শহীদ জায়া অধ্যাপক পান্না কায়সার আর নেই



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরেণ্য লেখক-গবেষক, বুদ্ধিজীবী, শিশু-কিশোর আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব, সাংস্কৃতিক সংগঠক, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক পান্না কায়সার মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

শুক্রবার (৪ আগস্ট) সকালে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পান্না কায়সারের পারিবারিক সূত্র। একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক, লেখক এবং রাজনীতিবিদ শহীদুল্লা কায়সারের স্ত্রী পান্না কায়সারের জন্ম ১৯৫০ সালের ২৫ মে। ১৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে শহীদুল্লাহ কায়সারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। 

১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় শহীদুল্লা কায়সারকে তার বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায় আলবদর বাহিনী। এরপর তিনি আর ফেরেননি। এরপর থেকে পান্না কায়সার একা হাতে মানুষ করেছেন তার দুই সন্তান শমী কায়সার ও অমিতাভ কায়সারকে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত দেশের বৃহত্তম শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘরের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হন ১৯৭৩ সালে। ১৯৯২ সাল থেকে সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতিও।

১৯৯৬-২০০১ সালের জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ছিলেন পান্না কায়সার। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণা, গল্প-উপন্যাস মিলিয়ে বেশ কয়েকটি সাড়া জাগানো গ্রন্থের রচয়িতা তিনি। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গবেষণায় অবদান রাখায় ২০২১ সালের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।

   

ডিসি-ইউএনওদের জন্য কেনা হচ্ছে ২৬১ গাড়ি, ব্যয় ৩৮২ কোটি টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) জন্য কেনা হচ্ছে ২৬১ বিলাসবহুল গাড়ি। এতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৮২ কোটি টাকা।

সাবেক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (২১ মে) অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই গাড়ি কেনার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিস্তারিত আসছে...

;

জনসংখ্যার ঘনত্বকে মাথায় রেখে পরিকল্পনা করতে হবে: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
তাপস বলেন, ঢাকাকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে হলে তিনটি কাজ আমাদের করতে হবে

তাপস বলেন, ঢাকাকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে হলে তিনটি কাজ আমাদের করতে হবে

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জনসংখ্যার ঘনত্বকে মাথায় রেখেই আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। তবে ঢাকা মুখী অভিবাসনের যে স্রোত, তা থামতে না পারলে উন্নয়নের সুফল পাওয়া যাবে না।

বুধবার (২২ মে) বিকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত 'নিরাপদ নগর দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে পাঁচ সাংবাদিককে নগর সাংবাদিকতার জন্য 'বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ঢাকাকে নিরাপদ ও বাসযোগ্য করতে হলে তিনটি কাজ আমাদের করতে হবে। কাজগুলো হচ্ছে- শহরকে দুর্নীতি মুক্ত করতে হবে। কঠোর আইনের প্রয়োগ করতে হবে। আইন বাস্তবায়নের জন্য দক্ষ বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। তবে আমাদের কাজের মাধ্যমে শহরের বাসযোগ্যতা আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা বলেন, নিরাপদ নগরীর সব সূচকে পিছিয়ে রয়েছে রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার ৫৩ বছরেরও এই শহরকে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়নি। ফলে শহরটির নাগরিকদের পদে পদে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রয়োজন রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা এবং দায়িত্বশীল সংস্থা গুলোর সমন্বয়।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক মো. সাইফুল আলম বলেন, নগরের সংকট সমাধানে সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, গ্রাম হবে শহর, শহর হবে বাসযোগ্য এই স্লোগানে যেতে হবে।

বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন কোথাও না কোথাও আগুন লাগে। এই শহর কতটা নিরাপদ? তা আমাদের প্রশ্নেই ঘাটতি ফুটে ওঠে। পৃথিবীর মেগাসিটির তালিকায় ঢাকা আয়তনের দিক থেকে ৪০তম, অথচ জনসংখ্যার ঘনত্বের দিক থেকে প্রথম। এই শহরে ৫ লাখ গাড়ি চলার ব্যবস্থা আছে, অথচ চলে ১৬ লাখ গাড়ি। ঢাকায় রাস্তা, গাছ, জলাশয় অনেক কমলেও বাড়ছে শুধু মানুষ।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লান্যার্স এর সাধারণ সম্পাদক শেখ মুহম্মদ মেহেদী আহসান। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের নগরায়ন ও পরিবেশ সম্পাদক স্থপতি সুজাউল ইসলাম খান, সাংবাদিক অমিতোষ পাল, বেস্ট আরবান রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড- ২০২৪ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক হেলিমুল আলম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মতিন আব্দুল্লাহ। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল খান।

