বড় মনির নামে ধর্ষণ মামলার বাদীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা
টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের বড় ভাই ও টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবং জেলা বাস কোচ মিনি বাস মালিক সমিতির মহাসচিব গোলাম কিবরিয়া বড় মনিরের বিরুদ্ধে দায়ের করা ধর্ষণ মামলার বাদীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) রাতে নিহত মির্জা আফরোজ এশার বড় বোন মির্জা লুনা বাদী হয়ে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা মির্জার ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনি ও সৌরভ নামের এক যুবককে আসামি করা হয়েছে।
এর আগে, আলোচিত ধর্ষণ মামলার বাদী মির্জা আফরোজ এশার (২২) নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকালে সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করের বেতকার নিজ বাসার তৃতীয় তলায় এশার মরদেহটি পাওয়া যায়। মির্জা আফরোজ এশা করের বেতকা গ্রামের মৃত লতিফ মির্জার মেয়ে।
মির্জা আফরোজ এশাকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে নিজ বাসার রুমে ভিতরে এশার শিশু পুত্রের কান্না শুনতে পান এক নারী। পরে আশপাশের লোকজনকে জানালে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। সন্ধ্যায় ক্রাইমসিনের টিম এসে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে মর্গে প্রেরণ করে।
রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ছালাম মিয়া।
তিনি জানান, শনিবার রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে এশা মির্জার বড় বোন মির্জা লুনা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশার ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনি ও সৌরভ নামের একজনকে আসামি করেছে। লাশ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আজ রোববার ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এশা বাদী হয়ে গোলাম কিবরিয়ার বড় মনির বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে ৬ এপ্রিল দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন ওই কিশোরী।
মামলা দায়েরের পর গোলাম কিবরিয়া উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৩০ জুন টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এশা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরে আদালতের নির্দেশে এশার গর্ভে জন্ম নেওয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম নেওয়া ওই শিশুটির পিতা বড় মনির নন। পরে আদালত গত ৯ অক্টোবর বড় মনিরকে ১১ জুলাই উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। পরে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের এই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।