ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। বেশ কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে এটিকে 'হত্যাকাণ্ড' বলছেন তাঁরা। যদিও তাঁর মরদেহ এখনো উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
বুধবার (২২ মে) এই ঘটনা নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ।
ওই সংবাদ সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের মহাপরিদর্শক (সিআইডি) অখিলেশ চতুর্বেদী বলেছেন, বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের মরদেহ এখনো পায়নি পুলিশ। তবে কিছু প্রমাণের ভিত্তিতে তাঁরা মনে করছেন যে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) হাতে নিয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা কিছু সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়েছি, যার ভিত্তিতে মনে করা হচ্ছে যে ওনাকে হত্যা করা হয়েছে।’
পশ্চিমবঙ্গ সিআইডির প্রধান জানান, পূর্ব কলকাতার নিউ টাউন অঞ্চলে যে ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীম উঠেছিলেন, সেটি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আবগারি দপ্তরের কর্মকর্তা সন্দীপ কুমার রায়ের। সন্দীপের কাছ থেকে ফ্ল্যাটটি ভাড়া নিয়েছিলেন আখতারুজ্জামান নামের এক ব্যক্তি। আখতারুজ্জামানই ওই ফ্ল্যাটে আনোয়ারুল আজীমের থাকার ব্যবস্থা করেছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রহস্য উদঘাটনে কলকাতার নিউ টাউনের অভিজাত আবাসিক এলাকা সঞ্জীবনী গার্ডেনের ওই ফ্ল্যাটে আজ তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।
তল্লাশি চালিয়ে ওই ফ্ল্যাট থেকে কিছু পাওয়া গেছে কি না বা কোন রক্তের চিহ্ন শনাক্ত করা হয়েছে কি না সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি এই কর্মকর্তা।
এ নিয়ে পুলিশের ফরেনসিক বিভাগ কাজ শুরু করেছে। তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আনোয়ারুল আজীমের সঙ্গে কয়েকজন ব্যক্তি এই ফ্ল্যাটে এসেছিলেন জানিয়ে অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘কিন্তু তাঁরা কবে বেরিয়ে গেলেন, সে বিষয়ে আমরা তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলতে পারছি না। এটুকু বোঝা যাচ্ছে যে ১৩ মে উনি এখানে এসেছিলেন। তবে তার আগেও এসেছিলেন কি না, সেটা আমরা এখনো জানি না।’
আনোয়ারুল আজীমকে হত্যা করে দেহ খণ্ড খণ্ড করে ফেলা হয়েছে কি না, সে বিষয়েও কিছু বলতে চাননি সিআইডি কর্মকর্তা অখিলেশ চতুর্বেদী।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে আনোয়ারুল আজিম চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান। ১৮ মে কলকাতায় তার পরিচিত গোপাল বিশ্বাস পুলিশে একটি ডায়েরি করেন। সেখানে বলা হয়, আনোয়ারুল ১৩ মে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর আর ফেরেননি। তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন, বিশেষ কাজে দিল্লি যাচ্ছেন। ১৫ মে তিনি মেসেজ করে জানান, দিল্লিতে আছেন। ১৭ তারিখ থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার গোপাল বিশ্বাসকে উদ্ধৃত করে কিছু গণমাধ্যম জানায় যে, পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হয়েছে, কলকাতার একটি ফ্ল্যাট থেকে পুলিশ আনোয়ারুল আজিমের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ কেটে পালানো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার কয়েদীই ভয়ঙ্কর খুনি। তাদের মধ্যে একজন স্কুলছাত্র অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করেও সেই ছাত্রকে ভাটার আগুনে পুড়িয়ে হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্ত, অপরজন এক তরুণকে সুলপি (সুচালো অস্ত্র) দিয়ে খুুঁচিয়ে হত্যায় সাজাপ্রাপ্ত এবং অন্য দু’জন ডাকাতি করতে গিয়ে একই পরিবারের চারজনকে কুপিয়ে হত্যায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বগুড়া জেলা কারাগার ও সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
পলাতক ওই চার কয়েদীর মধ্যে অন্যতম মো. জাকারিয়া (৩৪)। তিনি বগুড়ার কাহালু উপজেলার উলট্ট গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতা আব্দুল মান্নান বর্তমানে কাহালু পৌরসভার মেয়র এবং কাহালু উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। জাকারিয়া নামের এই কয়েদী ২০১২ সালের এক স্কুলছাত্রকে অপহরণ করে। নাইমুল ইসলাম নাইম (১৩) নামের ওই স্কুলছাত্র কাহালু উপজেলার রুস্তমচাপড় গ্রামের রফিকুল ইসলাম তালুকদারের ছেলে। নাঈম কাহালু পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিলো। ২০১২ সালের ৫ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহৃত হয় নাইম।