;

চট্টগ্রাম শিক্ষোবোর্ড: যোগদান করেই পুরনো শোধ তুলছেন চেয়ারম্যান!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ওএমআর শিট সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান থেকে ‘হাতে হাতে টাকা’ নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক রেজাউল করিম। দুই দফা কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করার পর গত বছরের ১৯ অক্টোবর তাকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) চট্টগ্রাম অঞ্চলে বদলি করা হয়। তখন এই ‘অনিয়ম’ নিয়ে বোর্ডের বর্তমান সচিব অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল রেজাউল করিমের। গত ১৪ মে সেই রেজাউল করিম চেয়ারম্যান হয়ে ফিরেছেন এই শিক্ষাবোর্ডে।

চেয়ারম্যান হয়ে ফেরার পর কোথায় অস্থিতিশীল হয়ে থাকা শিক্ষাবোর্ডে শান্তি ফেরাবেন। উল্টো যোগদান করতে না করতেই বর্তমান সচিবের ছেলের ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণ সংক্রান্ত চলমান দুটি তদন্তের প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠেছে রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে। আর এই কাজে তাকে উপসচিব মো. বেলাল হোসেন সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাবোর্ডে নতুন করে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। এর ফলে সেবা কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, শিক্ষা বোর্ডের সচিবের ছেলে নক্ষত্র দেব নাথ গতবারের এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। তবে তিনি একটি বিষয়ে জিপিএ-৫ পাননি। সেজন্য সচিবের পরিবার পুনর্নিরীক্ষণের জন্য আবেদন করতে চায়। কিন্তু পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করতে গিয়ে দেখতে পান, কে বা কারা আগেই নক্ষত্র দেব নাথের ছয় বিষয়ের ১২টি পত্রের আবেদন করে ফেলেছে। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সচিবের স্ত্রী বনশ্রী নাথ পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনকারীকে শনাক্ত ও আইনি প্রতিকার চেয়ে গত ৪ ডিসেম্বর পাঁচলাইশ থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে এ নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারেন চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব অধ্যাপক আবদুল আলীমের মোবাইল ফোন নম্বর রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করে নক্ষত্র দেবনাথের নামে পুনর্নিরীক্ষণের আবেদনটি করা হয়েছিল। বিষয়টি উল্লেখ করে গত ১৫ জানুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পাঁচলাইশ থানা পুলিশ।

এই ঘটনায় শিক্ষাবোর্ডের সাবেক সচিব আবদুল আলীম ও চট্টগ্রাম কলেজের সাবেক অধ্যাপক মুহাম্মদ ইদ্রিস আলীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন বোর্ডের বর্তমান সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের স্ত্রী বনশ্রী দেবনাথ। ইদ্রিসকেও আসামি করা হয়েছে কারণ তিনি অধ্যাপক নারায়ণ চন্দ্র নাথকে নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছিলেন। সেই বক্তব্যগুলো বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর বলে অভিযোগ করেন নারায়ণ চন্দ্র নাথ। অভিযোগ রয়েছে নারায়ণ চন্দ্র নাথের করা মামলার দুই আসামির একজন বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিমের ঘনিষ্ট বন্ধু।

এদিকে বর্তমান সচিব নারায়ণ চন্দ্র নাথের ছেলের ফলাফল সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অর্থাৎ একটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলার ফৌজদারি মামলা এবং অন্যটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আদেশক্রমে তদন্ত। কিন্তু চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগ দেওয়ার পর নিজ উদ্যোগেই বর্তমান সচিবের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে জোর করে বক্তব্য নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরই মধ্যে ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একে একে গোপনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তাদের চাপ প্রয়োগ করে তার নিজের চাহিদামতো বক্তব্য লিখিয়ে নিয়েছেন। আর চেয়ারম্যানকে এই কাজে বোর্ডের উপসচিব মো. বেলাল হোসেন সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

