলে দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ১৫ মে সিলিস্তিকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন আমান।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পর আমানের নির্দেশনা অনুযায়ী তার দুই সহযোগী এমপি আনারের ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন নিয়ে দুই দিকে চলে যান, যেন তদন্তকারী বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আনারের অবস্থান সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়। ১৭ মে মোস্তাফিজ ও ১৮ মে ফয়সাল বাংলাদেশে ফেরত আসেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজিয়ে দিয়ে ১০ মে ঢাকায় চলে আসেন আক্তারুজ্জামান শাহীন। এমপি আনোয়ারুল আজিম নিখোঁজের বিষয়টি দেশে আলোচিত হলে তিনি ১৮ মে আবারও ভারত হয়ে নেপালে চলে যান। ২১ মে নেপাল থেকে চলে যান দুবাই। ২২ মে দুবাই থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

খুনের নেপথ্যে সোনা চোরাচালানের অর্থ ভাগাভাগী

এমপি আনোয়ারুল আজীমকে নির্মমভাবে হত্যার নেপথ্যে স্বর্ণ চোরাচালানের অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। আক্তারুজ্জামান শাহীন নিজেও একজন স্বর্ণ চোরাচালানকারী। এমপি আনোয়ারুল আজীমের বিরুদ্ধেও স্বর্ণ চোরাচালানের অভিযোগ রয়েছে। কলকাতায় শাহীন ও আজিমের যৌথ ব্যবসা আছে।সংশ্লিষ্টদের ধারণা, স্বর্ণ চোরাচালানের বিপুল অর্থ ভাগাভাগি নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

এদিকে আনোয়ারুল আজীম আনার ভারতে খুন হওয়ার ঘটনায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নম্বর-৪২। বুধবার (২২ মে) সন্ধ্যায় মামলার এজাহার দায়ের করেন তার মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। 

তিনি জানান, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। তবে এখন তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।

;

মানবাধিকার বঞ্চিত যাযাবর জীবনযাপন বেদে সম্প্রদায়ের



বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিরাপত্তাহীনতা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, শিক্ষা, চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত থেকে যাযাবর জীবনযাপন করছে রংপুরের বেদে সম্প্রদায়রা। ঘাঘট নদীর কোল ঘেষে খোলা আকাশের নিচে পলিথিনের তাবু টানিয়ে বনবাস করেন তারা। নদীর পানির মতোই বহমান অবস্থায় ভাসমান বেদেরা। এক তাঁবুতেই ৭/৮ জনের বসবাস। নেই মানসম্মত পরিবেশ,চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা,নিরাপত্তা কিংবা নির্দিষ্ট বাসস্থান। নির্মম পরিস্থিতিতে কোনরকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে তাবু টানিয়ে যাযাবর তারা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ঘাঘট নদীর কোলঘেষে দমদমা ব্রিজের নিচেই তাবু টানিয়ে ভাসমান তৈরি করেছে মাথা গোঁজার ঠাঁই। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে অসহনীয় তাপ সহ্য করে,প্রচণ্ড শীতে কুয়াশায় কষ্টসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এভাবেই খোলা আকাশের নিচে তাঁবুতেই তাদের বসবাস। এভাবেই যুগের পর যুগ চলছে বেদে সম্প্রদায়ের জীবন জীবিকা। মৌলিক অধিকারেরর বেশকিছু সেবা থেকে বঞ্চিত তারা। অথচ তারা এই দেশেরই নাগরিক।

রংপুরের দমদমা ব্রিজের নিচে অস্থায়ীভাবে বসবাসরত বিজলি বলেন, আমাগেরে জীবন কচুর পানার নাগাল।  আইজ যদি নদীর এইপারে তাবু ফেলাই, কাল ওইপারে। কই থাইয়া কই যামু ঠিক থাহে না। বেদেগেরে জীবন এরহমই। আমাগোর চাওয়া  হইল পইলেরা স্কুলে যাইক, লেহাপড়া কুরুক। আইঙ্কের মতো সাপের খেলা দেহায়া, বিষ পোরা ঔষধ দিয়া গ্রাম ঘুরার মত তাগো না নাগে। কিন্তু পড়ামু কোনো? ছইলগোরে বিনাটাহায় চিকিৎসা, লেহাপড়া, পুষ্টি দেয় অনেক খানেই। এহেনে তেমন কিছুই নাই বললেই চলে।

অস্থায়ীভাবে বসবাস করা বেদে সম্প্রদায়ের বাসিন্দা চুমকি বলেন, ‘নদীর পাড়ে স্রোতের নাগাল  আমাগো দিন কাটে। প্রতিদিন গ্রামে গ্রামে বেড়াই দাঁতের পোকা ফেলাই, সিংগা লাগাই, সাপের খেলা দেহাই, মাচা কমর টাইনা দুইডা ট্যাহার মুক দেহি। তাবুই আমাগেরে দালানবাড়ি। এর উপর দিয়া ঝড়,বৃষ্টি, রোইদ কুয়াশা সব সমান। ছইলগরে নিয়া নিরুপায় কি করমু কোন রহমে বাঁইচা আছি৷ এভাবেই চলতে হয়, খুব কষ্ট আমাগেরে। বাড়ি নাই ঘর নাই, নাই ভালো পানি-পায়খানার ব্যবস্থা।’

এ বিষয়ে উন্নয়ন গবেষক উমর ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশের বেদে গোষ্ঠী বা যাযাবর শ্রেণি-আমাদের এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারেনি। এখনো তাদের জীবনমান বঞ্চিত অবহেলিত, সেসব সুবিধা বঞ্চিত, অধিকার বঞ্চিত অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে যদি আমরা সরকারের সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে না পারি, তাদেরকে যদি স্থায়ী নিবাস ও মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে না পারি তাহলে কিন্তু আমাদের পুরো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়বে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোবাশ্বের হাসান জানান, ‘এই বেদে জনগোষ্ঠীর জীবন মান উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তাদেরকে আমরা উৎসাহিত করার জন্য চেষ্টা করছি, এটি  একটি চ্যালেঞ্জ। আইনশৃঙ্খলার বিষয়টিও আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। সেই সাথে ঝড়ে পরা শিশুসহ শিক্ষার বাইরে যেসব শিশু রয়েছে তাদেরকে নিয়ে কিছু সংগঠন কাজ করছে। দিপ আই কেয়ারসহ কিছু স্কুল আছে এবং আমাদের সরকারি প্রতিষ্ঠানতো আছেই। আমরা চেষ্টা করছি।’

জানা যায়, ১০ মাস আগে মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুর ও ফরিদপুর জেলা থেকে আসা একশটি বেদে পরিবার অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়ে আছে জেলার এই স্থানটিতে। সাপ খেলা ও তাবিজ বিক্রিই তাদের আয়ের প্রধান উৎস। জীবিকার তাগিদে বছরের অর্ধেক সময়ই নৌকা নিয়ে ছুটে বেড়ায় দেশের নানা প্রান্তরে। তারাও পরিবার নিয়ে বাঁচতে চায় সাধারণ মানুষের মতো।

;