এ ঘটনায় নাইমের বাবার দায়ের করা মামলা সূত্রে জানা যায়, অপহরণকারীরা তাকে আটকে রেখে মুক্তিপণ হিসেবে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। চার দিনের মাথায় ৯ এপ্রিল মুক্তিপণের পাঁচ লাখ টাকা দেওয়া হয় অপহরণকারিদের। কিন্তু তাকে মুক্তি না দিয়ে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার মরদেহ জাকারিয়ার বাবার ইটভাটার আগুনে ফেলে ভস্মীভূত করা হয়। নাইমের বাবা রফিকুল ইসলাম ১০ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ১১ ডিসেম্বর থানা পুলিশ ৬ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি আদালত মামলাটির রায় ঘোষণা করেন। রায়ে মো. জাকারিয়াসহ দু’জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড এবং অন্য আসামিদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।
পুলিশ জানায়, ২০১৭ সালে রায় ঘোষণা হলেও সেসময় পলাতক ছিল জাকারিয়া। এরপর গত বছরের ৬ জুলাই কাহালু উপজেলার উলট্ট বাজার থেকে জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তখন তাকে বগুড়া কারাগারে রাখা হলেও পরবর্তীতে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে গত বছরের ২৬ সেপ্টেম্বর পুণরায় বগুড়া কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাকে। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে একটি প্রতারণা মামলা এখনো চলমান।
জেলখানা থেকে পালানো কয়েদী ফরিদ শেখ (৩০) বগুড়া সদর উপজেলার কুটুরবাড়ি এলাকার ইসরাইল শেখ চাঁন মিয়ার ছেলে। ২০২৩ সালের ৮ নভেম্বর থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বগুড়া কারাগারে ছিলেন ফরিদ। তার মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, কুটুরবাড়ি এলাকায় জমিজমা নিয়ে চাঁন মিয়ার সাথে বাদশা শেখের বিরোধ চলছিল। ওই বিরোধের জের ধরে ২০১৯ সালের ৬ জুন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষকালে সেখানে আল আমিন নামে এক তরুণকে সুলপি (সুচালো অস্ত্র) দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে ফরিদ শেখ। ওই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় গত বছরের ৮ নভেম্বর তার মৃত্যুদণ্ডাদেশ ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। তখন থেকেই বগুড়া কারাগারে ছিলেন ফরিদ। তার বিরুদ্ধে বগুড়ার আদালতে মারপিট ও হত্যার হুমকির দু’টি মামলা এখনো চলমান।
পালিয়ে যাওয়া অপর দুই কয়েদী কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা এলাকার মৃত আজিজুল হকের ছেলে নজরুল ইসলাম মজনু ওরফে মঞ্জু (৬০) ও নরসিংদীর মাধবদী উপজেলার ফজরকান্দি এলাকার মৃত ইসরাফিল খাঁর ছেলে আমির হোসেন ওরফে আমির হামজা (৪১) একই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত। ২০১৪ সালে ভূরুঙ্গামারীর সীমান্তবর্তী দিয়াডাঙ্গা গ্রামে ডাকাতি ও চার খুনের মামলায় তাদের দু’জনের মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন আদালত।
ওই মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি রাতে দিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুলতান আহমেদ মণ্ডলের বাড়িতে হানা দেয় একদল ডাকাত। ওই বাড়ি থেকে মালামাল লুণ্ঠন করতে গিয়ে ডাকাত দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে গৃহকর্তা সুলতান মণ্ডল, তার স্ত্রী হাজেরা বেগম এবং তাদের দুই নাতনি রোমানা ও আনিকাকে কুপিয়ে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত সুলতান মণ্ডলের ছেলে হাফিজুর রহমানের দায়ের করা মামলায় মঞ্জু ও আমিরসহ ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পর থেকে তারা কারাগারে বন্দি। তবে গত বছরের ১৮ এপ্রিল কুড়িগ্রাম জেলা কারাগার থেকে মঞ্জুকে এবং চলতি বছরের ২৪ মে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে আমির হামজাকে বগুড়া জেলা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। তাদের দু’জনের নামে হত্যা, ডাকাতি, সরকারি কাজে বাধা দিয়ে মারপিট ও হত্যার হুমকি এবং অপহরণ করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে ৪টি মামলা বিচারাধীন।
বগুড়ার জেল সুপার আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ওই চার কয়েদীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা চলমান থাকায় আদালতে হাজিরার সুবিধার্থে তারা বগুড়া কারাগারে অবস্থান করছিলেন।
এই চার কয়েদী মঙ্গলবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত তিনটার দিকে কারাগারের কনডেম সেল থেকে পালিয়ে যায় এবং এক ঘন্টার মধ্যে পুলিশের হাতে ধরাও পড়েন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
যেভাবে এই চার কয়েদী ধরা পড়েন:
রাত সাড়ে ৩টার পর নদীতে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাছে অনেকগুলো কুকুর ঘেউ ঘেউ শুরু করে। এলাকার কয়েকজন যুবক সেখানে এগিয়ে গেলে দেখতে পান চারজন মানুষ নদীর হাঁটু পানিতে হামাগুড়ি দিয়ে তীরে ওঠার চেষ্টা করছেন। তাদের প্রত্যেকে সঙ্গে একটি করে ব্যাগ রয়েছে। চোর সন্দেহে চারজনকেই নদী থেকে তুলে এনে পাশের চাষী বাজারে নিয়ে যান। চারজন নিজেদের রাজমিস্ত্রি পরিচয় দিয়ে বলেন, ঠিকাদার তাদের মারপিট করে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। তারা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে এসেছেন।
