পাইকারিতে কমলেও খুচরা বাজারে ভোজ্যতেল আগের দামেই!
বিশ্ববাজারে দাম কমে যাওয়ায় পাইকার পর্যায়ে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দর না থাকায় এখনও বেশি দামে ভোজ্যতেল বিক্রি করছে খুচরা বিক্রেতারা। আর এর ভুক্তভোগী হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা।
এদিকে, ভোক্তাপর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম সহনীয় রাখতে এ পণ্যের ওপর মূল্যসংযোজন কর প্রত্যাহারের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়িয়েছে সরকার।কিন্তু এর সুফল এখনও ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ও ঢাকার মৌলভীবাজারের পাইকারি বাজারে এখন সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকা এবং পাম তেল ১২৯-১৩১ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু খুচরা পর্যায়ে খোলা সয়াবিন তেল লিটার প্রতি ১৮০ টাকা এবং পাম তেল ১৫৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা ২৬ জুন সরকার নির্ধারিত দর।
১ জুন থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। ইনডেক্সমুন্ডি অনুসারে, ১ জুলাই সয়াবিন তেল প্রতি টন ১ হাজার ৪৪৮ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
একইভাবে ওই সময়ে পাম তেলের দাম ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। ১ জুলাই পাম তেল প্রতি টন ৪ হাজার ৮৮৬ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
খাতুনগঞ্জ পাইকারি বাজারের শাহ আমানত ট্রেডার্সের মালিক মো. মহিউদ্দিন বলেন, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে, তাই স্থানীয় বাজারে দাম সমন্বয় করা দরকার।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি দাম মণপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কমে গেলেও সরকার নির্ধারিত দামের কারণে খুচরা বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়ছে না বলেও জানান তিনি।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেশি হওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ব্যবসায়ীরা গত তিন মাসে কয়েকবার দাম বাড়িয়েছে। এখন, যখন উল্টোটা দাম কমেছে, তারা এখন দাম পরিবর্তন করছে না। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য যে আন্তর্জাতিক বাজারে কম দামের সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে না বলেন তিনি।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জ্যেষ্ঠ সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বাংলাদেশি টাকার মান কমে যাওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক মূল্য অনুসরণ করে বাংলাদেশে সয়াবিন তেলের দাম কমেনি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ছয়টি শোধনাগারের মাধ্যমে ১৬ লাখ ৫১ হাজার টনের বেশি পাম তেল ও সয়াবিন তেল আমদানি করা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের প্রয়োজন হয়। স্থানীয় উৎপাদকদের কাছ থেকে মাত্র ২ দশমিক ০৩ লাখ টন সংগ্রহ করা যায়, বাকিটা আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়।