কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মজির উদ্দিন (৭০) নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজ শেষে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মজির উদ্দিন মাস্টার নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। এসময় তারাগুনিয়া ফুটবল মাঠে ফুটবল খেলা দেখে একদল যুবকের দ্রুত ও বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মজির উদ্দিন মাস্টার তার নিজ বাড়ির সামনে দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা প্রথমে দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। পরে তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সকালে তিনি মারা যান।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে নয় জন কৃষক স্থানীয় কৃষি বিভাগের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করেছেন। তারা এসব উৎপাদিত সার নিজেদের জমিতে ব্যবহার করে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করছেন।
রাসায়নিক সারের ব্যবহার ছেড়ে ভার্মি কম্পোস্ট কেঁচো সারের দিকে ঝুঁকছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের কৃষকেরা। রাসায়নিক সারের ক্ষতিকারক দিক বিবেচনা করে কৃষকরা এখন ব্যাপক হারে ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার শুরু করেছেন। ফলে স্থানীয় কৃষি অফিসের সহায়তায় ৮টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারের উৎপাদন।
জানা গেছে, জমিতে অতিমাত্রায় বালাইনাশক, আগাছা নাশক, কৃত্রিম রাসায়নিক সার ব্যবহার করায় দিন দিন মাটির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে জৈব পদার্থের পরিমাণ কমে যাচ্ছে। তাই ভূমিকা রাখছে কেঁচো সার। বালাই নাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে বিনষ্ট মাটির উর্বরতা শক্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম এই ভার্মি কম্পোস্ট।
সরেজমিনে দেখা যায়, গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামের ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো) সার তৈরির উদ্যোক্তা কৃষক মো. সুমন আলী, তার নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় ছায়াযুক্ত স্থানে স্থানীয় কৃষি অফিসের আর্থিক সহায়তায় চৌগাছা স্থাপন করেছে। এতে পুরোনো গোবর আর কেঁচো দিয়ে রিংগুলো ঢেকে রেখেছেন। প্রতিটি চৌগাছায় দুই থেকে আড়াই হাজার কেঁচো রয়েছে। প্রথমে ৪০ থেকে ৪৫ দিন পর চৌগাছা থেকে ৩৫০০ কেজি ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি হয়।
গোমস্তাপুর ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো কম্পোট সার প্রয়োগে খরচ হয় মাত্র আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। কিন্তু রাসায়নিক সার ব্যবহারে সেই ফলন পেতে চাষিদের গুনতে হয় তিন থেকে চার গুন টাকা।অন্যদিকে এ সার তৈরিতে তেমন খরচ না হওয়ায় আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি।
পার্বতীপুর ইউনিয়নের আরেক কৃষক ফাইজুদ্দিন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার উৎপাদিত কম্পোস্ট সার আমি আমার জমিতে ব্যবহার করি। ব্যবহার করার পরে আমি বাণিজ্যিকভাবে বাজারে বিক্রি করি। উৎপাদিত কম্পোস্ট সার ১৪-১৫ টাকা দরে নিজের চাহিদা মিটিয়ে উপজেলার বিভিন্ন কৃষকদের কাছে বিক্রি করি। এতে আমি আর্থিকভাবে ব্যাপক লাভবান। তাই এই কেঁচো সার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করেছি।
গোমস্তাপুর ইউনিয়ন কৃষি অফিসের উপসহকারী শেখ মোঃ আল ফুয়াদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, কেঁচো সার ব্যবহারে মাটির জৈবশক্তি বৃদ্ধি পায় ও পিএইচ মান সঠিক মাত্রায় থাকে। এ ছাড়াও মাটির প্রকৃত গুণ রক্ষা করে, মাটির পানির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে ফসলে পানি সেচ কম লাগে, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে, মাটিকে ঝরঝরে করে ও বায়ু চলাচল বৃদ্ধি করে, উদ্ভিদেও শেকড়ের মাধ্যমে শোষণক্রিয়া স্বাভাবিক রাখে, বীজের অঙ্কুরোদগম শক্তি বৃদ্ধি করে ও গাছকে সুস্থ-সবল রাখে, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে এতে কৃষকের চাষ খরচ অনেক কম হয়, ফসলের ফলন বৃদ্ধি ও পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি করে।
গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তানভীর আহমেদ সরকার জানান, জৈব সার প্রদানের জন্য আমরা কাজ করেই যাচ্ছি উঠান বৈঠক, মাঠ দিবসেও কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে থাকি। জৈব সারের উপকারিতা ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজি, ফলবাগানে এ সার ব্যবহার করে ভালো ফলন পাওয়া যায়। আর এর ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে, মাটিতে বায়ু চলাচল বাড়ে। পানির ধারণক্ষমতা বাড়ে ও বিষাক্ততা দূরীভূত হয়। এছাড়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে কেঁচো সার প্রয়োগ করে কম খরচে অতি দ্রুত সুস্বাদু মাছ উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়। ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনে তেমন কোন খরচ নেই বললেই চলে। নিজেদের বাড়িতে পালিত গরুর গোবর অথবা সামান্য দামে গোবর কিনে এই সার উৎপাদন করা যায়। গোমস্তাপুর উপজেলা এই সার উৎপাদন করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়া ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহারে মাটি স্বাস্থ্যবান হয়। বিষমুক্ত শাক-সবজিসহ অন্যান্য ফসল উৎপাদনে কেঁচো সার খুবই কার্যকর। একজন কৃষক এই সার একবার ব্যবহার করলে, তিনি নিজের তাগিদে এই সারের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলার টরকী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নীলখোলা এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চালক ও আরোহী নিহত হয়েছেন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মোটরসাইকেল চালক রিমু খান (২২) গৌরনদী উপজেলার দক্ষিণ রামসিদ্ধি গ্রামের হেদায়েত খানের ছেলে ও শাহজাদা তালুকদার (৬২) কটকস্থল গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, মোটরসাইকেলটি ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল চালক রিমু খান ও আরোহী শাহজাদা তালুকদার গুরুতর আহত হন। পরে রিমু খানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আর শাহজাদা তালুকদার বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
বরিশাল গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমিনুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার সময় শিমুল-সিফাত-শাহিক পরিবহনের একটি মালবাহী ট্রাক নীলখোলা এলাকায় মহাসড়কের পাশে মাল আনলোড করছিল। এমন সময় দ্রুতগতির মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকটির সঙ্গে ধাক্কা খায়। ট্রাকটি ইতোমধ্যেই আটক করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
বরিশাল গৌরনদী হাইওয়ে পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসন মহাসড়কে বেপরোয়া যান চলাচল বন্ধে সচেতনতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে মাদক নিয়ন্ত্রণে দ্বন্দে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় আলোচিত ও মোহাম্মদপুর থানার চাঞ্চল্যকর সাগর হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মো. আকরাম ওরফে কিলার আকরাম (৪৫) কে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আকরাম জেনেভা ক্যাম্পের চার নম্বর ব্লকের বাসিন্দা আহমেদ হোসেনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে মোহাম্মদপুর জেনেভা ক্যাম্প এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-২। বুধবার (১৫ জানুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-২ এর সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) খান আসিফ তপু।
তিনি জানান, সম্প্রতি মোহাম্মদপুর থানার জেনেভা ক্যাম্পের শীর্ষ মাদক কারবারি চুয়া সেলিম এবং ভূঁইয়া সোহেল গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে শর্টগান হতে সক্রিয়ভাবে প্রতিপক্ষের ওপর কিলার আকরামকে গুলি করতে দেখা যায়। আকরাম বর্তমানে চুয়া সেলিমের পক্ষের হয়ে সোহেল গ্রুপের ওপর হামলা চালায়। ওই ঘটনায় বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ও সাগর নামের একজন নিহত হয়। সাগর নিহতের ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় দায়ের হওয়া মামলায় আকরাম অন্যতম আসামি।
এএসপি তপু আর জানান, আকরামের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের কারবারের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মাদক, অস্ত্রসহ বিভিন্ন আইনে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
গ্রেফতারকৃত আকরামকে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
সরকার তামাকজাত পণ্যে কোস্পানি থেকে যে পরিমাণ আয় বা রাজস্ব পায়, তার চেয়ে চিকিৎসাখাতে ব্যয় বেশি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সিরডাপ মিলনায়তনে "জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক কর নীতি বাস্তবায়নের প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়" শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, তামাক উৎপাদনের ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। কারণ নদীর পারে বিশেষ করে হালদা ও তিস্তার পারে তামাক চাষ হয়ে থাকে। আর তামাক চাষে কীটনাশক ও সার ব্যবহারের ফলে সংশ্লিষ্ট এলাকাতে মাছ নষ্ট হচ্ছে আবার মারাও যাচ্ছে। তামাক কোম্পানিগুলো জুজুর ভয় দেখিয়ে বলে থাকে ১৫ লক্ষ তামাক বিক্রেতা এ পেশার সাথে জড়িত। কিন্তু এদের বেশির ভাগই শিশুশ্রম। প্রকৃতপক্ষে তামাক বিক্রির সাথে এত সংখ্যক লোক সঠিক আছে কিনা তা দেখা দরকার।
বক্তারা দেশে তামাক কর কাঠামো বিশ্লেষণ, তামাক কোম্পানির কৌশল উদঘাটন এবং কর আরোপের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, তামাকজাত দ্রব্য থেকে যে রাজস্ব আহরিত হয় তার চেয়ে বেশি টাকা তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণের ফলে স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসাজনিত কারণে ব্যয় হয়ে থাকে। তাই এবিষয়ে আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি)'র টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মীর আলমগীর হোসেন, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব অপূর্ব কুমার মন্ডল, বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মোঃ বদরুজ্জামান মুন্সী, টোব্যাকো ফ্রি কিডসের লিড পলিসি অ্যাডভাইজার মো. মুস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মোঃ আখতারউজ-জামান প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপির টেকনিক্যাল কমিটির সদস্য সাংবাদিক ও গবেষক সুশান্ত সিনহা।