ভোলায় মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপর, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
পূর্ণিমার প্রভাবে ভোলায় গত কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি ও অস্বাভাবিক জোয়ারে মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নিম্নাঞ্চল এবং বেড়িবাঁধের বাইরের এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২৫ গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে চরফ্যাশন উপজেলার ঢালচর, চর নিজাম, মুজিবনগর, মনপুরার কাজির চর এবং সদরের মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকার শত শত একর জমির ফসল ও পুকুরের মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে।
শনিবার (১৩ আগস্ট) বিকেলে ভোলার মেঘনা নদীরর পানি বিপৎসীমার ৯১ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়।
জোয়ারের পানিতে রাস্তাঘাট, ঘর-বাড়িসহ বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ পড়েছে ভোলার চরাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকা ও বাঁধের বাইরের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ। জেলার ঢালচর, চর নিজাম, মুজিবনগর,কুকরি-মুকরি, মদনপুর, মনপুরার কাজির চর এবং মেঘনা নদীর তীরবর্তী সদরের ইলিশা, রাজাপুর ও ধনিয়ায় বাঁধের বাইরের নিম্নাঞ্চলের ২৫ গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
চরফ্যাশনের ঢালচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাম হাওলাদার জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো সহায়তা পায়নি। শত শত মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। পানি উঠে আবার নেমে গেলেও লবণাক্ততার সৃষ্টি হওয়ায় জমির উর্বরতা কমে গেছে। ভবিষ্যতে এসব এলাকায় ফসল হবে না বলেও আশঙ্কা করছেন তারা।
ভোলার ইলিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ছোটন জানান, তার এলাকায় গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও অতি জোয়ারের কারণে বাঁধের কয়েকটি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট চিহ্নিত করে সংস্কারের দাবি করেছেন তিনি। এছাড়া বাঁধের বাইরে যে সমস্ত এলাকায় জোয়ারের পানি উঠেছে তাতে মানুষের পুকুরের মাছ ও ফসলের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব মানুষের জন্য সাহায্য সহযোগিতার দাবি করেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলা-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানিয়েছেন, এ মৌসুমে ভোলায় সর্বোচ্চ জোয়ার প্রবাহিত হচ্ছে। তাই তাদের নিয়মিত মনিটরিং রয়েছে। বাঁধের যে সমস্ত জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন, সে সমস্ত জায়গায় বালুভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে মেরামত করা হচ্ছে। দৌলতখানে ২ শত মিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় মেরামত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।