৩ সন্তানকে নিয়ে যাবো কোথায়, প্রশ্ন সীমান্তে নিহত আনোয়ারের স্ত্রীর
পরিবারের একমাত্র ভরসা উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে দিশেহারা সীমান্ত সংঘাতে নিহত আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম। পাশাপাশি অনিশ্চিত তিন সন্তানের ভবিষ্যত। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে যেন আকাশ ভেঙে পড়েছে তার ওপর। তিন সন্তান নিয়ে দিশেহারা এই নারী জানেন না, সন্তানদের ভবিষ্যত কী হবে! দুই মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে এখন দুর্বিষহভাবে কাটছে এই নারীর জীবন।
বেসরকারি এক সংস্থার অনুদানে পাওয়া জীর্ণ-শীর্ণ ঘরটাই আনোয়ারের রেখে যাওয়া একমাত্র অবলম্বন। পরের ঘরে কাজ করে দিন এনে দিন খাওয়া তার স্ত্রীর চোখে-মুখে ঘোর অন্ধকার! জানেন না, সন্তানদের নিয়ে কীভাবে কাটবে তার জীবন! ঘটনাটি কক্সবাজার জেলার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন উখিয়ার রহমতের বিল এলাকার। ৬ ফেব্রুয়ারি সেখানে কৃষি কাজ করতে গেলে সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে আনোয়ারুল ইসলাম (৩৫) মারা যান। তিনি ওই এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে।
আনোয়ারুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম কেঁদে কেঁদে বার্তা২৪.কম-কে বলেন, 'আমার সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে। কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতেন আনোয়ার। প্রতিদিনের মতো কৃষি জমিতে কাজ করতে গিয়ে গুলিতে আহত হয়েছিলেন। এখন তিনি আর নেই! আমরা কীভাবে খাবো! আমি তিন সন্তানকে নিয়ে কোথায় যাবো! তিনি একদিন আয় করতে পারলে খেতে পারতাম! একদিন না করলে পারতাম না। এখন আমাদের কী হবে'!
৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন রহমতের বিল কৃষি জমিতে কাজে গিয়েছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম। সেসময় চলা সীমান্তের অস্থিরতায় অনুপ্রবেশকারী এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীর আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে গত একমাস ধরে আনোয়ারুল ইসলাম কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) রাতে পরিবারের ভরসাস্থল শূন্য মারা যান আনোয়ারুল।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আনোয়ারুল ইসলাম স্বল্পভাষী ও নমনীয় স্বভাবের একজন ভালো মানুষ ছিলেন। তার অকাল মৃত্যুতে শোকাহত স্বজন ও এলাকাবাসীরাও চিন্তিত দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারটি নিয়ে।
পালংখলী ইউনিয়ন পরিষদের ৩ নম্বর ওয়ার্ড রহমতের বিলের ইউপি সদস্য আলতাছ আহমেদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, বিষয়টি খুবই মর্মান্তিক! তিন সন্তানকে নিয়ে ওই পরিবারের ভবিষ্যত এখন অনিশ্চিত। চেয়ারম্যান সাহেবের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সহযোগিতা করা হবে তাদের।
সরকারি-বেসরকারি পর্যায় থেকে সহায়তাসহ সহৃদয় কারো সহায়তা পেলে বেঁচে থাকার পথ খুঁজে পাবে এই হতবিহ্বল পরিবার, এমনটাই আশা স্থানীয়দের।