মহাস্থানগড়ে সাধু-সন্ন্যাসী ও বাউলদের মিলনমেলা

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

সাধু-সন্ন্যাসী ও বাউলদের উপস্থিতিতে জমে উঠেছে বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ের বৈশাখী উৎসব ও পুণ্যার্থী মেলা। মহাস্থানগড় হজরত শাহ সুলতান বলখীর (র.) মাজার এলাকায় প্রতিবছরের মতো এবারও বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার সাধু-সন্ন্যাসী আর পুণ্যার্থীদের ঢল নেমেছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) বাউলদের জারি–সারি আর মারফতি গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে এবারের উৎসব। বৃহস্পতিবার মেলার দিন হলেও এক সপ্তাহ আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাধু-সন্ন্যাসী ও পুণ্যার্থীরা এখানে এসে আস্তানা গেরেছেন। মেলায় বসেছে মিষ্টান্ন আর নানা প্রকার খেলনা ও প্রসাধনের পসরা। এছাড়া মহাস্থানের প্রসিদ্ধ কটকটির দোকানগুলো সেজেছে নতুন সাজে।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার মহাস্থানগড়ে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। মেলার কয়েক দিন আগে থেকেই মহাস্থানগড়সহ আশপাশের এলাকায় উৎসবের ধুম পড়ে যায়। মেলা উপলক্ষে এ এলাকার বাড়ি বাড়ি অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়।

মহাস্থানগড় এলাকার বাসিন্দা গফুর জানান, ঐতিহাসিক এই উৎসবের গোড়াপত্তন সর্ম্পকে কারও সঠিক ধারণা নেই। তবে বংশপরম্পরায় কয়েক শ বছর ধরে এখানে বার্ষিক উৎসব আয়োজন হয়ে আসছে।

বিজ্ঞাপন

লোকমুখে শোনা যায়, মহাস্থানগড়ের এই মাজারে বসেই ইংরেজদের হটাতে ফকির বিদ্রোহ পরিচালনা করেছিলেন ফকির মজনু শাহ। একপর্যায়ে তিনি বিজয়ীও হয়েছিলেন। ইংরেজদের বিরুদ্ধে ফকিরি বিদ্রোহকে স্মরণীয় করে রাখতেই বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার এই উৎসব আয়োজন হয়ে আসছে। এ কারণেই উৎসবে শত শত ফকির-সন্ন্যাসীদের আগমন ঘটে। এটা আসলে ফকির-সন্ন্যাসীদের মেলা।

মাজার এলাকায় অবস্থিত নাসির কটকটি ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মো. রঞ্জু ইসলাম জানান, মেলা উপলক্ষে প্রচুর বেচা বিক্রি হচ্ছে। গত বছর ৯০ মন বিক্রি করেছি। আশা করি, এবার এর থেকে বেশি হবে। মাজারের আশে পাশে অন্ততঃ দুইশো কটকটির দোকান রয়েছে। এসব দোকানে প্রতিবছর কোটি টাকার বেশি কটকটি বিক্রি হয় ।

মহাস্থান মাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার জানান, মহাস্থান মাজারের এই মেলাটি শতশত বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মেলা সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠানের জন্য পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ নিরলস দায়িত্ব পালন করছে।