চাপে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

চেয়ারম্যান শুরুতে গত বৃহস্পতিবার রহমান নামের একজন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা কর্মচারীকে ডেকে নেন। তাকে একান্তে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার কাছ থেকে বক্তব্য লিখিয়ে নেন উপসচিব বেলাল হোসেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় ডাকা হয় শিবলু ও নোমান নামের আরও দুজন দিনভিত্তিক কাজ করা স্ক্যনারকে। তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চেয়ারম্যানের চাহিদানুযায়ী বক্তব্য লিখিয়ে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার ডাকা হয় প্রোগ্রামার আব্দুল মালেককে। তাকে একান্তে চেয়ারম্যান এবং উপসচিব জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তার কাছ থেকেও তদন্ত বিষয়ক নিজের চাহিদামতো বক্তব্য লিখিয়ে নেন চেয়ারম্যান। এদিকে এমন পরিস্থিতিতে দোটানায় পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চেয়ারম্যানের ডাকে সাড়া দিয়ে একদিকে যেতে হচ্ছে, তেমনি আবার চেয়ারম্যানের চাহিদা অনুযায়ী বক্তব্যও দিতে হচ্ছে। যেটি তাদের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে উদ্বেগের।

যে কমকর্তা-কর্মচারীদের ডেকে বক্তব্য নেওয়া হয় তাদের বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে বার্তা২৪.কম। তাদের বেশিরভাগই এই বিষয়ে নাম প্রকাশ করে কথা বলতে চাননি। বলেছেন, এমনিতেই ঝামেলায় আছেন। এখন গণমাধ্যমে বক্তব্য দিলে নতুন করে ঝামেলায় পড়তে পারেন।

চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের একজন অফিস সহকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গোপনে ডেকে আনার বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পরীক্ষা সংক্রান্ত কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মচারীদের ডেকে বক্তব্য নেওয়া হচ্ছে। বড় স্যারেরা অর্ডার দিলে তো কর্মচারীদের আসতেই হবে, যা বলবে তা করতে হবে। কথায় আছে না- কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। সেটিই হচ্ছে আর কি?

এছাড়া চেয়ারম্যান তদন্ত সংক্রান্ত বিষয়াদি নিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে একটি চিরকুট দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে চাহিদা দিয়েছেন, যেটিও বোর্ড আইন পরিপন্থী বলে জানা গেছে।

শিক্ষাবোর্ডের অন্য কর্মকর্তারা বলছেন, সচিবের স্ত্রীর করা সাইবার মামলাটি একটি সাব-জুডিস বিষয়। এ বিষয়ে আদালতের তদন্ত কর্মকর্তা ব্যতীত কারো জিজ্ঞাসাবাদ করার সুযোগ নেই। কিন্তু চেয়ারম্যান নিজ উদ্যোগে জোর করে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে সচিবের বিরুদ্ধে বক্তব্য লিখিয়ে নিচ্ছেন। এ কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে এক ধরণের ভীতি কাজ করছে। যা নিয়ে বোর্ডে এক প্রকার থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

তবে সচিবের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের কাছ থেকে জোর করে বক্তব্য আদায়ের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আমি তো আমার কর্মচারীদের অফিসিয়াল কাজে ডাকতেই পারি। এখানে অন্য কোনো কারণ নেই।

;

চেয়ারে বসা নিয়ে দুই শিশুর ঝগড়া, হামলায় প্রাণ গেল নবজাতকের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বসার চেয়ার নিয়ে দুই শিশুর ঝগড়ার জেরে স্বজনদের হামলায় ২০ দিন বয়সী এক নবজাতক নিহত হয়েছে। নিহত নবজাতকের নাম কবির হোসেন। এই ঘটনায় নিহতের বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

