অটোরিকশাচালকদের তাণ্ডব: চার মামলায় আসামি ২৫০০

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীতে অটোরিকশা বন্ধের প্রতিবাদে গতকাল রোববার (১৯ মে) মিরপুরে রাস্তা অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন অটোরিকশা চালকরা। প্রতিবাদের আন্দোলন রূপ নেয় সংঘর্ষে। দফায় দফায় বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর, পুলিশ বক্সে আগুন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।

এসব অভিযোগে আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকদের বিরুদ্ধে তিন থানায় চারটি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি অটোরিকশা চালকদের।

বিজ্ঞাপন

পল্লবী থানায় দুটি, কামরুল থানায় একটি ও মিরপুর মডেল থানায় একটি পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, গতকাল রোববার (১৯ মে) দিবাগত রাতে মিরপুরের পল্লবী থানায় মামলা দুটি দায়ের করা হয়। একটি মামলা পল্লবী থানা পুলিশ ও আরেকটি মামলা পল্লবী ট্রাফিক জোন থেকে দায়ের করা হয়।

অন্যদিকে কাফরুল থানা ও মিরপুর মডেল থানায় পৃথক দুটি মামলা পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে। গতকাল দিনভর আন্দোলন অবরোধের নামে পুলিশের কাজে বাধা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ, নাশকতা ও পুলিশের ওপরে হামলার ঘটনায় এসব মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এসব মামলায় চার থানায় পৃথক অভিযানে ৩৭ জন অটোরিকশা চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ডিসি।

ডিসি জসীম বলেন, গতকাল দুপুরের পর থেকে রাজধানীর কালশী এলাকায় তাণ্ডব চালায় অটোরিকশা চালকরা। তারা রাস্তাসহ কালশী ফ্লাইওভার অবরোধ করে রাখে। এক পর্যায়ে তারা বিকেলের দিকে কালশীর রাস্তা অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন পরিবহনের একাধিক বাসে ভাঙচুর করেন। এছাড়া সর্বশেষ কালশী মোড়ে অবস্থিত ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন ধরিয়ে দেয় আন্দোলনরত অটোরিকশা চালকরা।

যে বা যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও নাশকতার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।

পল্লবী থানায় দায়ের করা দুটি মামলার নথি দেখা গেছে, পল্লবী থানার পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদী এসআই মোহাম্মদ আলী। দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনী জনতাবন্ধে দাঙ্গা সৃষ্টি, সরকারী কর্তব্য কাজে বাঁধাদানসহ পুলিশের ওপর আক্রমণ ও অপরাধমূলক বল প্রয়োগে সাধারণ ও গুরুতর জখম, ভাঙচুর করে জানমালের ক্ষতিসাধন, বিস্ফোরক দ্রব্যের বিস্ফোরণ ঘটানো এবং বিস্ফোরক দ্রব্য হেফাজতে রাখা ও সহায়তা করার অপরাধ। মামলায় ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

মামলায় উল্লেখিত অপরাধ কাজের জড়িত থাকা অভিযোগে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ১০০০ থেকে ১২০০ জনকে।

অন্যদিকে একই থানায় ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের পল্লবী জোনাল টিম এর পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার বাদি সার্জেন্ট মিন্টু চন্দ্র দে। অন্য মামলার ন্যায় এই মামলাতেও একই অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতি হয়েছে ৫ লাখ টাকা। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে।

পল্লবী থানার ওসি অপূর্ব হাসান বলেন, পল্লবী থানায় দায়ের করা পৃথক দুই মামলায় ১৫ অটোরিকশা চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখিত ও অজ্ঞাত পলাতক আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মিরপুর মডেল থানার ওসি মুন্সির সাব্বির আহমেদ বলেন, দায়ের করা মামলা এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হামলা ভাঙচুর অগ্নিসংযোগ পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধার সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।

কাফরুল থানার ওসি ফারুকুল আলম জানান, কাফরুল থানায় দায়ের করা মামলায় ৬০০/৭০০ জন অজ্ঞাতকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার ১২ জন। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, নাশকতা পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা, ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় অন্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত।

এ দিকে বেলা ১১টা থেকে মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেও কোনো অটোরিকশার দেখা মেলে নি। তবে পায়ের রিকশা ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চললাম করছে।