মৃত্যুসনদ নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নড়ে উঠল নবজাতক
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে মৃত্যু সনদ দেওয়ার পর বাড়িতে নেওয়ার পথে নড়াচড়া করে উঠে নবজাতক। পরে রাস্তা থেকে আবারও হাসপাতালে আনা হলে ভর্তি করা হয় নবজাতককে।
মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) দুপুরে হাসপাতালের নবজাতক নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে (এনআইসিইউ) এই ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ত্রিশাল উপজেলার কানিহারী ইউনিয়নের বাড়মা গ্রামে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী হালিমা খাতুন গত রোববার (৬ আগস্ট) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে স্বাভাবিকভাবে কন্যাসন্তান প্রসব করেন। সাত মাসে জন্ম নেওয়ায় শিশুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল ও ওজন ছিল ৯০০ গ্রাম। এ কারণে এনআইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১০টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করে মৃত্যু সনদ দেওয়া হয় হাসপাতাল থেকে। সেখান থেকে বাড়িতে নেওয়ার পথে শিশুটি নড়ে ওঠে। পরে তাকে আবারও ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নবজাতকের চাচা আশিকুল ইসলাম বলেন, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নবজাতক মারা গেছে বলে মৃত্যু সনদ দেয়। বাড়ি নেওয়ার পথে নবজাতক নড়ে উঠে। পরে হাসপাতালে আনা হলে আবারও এনআইসিইউতে নিয়ে যায়। পরে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে এনআইসিইউ থেকে ফোন দিয়ে জানানো হয় বাচ্চা মারা গেছে।।
সাইফুল ইসলাম বলেন, হাসপাতাল থেকে শিশুকে নিয়ে অটোরিকশায় করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথিমধ্যে সদরের চুরখাই এলাকায় যেতেই শিশুটি নড়ে ওঠে এবং হা করে নিঃশ্বাস নিতে থাকে। পরে আবার তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে আসি। হাসপাতালের আনার পর অক্সিজেন দিতে বাচ্চা তাকাতে শুরু করে ও হাত-পা নাড়াতে থাকে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে হাইফ্লো অক্সিজেন দিয়ে এনআইসিইউতে নিয়ে যান। রাতে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, নবজাতক মারা গেছেন। পরে বাড়িতে আনতে হাসপাতালে গেলে সেখান থেকে জানানো হয়, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে।
আইনগত ব্যবস্থা নিবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো এবিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেইনি।
হাসপাতালেে নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, শিশুটিকে বর্তমানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। তবে অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। যেহেতু শিশুটি প্রিম্যাচিউরড সেহেতু তার হার্ট ও অন্যান্য অঙ্গ প্রিম্যাচিউরড, হয়তো দুপুরে শ্বাস-প্রশ্বাস না পাওয়ায় মৃত ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক। পরে দেখা গেছে, জীবিত।
হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. জাকিউল ইসলাম বলেন, নবজাতক লাইফ সাপোর্টে আছে। এই ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত শেষে বলা যাবে, কিভাবে কি হয়েছে।