সত্য ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠাই শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা
অন্যায় অবিচার সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ, সত্য ও ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠাই হজরত ইমাম হোসাইনের (রা) দর্শন ও শাহাদাতে কারবালার শিক্ষা। কারবালা ময়দানে নবীপরিবারের ওপর জঘন্য নৃশংসতা ও বর্বতার কারণে ইয়াজিদ আজ ঘৃণ্য ও ধিকৃত। ইয়াজিদ গায়ের জোরে মসনদে বসে ইসলামবিরোধী কার্যকলাপকে বৈধতা দিয়েছিল। সুদ-ঘুষ, দুর্নীতি ও ব্যাবিচারকে স্বীকৃতি দিয়ে ইয়াজিদ ইসলামের ন্যায়নিষ্ঠ দর্শনকে ভূলুণ্ঠিত করেছিল।
সোমবার (০১ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদে আহলে বায়তে রসুল (স) স্মরণে আয়োজিত ১০ দিনের শাহদাতে কারবালা মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন। শাহদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদ ৩৭তম এ মাহফিলের আয়োজন করে।
মাহফিলের দ্বিতীয় দিনে আনজুমানে রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্র্যাস্টের সিনিয়র সহসভাপতি মুহাম্মদ মহসিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, আহলে বায়তে রাসুলের (স) বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় ইয়াজিদের ঠাঁই হয়েছে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে। কারবালা মানে অন্যায় ও অসত্যের কাছে মাথা নত না করা। তিনি জমিয়তুল ফালাহর আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলকে চট্টগ্রামের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির অনন্য দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান এবং পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিদেশি আলোচক ছিলেন ভারতের কাসওয়াসা দরবার শরিফের সৈয়দ মুহাম্মদ নুরানী আশরাফ আসরাফি আল জিলানি আস-সিমনানী।
সূফী মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, কারবালার হৃদয়বিদারক ও মর্মন্তুদ ঘটনাবলির নেপথ্য হাকিকত হচ্ছে- অবাঞ্ছিত আপসকামিতাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় না দেওয়া। যে রকম বৈরী কিংবা প্রতিকূল অবস্থাই হোক না কেন, কোনো পরিস্থিতিতে অন্যায়-অসত্যের কাছে মাথা নত না করাই হচ্ছে কারবালার মূল দর্শন ও শিক্ষা। এক্ষেত্রে হজরত ইমাম হোসাইন (রা) তথা আহলে বায়তে রাসুলের (স) বীরোচিত প্রতিরোধ-সংগ্রাম অতঃপর শাহাদাতবরণ দুনিয়াবাসীর জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ মুহাম্মদ মহসিন বলেন, আহলে বায়তে রাসুলের (স) প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য ও প্রিয় নবীর (স) সন্তুষ্ট অর্জন করতে পারি।
মাহফিলে জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মুফতি কাজী মুহাম্মদ আবদুল ওয়াজেদ, জামেয়ার প্রভাষক মাওলানা আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রিজভি ও জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদের পেশ ইমাম হাফিজ মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ জালাল উদ্দিন বক্তব্য রাখেন।
মাহফিলে অতিথি ছিলেন শাহজাদা-এ-গাউসুল আজম সৈয়দ আহমদ হোসাইন ইরফানুল হক মাইজভান্ডারি, জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের খতিব আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মুহাম্মদ আলাউদ্দীন, পীরে ত্বরিকত মাওলানা শাহ মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন আলকাদেরী, মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান সমন্বয়কারী আলহাজ আলী হোসেন সোহাগ, পিএইচপি ফ্যামিলির পরিচালক ও আনজুমান প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনের প্রধান আলহাজ আমীর হোসেন সোহেল, গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আলহাজ পেয়ার মুহাম্মদ ও মহাসচিব শাহজাদা ইবনে দিদার, আল্লামা নূর মোহাম্মদ সিদ্দিকী, সমাজসেবক মুহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, কাউন্সিলর মুহাম্মদ হাসান মাহমুদ হাসনি, চট্টগ্রাম মহানগর গাউছিয়া কমিটির সভাপতি তাসকির আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
এ ছাড়াও বিভিন্ন দরবারের সাজ্জাদানশীন ও আওলাদবৃন্দ, বিভিন্ন মসজিদের খতিব ও ইমামবৃন্দ, বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবীগণ মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন।