বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজিতে (আই.এইচ.টি) দুই গ্রুপ শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজনার বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অপরাধে ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া ৮ শিক্ষার্থীকে ছাত্রাবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে ইনস্টিটিউট অব হেলথ্ টেকনোলজিতে (আই.এইচ.টি) অধ্যক্ষ ডা. মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বহিষ্কৃত ৮ শিক্ষার্থীকে হোস্টেল ত্যাগ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট এবং তাদের সুপারিশের প্রেক্ষিতে অ্যাকাডেমিক বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ছাত্রাবাস এলাকায় পুলিশি নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ছাত্রত্ব স্থগিত হওয়া শিক্ষার্থী মো. সাজ্জাদ হোসেন আই.এইচ.টি’র রেডিওগ্রাফি অনুষদের ২য় বর্ষের ছাত্র। তার বিরুদ্ধে মাদক সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত কমিটি। এজন্য তাকে মাদকাসক্ত নিরাময়কেন্দ্রে চিকিৎসা গ্রহণপূর্বক সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার ছাত্রত্ব স্থগিত করা হয়েছে।
এছাড়া ফিজিওথেরাপি অনুষদের ২য় বর্ষের ছাত্র মহিনউদ্দিন, ল্যাবরেটরী অনুষদের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র নাবিল মোস্তফা, ডেন্টাল তৃতীয় বর্ষের জোবায়েদ আলম অরিদ, একই অনুষদের মো. সাব্বির আহম্মেদ, ফার্মেসি তৃতীয় বর্ষের মো. মুকিম আলম, দ্বিতীয় বর্ষের মো. রাইসুল ইসলাম, ফিজিওথেরাপি তৃতীয় বর্ষের এসএম সাহিবুল ইসলাম উজ্জ্বল ও দ্বিতীয় বর্ষের মো. বেল্লাল এবং রেডিওগ্রাফি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. ফয়সাল আলম সুজাকে সতর্ক করা হয়েছে।
অধ্যক্ষ ডা. মানষ কৃষ্ণ কুন্ডু জানান, গত ১০ নভেম্বর বরিশাল আই.এইচ.টি শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এ ঘটনায় চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গত ২১ নভেম্বর দোষীদের শাস্তির সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। সে অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এদিকে, ১০ জনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের প্রতি ধন্যবাদ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা ভবিষ্যতে মাদক এবং বহিরাগত মুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস বাস্তবায়নের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ৬ দফা দাবি আদায়ে ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি (আইএইচটি) বরিশালের শিক্ষার্থীরা কিছুদিন ধরে কর্মসূচি পালন করে আসছে। তবে সম্প্রতি সিনিয়র ব্যাচের কয়েকজন শিক্ষার্থী কর্মসূচিতে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে নানান কথা বলা শুরু করেন, কিন্তু যারা এগুলো করছিলেন তাদের শুরু থেকে কর্মসূচির সাথে দেখা যায়নি। আর এ নিয়ে জুনিয়র শিক্ষার্থীরা আলোচনা করায় শুক্রবার (১০ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা। এরপর পর্যায়ক্রমে হলের ভেতরে থাকা জুনিয়র শিক্ষার্থীদের খুঁজে খুঁজে মারধর করে নাবিলসহ তৃতীয় বর্ষের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী।