কক্সবাজার সৈকতে একদিনে ভেসে এল ২৪ মৃত মা কাছিম
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে একদিনে ভেসে এসেছে ২৪ টি মৃত মা কাছিম। ভেসে আসা মৃত মা কাছিমগুলো অলিভ রিডলি প্রজাতির। কচ্ছপগুলোকে ডিসেকশন করে পেটে ডিম পেয়েছে বিজ্ঞানীরা।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারী) কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভ সড়কের সোনারপাড়া থেকে টেকনাফ সৈকত ও সোনাদিয়া উপকূলে কাছিমগুলো ভেসে আসে। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বোরি) বিজ্ঞানীরা আজ সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সরেজমিনে পরিদর্শন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
বিষয়টি বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইন্সটিটিউটের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, "আজ সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০৮ মিনিট পর্যন্ত কক্সবাজারের বিভিন্ন সৈকতে মোট ২৪টি মৃত কাছিম পেয়েছি এবং সেগুলো বালুতে পুতে/চাপা দিয়েছি। কাছিমগুলো ডিসেকশন করে ডিম পাওয়া গেছে। সমুদ্রে এভাবে প্রজনন মৌসুমে মৃত মা কাছিম ভেসে আসাটা খুবই উদ্বেগের"।
বোরির এই জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে গভীর সাগর পাড়ি দিয়ে অলিভ রিডলি মা কাছিম ডিম পাড়তে আসে। এ সময় তারা প্রজনন ক্ষেত্রে আসার পথে জালে আটকা পড়ে বা অন্য কোনোভাবে আঘাত পেয়ে মারা পড়ছে। উদ্ধার করা অধিকাংশ কচ্ছপের শরীরে জাল ও রশি প্যাঁচানো রয়েছে।
তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, এই মৌসুমে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৭৬টি অলিভ রিডলি স্ত্রী কচ্ছপ থেকে ৯ হাজার ১০৭টি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব ডিম সৈকতের প্রাকৃতিক হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে এক সপ্তাহ ধরে নতুন করে কোনো কচ্ছপ ডিম দেয়নি।
বোরির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তৌহিদা রশীদ বলেন, ভেসে আসা সামুদ্রিক প্রাণীর মৃতদেহের নমুনা সংগ্রহ করে কারণ অনুসন্ধানে কাজ করছেন বিজ্ঞানীরা। এসব প্রাণীর বিচরণ ও বাসস্থানে কোনো বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে কি না–তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এর আগে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার একই সমুদ্র উপকূলে আরও ১৫টি মৃত স্ত্রী কচ্ছপ ভেসে এসেছে। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত ৮৩টি সামুদ্রিক মৃত স্ত্রী কচ্ছপ ভেসে আসার তথ্য জানিয়েছেন বোরির বিজ্ঞানীরা।