অনলাইনে আয়ের প্রলোভনে প্রতারণা, নারী গ্রেফতার
অনলাইনে পার্টটাইম চাকুরীর অফারসহ অনলাইন মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করার লোভনীয় অফারে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের সদস্য ইরিন মেহজাবিন (৩৯) কে গ্রেফতার করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।
শনিবার (২ মার্চ) দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে ডিএমপি'র রামপুরা থানার ২২ নং ওয়ার্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার মিডিয়া অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস উইং ব্যারিস্টার মাহফুজুল আলম রাসেল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মাহফুজুল আলম রাসেল বলেন, এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ) এর একটি আভিযানিক দল অনলাইনে পার্টটাইম চাকুরীর অফারসহ অনলাইন মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করার লোভনীয় অফার দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া প্রতারক চক্রের ১ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত আসামির কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১টি মোবাইল ফোন ও ৪টি সিমকার্ড জব্দ করা হয়েছে।
ঘটনার বিবরণ জানিয়ে তিনি বলেন, ইমফর্ম এটিইউ (Inform ATU) অ্যাপের মাধ্যমে মো. সাব্বির শেখ নামে প্রতারণার শিকার একজন ব্যক্তির করা অভিযোগ মতে, গত ১৯ নভেম্বর, তার ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে একটি ভিডিও দেখার সময় এমাজন কোম্পানির একটি বিজ্ঞপ্তি আসে। যেখানে পার্টটাইম চাকুরীর অফারসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের অনলাইন মার্কেটিং এর অফার দেয়া ছিল। অভিযোগকারী বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া একটি লিংক এ ক্লিক করলে, প্রতারকরা তাকে হোয়াট্সঅ্যাপে অ্যাড করে ম্যাসেজের মাধ্যমে অনলাইনে জব দিবে বলে। তাকে তাদের পাঠানো লিংকে ক্লিক করতে বলে। অভিযোগকারী উক্ত লিংকে ক্লিক করলে একটি পেইজ আসে। পেইজের বিভিন্ন অপশনে তার নাম, মোবাইল নম্বর, জিমেইল একাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি একাউন্ট করতে বলা হয়। অভিযোগকারী তার ব্যক্তিগত তথ্যাদি দিয়ে একাউন্ট খুলে লগইন করার পর সেখানে ছোট বাচ্চাদের জুতা, কলম, চার্জারের কর্ড, আইফোন চার্জার, ইলেকট্রিক পণ্য, ল্যাপটপ, মার্কার পেন, মেডিসিন পাউডার ইত্যাদি পণ্য মার্কেটিং করে প্রচুর টাকা ইনকাম করার লোভনীয় অফার দেখতে পান।
তিনি বলেন, প্রতারকেরা প্রথমে অভিযোগকারীকে ৩০০ টাকা বিকাশে সেন্ড মানি করতে বলে। অভিযোগকারী সরল বিশ্বাসে টাকা পাঠালে তাকে বিভিন্ন অনলাইন ভিত্তিক কাজ যেমন- কলম, বাচ্চাদের জুতা, ইলেকট্রিক পণ্য-চার্জারের কর্ড, চার্জার কেবল, মেডিসিন পাউডার ইত্যাদি তাদের দেয়া বিভিন্ন অপশনে যেয়ে মার্কেটিং করার জন্য বলে এবং এই কাজের লভ্যাংশ হিসেবে অভিযোগকারীর একাউন্টে ২ হাজার ৩০০ টাকা দেয়, যা শুধুমাত্র অভিযোগকারীর একাউন্টের ব্যালান্স অপশনে দেখা যেত। পরবর্তীতে, প্রতারকেরা অভিযোগকারীকে টেলিগ্রামে যুক্ত করে নেয় এবং তার বিশ্বাস অর্জনের জন্য তার বিকাশে লভ্যাংশের ১ হাজার টাকা পাঠায়। এভাবে, লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে প্রতারকেরা অভিযোগকারীর কাছ থেকে কয়েকধাপে প্রায় ৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
তিনি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এটিইউ'র সাইবার ক্রাইম উইং তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং সংক্রান্তে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি/ব্যক্তিদের আসামি করে গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু হয়। আসামি শনাক্ত ও গ্রেফতার সংক্রান্তে মুকসুদপুর থানা অধিযাচনপত্র পাঠানো হলে এটিইউ প্রতারক চক্রের সদস্য ইরিন মেহজাবিনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামির বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।