ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আলেকজান্ডার ক্যাসেল

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ময়মনসিংহ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আলেকজান্ডার ক্যাসেল

ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে আলেকজান্ডার ক্যাসেল

সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ময়মনসিংহের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা আলেকজান্ডার ক্যাসেল বা লোহার কুঠির। ইতিহাস ঐতিহ্যের ধারক লোহার কুঠির এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও দেখভালের কেউ নেই। যে কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্প অনুমোদন হলেই শুরু হবে সংস্কার কাজ।

বিদেশি অতিথিদের থাকার জন্য ঊনবিংশ শতাব্দীতে ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে জমিদার সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরী নির্মাণ করেন আলেকজান্ডার ক্যাসেল। ১৮৭৯ সালে বাগানবাড়ি হিসেবে ময়মনসিংহ শহরে ৯ একর ভূমির মাঝে নির্মাণ করেন দ্বিতল লোহারকুঠি। পরে তৎকালীন জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নামে এর নাম রাখা হয় আলেকজান্ডার ক্যাসল যা স্থানীয়দের মাঝে লোহার কুঠির নামে পরিচিত।

বিজ্ঞাপন

লোহা, কাঠ ও টিন দিয়ে এই কুঠি নির্মাণে প্রাকৃতিকভাব শীতল রাখতে সিলিংয়ে ব্যবহার করা হয় ফ্রান্স থেকে আনা আব জাতীয় দুর্লভ এক বস্তু। তখন ভবনটির চারপাশে ছিল দিঘি ও বাগান।

১৯২৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধী থেকেছেন এই লোহার কুঠিতে। এছাড়া লর্ড কার্জন, চিত্তরঞ্জন দাস, নবাব স্যার সলিমুল্লাহ, কামাল পাশা, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুও ছিলেন এখানে।

বিজ্ঞাপন

জমিদারদের শাসনামল শেষে এবং দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে আলেকজান্ডার ক্যাসেলটি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

সংস্কারের অভাবে স্থাপনাটি আজ পড়ে আছে দুরবস্থায়। খসে পড়ছে পলেস্তারা, চুরি হয়ে যাচ্ছে লোহার তৈরি বিভিন্ন অংশ। বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কায় স্থানীয়রা।

লোহার কুঠির দেখতে আসা কলেজছাত্র ফারদিন আহমেদ বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে লোহার কুঠির সংস্কারের দাবি জানাই । দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে আলেকজান্ডার ক্যাসেলটি সংস্কারের দাবি জানান নাগরিক নেতৃবৃন্দ।

ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক শিব্বির আহমেদ লিটন বলেন, আলেকজান্ডার ক্যাসেলটির দৃষ্টিনন্দন সংস্কার করে লেকটি খনন করলে এটি ময়মনসিংহের একটি পর্যটনকেন্দ্র হতে পারতো। বিগত দিনে এ বিষয়ে বিস্তারিত লিখে জেলা প্রশাসক বরাবর জন উদ্যোগের পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছিল।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতররের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান মিতা বলেন প্রকল্প অনুমোদন হলেই আগামী অর্থ বছরে সংস্কার কাজ শুরু হবে।

১৪৪ বছরের পুরাতন ভবনটি সংস্কার করে স্থানটিকে গড়ে তোলা হবে পর্যটন কেন্দ্রে এমনটাই প্রত্যাশা ময়মনসিংহবাসীর।