জিম্মি জাহাজটি আরও ৪৫-৫০ নটিক্যাল মাইল উত্তরে সরিয়ে নিয়েছে দস্যুরা
২৩ নাবিকসহ জিম্মি বাংলাদেশি জাহাজটি নিজেদের উপকূলে নেওয়ার পরও বারবার অবস্থান পরিবর্তন করছে সোমালিয়ান জলদস্যুরা।
প্রথমে বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) বেলা ১টায় জাহাজটিকে সোমালিয়ার গ্যারাকাদ উপকূল থেকে ২০ নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটিকে নোঙর করেছিল দস্যুরা। এরপর সন্ধ্যার থেকে উপকূলের আরও কাছে নিয়ে মাত্র ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়। এবার সেখান থেকেও নোঙর তুলে জাহাজটিকে আরেক এলাকায় সরিয়ে নিয়েছে জলদস্যুরা।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে জাহাজটিকে আগের অবস্থান থেকে সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় জাহাজের মালিকপক্ষ। ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম ব্যুরোর বরাতে জাহাজটি সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনও।
শুক্রবার রাত ৮টা ১০ মিনিটে অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ‘জাহাজটি গতকালের অবস্থান থেকে প্রায় ৪৫-৫০ মাইল উত্তরের দিকে সরিয়ে নিয়েছে দস্যুরা। এখন সোমালিয়ার গোদবজিরান উপকূল থেকে প্রায় ৪ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করা হয়েছে। জলদস্যুদের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত মালিকপক্ষের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি।’
এমভি আব্দুল্লাহ নামের জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলামও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলের অন্য জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তবে নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন।
ধারণা করা হচ্ছে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ টিকিয়ে রাখতে বারবার জাহাজের অবস্থান বদলাচ্ছে জলদস্যুরা। কেননা জিম্মি জাহাজটিকে উদ্ধারে দুটি বড় ফ্রিগেট (যুদ্ধজাহাজ) গিয়েছিল। সেখান থেকে ফাঁকা গুলি এবং হেলিকপ্টারে জিম্মি জাহাজের উপরে রাউন্ডও দেওয়া হয়। এই কারণে জলদস্যুরা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টায় জাহাজটিতে উঠে নিয়ন্ত্রণ নেয় সোমালিয়ার জলদস্যুরা। জাহাজটিতে ৫৫ হাজার টন কয়লা রয়েছে। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিকের সবাই বাংলাদেশি। পরে জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যায় জলদস্যুরা। জাহাজ জিম্মি করার তিনদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত দাবি-দাওয়া বা মুক্তিপণের বিষয়ে জলদস্যুদের পক্ষ থেকে মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি।