বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে বলেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন এমন বক্তব্য দিলেন তা আমার বোধগম্য নয়।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি জানানো শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ব্যক্তিগত ভাবে ওনার (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। ওনার বাসাতেও যাতায়াত ছিল। ওনি কেন এমন বক্তব্য দিলেন তা আমার বোধগম্য নয়। তবে রাজনৈতিকভাবে এই বক্তব্য সুফল বয়ে আনবে না।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটি বিশেষ গোষ্ঠি তাদের সর্বশক্তি দিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা মেনে নিচ্ছি তাদের এক্ষেত্রে শক্তি আমাদের চেয়ে বেশি। তবে আমরা সবাইকে বিষয়টি পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি।
ভারতীয় গণমাধ্যম বাংলাদেশের সংখ্যালঘু পরিস্থিতি নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধাননত ভারতীয় মিডিয়ায় অপপ্রচার চাালানো হচ্ছে। এর বাইরেও অনেক মিডিয়া ভারতীয় মিডিয়াকে উপজীব্য করে অপতথ্য ছড়াচ্ছে। তবে আমরা বলতে চাই সব সরকারের আমলেই বছরে দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। তবে সরকারের কাজ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা। আমরা সেটি করেছি। তবে দেশ ও দেশের বাইরে এ নিয়ে মিথ্যা তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশি হিন্দুদের নিয়ে ভুল ধারণা তৈরি করছে ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশ, সেটি পরিষ্কার করতে বিদেশি কূটনীতিকদের প্রকৃত পরিস্থিতি জানানো হলো আজ।
ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে এ দেশে কেউ কোনও আক্রমণের শিকার হবে না, সেটি নিশ্চিত করেছে সরকার, আর তা করা হবেও— ব্রিফিংয়ে কূটনীতিকদের তা জানানো হয় বলে উল্লেখ করেন তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি নিয়ে বৃটেনের সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেটি একপেশে। এ নিয়ে লন্ডনের সাথে কথা বলবে ঢাকা।
কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয়দের বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টাকে উসকানিমূলক বলে আখ্যা দিয়েছেন তৌহিদ হোসেন।
ঢাকা -দিল্লি সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগের ও পরের সরকারে পার্থক্য আছে। এটার সাথে অভিযোজনে কোনও দেশের সময় লাগতে পারে।
এসময় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেন, সরকারের ব্রিফিং কূটনীতিকরা আশ্বস্ত হয়েছেন।