মাছের খাবার তৈরি করে স্বাবলম্বী কৃষক

  • আব্দুস সালাম আরিফ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, পটুয়াখালী, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মাছের খাবার তৈরি করে স্বাবলম্বী কৃষক। ছবি: বার্তা২৪.কম

মাছের খাবার তৈরি করে স্বাবলম্বী কৃষক। ছবি: বার্তা২৪.কম

বাড়িতে বসে মাছের খাবার তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছে পটুয়াখালীর অনেক কৃষক। নিজেদের হাতে খাবার তৈরি করায় পুকুরে মাছ চাষ করতে তাদের খরচও কম হচ্ছে।

জানা গেছে, পটুয়াখালীসহ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা সাধারণত ছোট পরিসরে বসতবাড়ির পুকুরে মাছ চাষ করে থাকে। তবে আগে মাছ চাষ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং মাছের প্রয়োজনীয় খাবার সম্পর্কে ধারণা না থাকায় সফলতা অর্জন করতে পারত না তারা। এ কারণে অনেক বাড়ির আশপাশের পুকুর কিংবা ডোবা পরিত্যক্ত অবস্থায়ও পড়ে থাকত।

বিজ্ঞাপন

এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উপকূলের কৃষকদের মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লুগোল্ড-ইনোভিশন একটি প্রকল্প হাতে নেয়।

পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ৩০ জন কৃষককে তারা বাছাই করে মাছ চাষের উপর একদিনের প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। এরপর পুকুর প্রস্তুত করে পাঙ্গাস ও অনান্য মাছের মিশ্র চাষ শুরু করা হয়। প্রকল্পের পক্ষ থেকে জেলেদের প্রয়োজনীয় মাছের পোনাও সরবরাহ করা হয়। এছাড়া মাছের জন্য ভালো মানের খাবার তৈরি করতে প্রকল্পের পক্ষ থেকে কৃষকদের মেশিনও দেয়া হয়। বর্তমানে কৃষকরা স্থানীয় বাজার থেকে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান ক্রয় করে বাড়িতে মাছের খাবার তৈরি করে পুকুরে তা সরবরাহ করছে।

বিজ্ঞাপন

কলাপাড়া উপজেলার বালিয়াতলী ইউনিয়নের মুসুল্লিবাদ এলাকার কৃষক আব্দুল আজিজ পুকুরে মাছ চাষ করেন। পাশাপাশি তিনি নিজেই মাছের খাবার তৈরি করেন। ব্লুগোল্ড প্রকল্পের পক্ষ থেকে তাকে একটি মেশিন সরবরাহ করা হয়।

আব্দুল জলিল জানান, স্থানীয় বাজার থেকে মাছের শুঁটকি, ভুসি, ময়দা, আটা, খৈল, রাইসপলি, ডিসিপি এবং লবণ ক্রয় করে তা পরিমাণ মতো মিশ্রণ করা হয়। এসব মিশ্রণ প্রথমে মেশিনে চূর্ণবিচূর্ণ করতে হয়। পরে তাতে পরিমাণ মতো পানি মিশ্রণ করে আবারো মেশিনে দিয়ে সেটি নির্দিষ্ট একটি আকৃতিতে তৈরি করা হয়। পরে সেটি রোদে শুকিয়ে মজুত করা হয়। এগুলো পুকুকে মাছের খাবার হিসেবে দেয়া হয়। অনেকে আবার বিক্রিও করে। স্থানীয় বাজারে তা ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়ে থাকে।

ব্লুগোল্ড-ইনোভিশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এমিএম সামসুদ্দিন জানান, পরিত্যক্ত পুকুর কিংবা ডোবা ব্যবহার করেও যে ভালো আয় করা যায় এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের সেই বিষয়টি হাতে কলমে দেখানো হয়েছে। এর ফলে কৃষকরা যেমন বাড়তি আয় করে স্বাবলম্বী হতে পারছে, তেমনি এ অঞ্চলে এখন বাণিজ্যিক ভাবে মাছ চাষও বৃদ্ধি পাচ্ছে।