ময়মনসিংহে রাকিব হত্যা, আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, ময়মনসিংহ 
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ময়মনসিংহ নগরীতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব (২৫) নামে এক যুবক হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্ত্রাসী শাওনসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

রবিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে বিভাগীয় কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এতে নেতৃত্ব দেন মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নিহতের চাচা আবু বক্কর সিদ্দিক সাগর।

বিজ্ঞাপন

এসময় উপস্থিত ছিলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবিএম আবু বক্কর সিদ্দিক, ৩১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এমদাদুল হক মন্ডল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের কাউন্সিলর ফারজানা ববি কাকলি, মহানগর আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হক প্রমুখ।

এর আগে নগরীর চায়না মোড় থেকে নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ মিছিল নিয়ে রাকিব হত্যাকারীদের গ্রেফতার চাই, ফাঁসি চাই স্লোগানে স্লোগানে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে মিছিলটি শেষে করেন।

বিজ্ঞাপন

স্মারকলিপি দেয়া শেষে নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমকে বলেন, ইতিমধ্যে ৯ আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত অন্যরা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। গ্রেফতার হওয়া আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নয়তো এরা আবারও অন্য কাউকে হত্যা করে অন্য কোনো মায়ের বুক খালি করবে, সন্তান হবে বাবা হারা, স্রী হবে স্বামী ছাড়া। পলাতক আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে লাগাতার আন্দোলন চলবে।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর সন্ধ্যায় যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইয়াছিন আরাফাত শাওন ও তার কর্মীরা তিনটি হাইয়েজ গাড়ি দিয়ে ময়মনসিংহ শহরে ফিরছিল। পথে নগরীর চায়না মোড়ের টুলবক্স এলাকা পর্যন্ত আসতেই একটি ট্রাকের পেছনে আটকা পড়ে হায়েজ। ওই ট্রাকটি সাইড না দেয়ায় ওভারটেকের সময় হাইয়েজ গাড়িতে ঘষা লাগে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গাড়িতে থাকা ট্রাকচালকের সাথে তর্কে জড়ান শাওন ও তার কর্মীরা।

একপর্যায়ে ট্রাকচালককে মারধর শুরু করেন। এসময় স্থানীয় বাসচালকসহ অন্যরা তাদের থামাতে গেলে ক্ষিপ্ত হয়ে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে আব্দুর রাজ্জাক রাকিব, সাদেক আলী, শহিদ মিয়া নামে তিনজন রক্তাক্ত জখম হন। এ অবস্থায় আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক আব্দুর রাজ্জাক রাকিবকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে রাকিব হত্যার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাতেই স্থানীয়রা চায়না মোড়ে সড়ক অবরোধ করে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়। পরে রাত ১১টার দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং একজনকে আটক করে পরদিন আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

এঘটনায় পরদিন নিহতের মা হাসি বেগম মহানগর যুবলীগের বহিষ্কৃত সদস্য শাওনসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাভারের আমিনবাজার থেকে মামলার প্রধান আসামি ইয়াছিন আরাফাত শাওন তার ভাই মাসুদ পারভেজসহ আনিছুর রহমান ফারুক, মো. মানিক, মো. মবিন ও মো. শান্তকে গ্রেফতার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন শুক্রবার ভোরে ত্রিশালের উজানভাটিপাড়া এলাকা থেকে ইয়াছিন আরাফাত শাওনের ছোট ভাই মো. প্রান্ত ও মো. রাহাত নামের আরেকজনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গ্রেফতার হওয়া ইয়াছিন আরাফাত শাওনের বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা, মাসুদ পারভেজের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা, আনিছুর রহমান ফারুকের বিরুদ্ধে ২টি মামলা, মানিক মিয়ার বিরুদ্ধে ৫টি মামলা, মো. মমিন ও মো. শান্তর বিরুদ্ধে ৩টি করে মামলা রয়েছে।

গ্রেফতারের পর গত শুক্রবার বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ নম্বর আমলী আদালতের ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অন্য দুই আসামিরও সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পলাতক অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।