মঙ্গলবার (২১ মে) রাত সাড়ে আটটায় আদাবরের নবোদয় হাউজিং কাঁচাবাজারের পেছনে ৬ নম্বর রোডে এ ঘটনা ঘটে। আজ বুধবার ভোরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে আদাবর থানা পুলিশ।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার নবোদয় কাঁচাবাজারের পেছনে ফাঁকা মাঠে ময়মনসিংহের তাড়াইল উপজেলার নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদ প্রার্থীর পক্ষে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা। সভা উপলক্ষে আনা চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে নিহত শিশুর বড় ভাই তিন বছর বয়সী ফয়সালের সঙ্গে ছয় বছর বয়সী এক শিশুর ঝগড়া হয়। এ সময় তাদের নিবৃত্ত করতে নিহত শিশুর বড় বোন মনি এগিয়ে আসেন। এবং ফয়সালকে নিয়ে বাসায় ফিরে যান আর ছয় বছরের শিশুটিকে বাসায় পাঠিয়ে দেয়। এর কিছু সময় পরেই ওই শিশুটির মামা হিরা এসে মনিকে মারধর করে। হিরার মারধরের হাত থেকে মেয়েকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন মা মিতু বেগম। এই সময় মিতুর কোলে ছিল ২০ দিন বয়সী কবির। মিতু এগিয়ে আসলে হিরা তার মাকেও মারধর করেন। মারধরের এক পর্যায়ে তার দেওয়া একটা ঘুষি কবিরের নাক-মুখে লাগে। এমনকি হিরার পরিবারের হামলায় গুরুতর আহত হয় বয়োবৃদ্ধ ও প্যারালাইসিসে আক্রান্ত ৭০ সত্তরোর্ধ্ব মনোয়ারাও।


স্থানীয়রা জানান, শিশুর কান্নাকে কেন্দ্র করে কোনো কিছু যাচাই না করেই অতর্কিত হামলা চালায় হিরা ও তার বোনেরা। কয়েক দফায় নবজাকের মা মিতু ও তার মেয়েকে মারধর করা হয়। হিরা ছাড়াও হামলায় জড়িত ছিলো জুমা, সুমা ও খুকি নামের তার তিন বোন ও বোন জামাইরা। স্থানীয়দের কাছে হিরার পরিবার মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারী হিসেবে পরিচিত। হিরার নামে অন্তত ১২টি ছিনতাই মামলা রয়েছে। তার পরিবারের বিভিন্ন সদস্যদের নামে মাদক ও হত্যাসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। এই পরিবারের হামলা শিকার হয়ে একাধিক নারী এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।

বুধবার (২২ মে) বিকেলে নবোদয় হাউজিং এলাকায় নিহত নবজাতকের বাসায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙাচোরা একটি টিনের ঘরে পরিবারটির বসবাস। নানি মনোয়ারার পাশে ঘুমিয়ে আছে তিন বছর বয়সী ফয়সাল। ঘরের দরজায় প্রতিবেশীদের মাঝে বসে আছেন মিতু। সন্তান হারানো কবিরের শোকে কাতর। সঙ্গে যোগ হয়েছে মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে মারধরের যন্ত্রণা।

নিহত শিশুর মা মিতু বেগম জানান, গতকাল মাঠে একটি অনুষ্ঠানের চেয়ারে বসা নিয়ে আমার তিন বছর বয়সী ছেলের সঙ্গে প্রতিবেশী একজনের ছেলের ঠেলাঠেলি হয়। এই ঘটনা মিটিয়ে দিয়ে আমার মেয়ে ছেলেকে নিয়ে বাসায় আসে। এরপর ওই শিশুটির মামা এবং খালারা মিলে বেশ কয়েকজন কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্য নিয়ে এসে আমার ও পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা করে। হামলায় আমার কোলে থাকা ২০ দিন বয়সী ছেলে কবির নিহত হয়।

মিতু আরও বলেন, ঘটনার পর থানায় গেলে পুলিশ মেডিকেলে যেতে বলে। আমরা মেডিকেল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে এসে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়ে রাত সাড়ে বারোটায় বাসায় ফিরি। রাতে আমার কোলের শিশুকে দুধ খাইয়ে ঘুম পাড়ায়। ভোর চারটার দিকে আবার দুধ খাওয়ানোর জন্য তুলতে গিয়ে দেখি আমার ছেলে নড়াচড়া করছে না। আমি চিৎকার দিলে সবাই ঘুম থেকে ওঠে যায়। তখন দেখি আমার বুকের ধন আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। আর বেঁচে নেই। সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের মরদেহ নিয়ে থানায় গেলে বাসায় পুলিশ আসে। আমার ছোট্ট শিশুটির মরদেহ নড়াচড়া দিলেই তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছে অনবরত। মানুষ নামের হায়েনা মাদক ব্যবসায়ীরা আমার শিশুটিকে এভাবে মেরে ফেললো। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।

এ বিষয়ে আদাবর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, ঘটনা শোনার পর ভোরেই ঘটনাস্থলে যাই। শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত শিশুটির বাবা ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ ঘটনার সাথে জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বাকি আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

;