এমপি ভাইয়ের কথাও শুনছেন না উপজেলা প্রার্থী

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অমান্য করে প্রার্থী হয়েছেন জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ এর আপন ভাই নজরুল ইসলাম সাত্তার। তবে ভাইকে অনুরোধ করেও নির্বাচন থেকে সরাতে পারেননি বলে প্রধানমন্ত্রী বরাবর চিঠি দিয়েছেন এ সংসদ সদস্য।

উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি সহ বিরোধী পক্ষের বর্জনের মুখে একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জন্য এবার নৌকা দেয়নি আওয়ামী লীগ। সেই সাথে মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ যেন না করে সে জন্যও দেয়া হয়েছে নির্দেশনা। তবে অনেক ক্ষেত্রেই মানা হয়নি নির্দেশনা। প্রার্থী হয়েছেন স্বজনরা।

বিজ্ঞাপন

আওয়ামী লীগের এমন কড়া নির্দেশনায়ও কর্ণপাত করেননি নজরুল ইসলাম সাত্তার। তবে তিনি তার নির্বাচনে দাঁড়ানোর কারণ হিসেবে বলছেন, তিনি বর্তমানে দলের কোনো পদে নেই। যদিও তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

নির্বাচনে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অমান্য করছেন কি না জানতে চাইলে নজরুল ইসলাম সাত্তার বার্তা২৪.কম কে বলেন, 'আমি দলের কোনো পদে নাই। তাহলে কেন নির্বাচন করতে পারবো না? আমার সংসার (সংসদ সদস্যের সঙ্গে তিনি থাকেন না) আলাদা। আমি এর আগে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম। তবে এই বিষয়ে ফোনে এর বেশি কিছু বলতে পারবো না। আরও কিছু জানতে হলে সরাসরি আসেন।'

বিজ্ঞাপন

দলের নির্দেশনা অমান্য করে ভাইয়ের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অনেকটায় অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন জামালপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ। বার্তা২৪.কম কে তিনি বলেন, 'সে (নজরুল ইসলাম সাত্তার) আমার কথা শোনে না। আমি এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরখাস্ত দিয়ে বলে দিয়েছি।'

স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেকেই অভিযোগ করছেন, ভাই না চাইলেও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ভরসায় তিনি দাঁড়িয়েছেন নির্বাচনে। স্থানীয় উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. রাজন মিয়ার নেতৃত্বে চলছে এই প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা। তার সঙ্গে যোগ হয়েছেন, উপজেলার ছাত্রত্বহীন ছাত্রলীগ নেতারা, রয়েছেন বিবাহিত ছাত্রলীগ নেতা ও বিভিন্ন সময় বিতর্কিতরা।

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ কর্মীদের বাধ্য হয়ে মো. রাজন মিয়াকে অনুসরণ করতে হচ্ছে। প্রচারণায় না আসলে দেখানো হচ্ছে কমিটিতে না রাখার ভয়ভীতি। তাই পদ-পদবীর আসায় অনেক কেই অনিচ্ছা সত্ত্বেও থাকতে হচ্ছে নির্বাচনী প্রচারণায়।

জানা যায়, উপজেলার অন্তর্গত আটটি ইউনিয়ন রয়েছে। এর মধ্যে একটি ইউনিয়নের কমিটি এরইমধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি আছে আরও ৭টি। এসব ইউনিয়নে যারা ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী তাদেরকে পদের লোভ দেখিয়ে ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারণায় কাজে লাগানো হচ্ছে৷

পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের একজন স্থানীয় কর্মী বলেন, 'আমাদের বলা হয়েছে সাত্তার সাহেবের পক্ষে প্রচারণা করতে। নইলে আমাদের পদ দিবে না। তারা আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে বসে আছে দুই বছরের বেশি সময় ধরে৷ আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ থাকে তিনি মাস। আবার সেই কমিটির ১২ জন বিবাহিত। একেকজনের নামে বিভিন্ন ধরণের অভিযোগ। তারপরও সেন্ট্রাল তাদেরকে কিছু বলে না। আমরা বলতে গেলে তো আমরা বিপদে পরবো। তাই বাধ্য হয়েই তাদের নির্দেশ মানতেছি।'

এ বিষয়ে কথা বলতে বকশীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মো. রাজন মিয়াকে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এবিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'আমি এ বিষয়ে এখনো জানি না। আমি খোঁজ নিবো।'