তাদের অসংলগ্ন কথাবার্তা এবং একজনের পরনে কয়েদীর পায়জামা থাকায় সন্দেহ হয়। তাদের ব্যাগ তল্লাশি করে নগদ ৯ হাজার টাকা, ৭০ প্যাকেট সিগারেট, একটি স্টিলের পাত, একটি স্ক্রু ড্রাইভার এবং কয়েদির কাগজ পাওয়া যায়। একপর্যায়ে তারা নিজেদের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং জেলখানা থেকে পালানোর কথা স্বীকার করেন।
বগুড়া জেলা কারাগারের কনডেম সেলের ছাদ ফুটো করে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত এই চার কয়েদী পালানোর ঘটনায় তিন কারা রক্ষিকে সাময়িক বরখাস্ত ( সাসপেন্ড) করা হয়েছে। এছাড়াও অপর দুইজন কারারক্ষিকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বগুড়া জেলা কারাগারের জেল সুপার আনোয়ার হোসেন এতথ্য নিশ্চিত করেছেন। সাময়িক বরখাস্ত হওয়া তিন কারারক্ষী হলেন বগুড়া জেলা কারাগারের প্রধান কারারক্ষী দুলাল হোসেন, কারারক্ষী আব্দুল মতিন ও কারারক্ষী আরিফুল ইসলাম। এছাড়াও কারারক্ষী ফরিদুল ইসলাম হোসেনুজ্জামানকে কৈফিয়ত তলব করা হয়েছে।
এদিকে কারা অধিদফতর থেকে ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রংপুরে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১৩২০ জন
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
জাতীয়
রংপুরে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর জেলা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রংপুর জেলার মোট জনসংখ্যা ৩১ লক্ষ ৬৯ হাজার ৬১৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৯.৫০ শতাংশ এবং নারী ৫০.৫০ শতাংশ। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গকিলোমিটারে ১ হাজার ৩২০ জন। আর সাক্ষরতার হার ৭০.৭৩ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দুপুরে রংপুর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর জেলা রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. আবু জাফর।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়। তথ্য সংগ্রহে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় এই জনশুমারি ও গৃহগণনার রিপোর্ট অনেকাংশে নির্ভুল।
তথ্যকে শক্তি হিসাবে উল্লেখ করে মো. আবু জাফর বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন ও উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণে জনশুমারির তথ্যকে কাজে লাগাতে হবে। জনশুমারির তথ্যের উপর ভিত্তি করে সরকারি দপ্তরসমূহকে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে রংপুর বিভাগীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের যুগ্মপরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২-এর জেলা রিপোর্ট বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। তথ্যচিত্রে তিনি জনশুমারি ও গৃহগণনার তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতি, ডিজিটাল শুমারিতে ব্যবহৃত টেকনোলজি ও রংপুর জেলার জনমিতিক বৈশিষ্ট্য উপস্থাপন করেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর পরিচালক এইচ এম ফিরোজ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক ও এনজিও প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়াকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার ছেলেসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকেলে সদর উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের ভোলাইল শান্তিনগর এলাকায় এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সুরুজ মিয়া কাশীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অর্থবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
নিহতের ছেলের স্ত্রী চম্পা বলেন, সালাউদ্দিন সাল্লু ও তার বাহিনীর ৩০-৪০ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমার শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করে। তাকে বাঁচাতে গেলে আমার স্বামী জনিসহ ৩ জন আহত হয়। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূরে আজম জানান, বালু ও সিমেন্ট ব্যবসা নিয়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাল্লু ও তার বাহিনী হামলা ও ভাঙচুর চালায়। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা সুরুজ মিয়া ও তার ছেলেসহ চার জনকে কুপিয়ে জখম করে। সুরুজ মিয়া ঢাকা মেডিক্যাল হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। অন্য আহতরা হাসাপাতালে ভর্তি রয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
বহুল আলোচিত সাদেক অ্যাগ্রো’র ১৫ লাখ টাকার সেই ছাগল এখন ‘টক অব দ্য টাউন’!
ছাগলকাণ্ডে এরই মধ্যে এনবিআর (জাতীয় রাজস্ব বোর্ড) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের নামে-বেনামে সম্পদের তথ্য যেমন বেরিয়ে এসেছে; ঠিক তেমনিভাবে বেরিয়ে এসেছে, অবৈধভাবে খালের জমি দখল করে গড়ে ওঠা সাদেক অ্যাগ্রো'র নানা অনিয়মের তথ্যও।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে মোহাম্মদপুরে অবস্থিত সাদেক অ্যাগ্রো'তে গিয়ে দেখা যায়, অনেকটা অযত্নে অবহেলায় শুকিয়ে গেছে ১৫ লাখ টাকা দামের সেই ছাগলটি।
এছাড়া এদিনই সিটি করপোরেশনের অভিযানের সময় দেখা যায়, ফার্মের কর্মীরা, কান ধরে টেনেহিঁচড়ে বের করে আনছেন সেই ছাগলটিকে। ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা সাজ্জাদ।
সাজ্জাদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই ছাগলের জন্য কত কিছুই না হয়ে গেল! শুনেছি, আজ সাদেক অ্যাগ্রো ভাঙা হবে; সেই খবর পেয়ে ছুটে এসেছি দেখতে।
তিনি বলেন, এতদিন টিভি আর মোবাইল ফোনে ১৫ লাখ টাকার ছাগলটিকে দেখেছি। সে কারণে আজকে নিজচোখে দেখতে এসেছি। তবে এসে দেখে মনে হলো, ‘চিন্তায় চিন্তায়’ ছাগলটি অনেক শুকিয়ে গেছে! কিন্তু মোবাইল ফোনে ছবিতে এটিকে মোটা আর বড় লাগছিল।
এদিকে, সরেজমিন দেখা যায়, সংবাদমাধ্যমকর্মী ও এলাকাবাসীরাও ভিড় করছেন ছাগলটিকে দেখতে। এসময় সাধারণ মানুষকে বলতে শোনা যায়- ‘লাখ টাকার ছাগলে খাইলো কোটি টাকার বাগান’!
মূলত, এই ছাগলকাণ্ডের কারণেই রাজস্ব কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দুর্নীতি আর অঢেল সম্পদের তথ্য বের হয়ে আসতে থাকে সংবাদমাধ্যমে। এই কারণেই ছাগলটিকে নিয়ে শুরু হয়, নানান রকমের রম্য কাহিনি!
খালের জমি দখল করে গড়ে ওঠা সাদেক অ্যাগ্রো উচ্ছেদ করতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন অভিযানে আসে।
সকাল ১১টার কিছু পর থেকে শুরু হয়, উচ্ছেদ কার্যক্রম। উচ্ছেদের খবরে আগেভাগেই প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা বিভিন্ন জাতের গরু সরিয়ে নেওয়া হলেও এখনো অনেক ছাগল রয়ে গেছে এই খামারেই। তবে উচ্ছেদ অভিযান চলাকালে দেখা যায় কান ধরে টেনেহিঁচড়ে বের করা হচ্ছে, সেই ১৫ লাখ টাকার ছাগলটিকে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার সাদেক অ্যাগ্রো ফার্ম-এ উচ্ছেদ অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃপক্ষ। অভিযানের একপর্যায়ে খামারের আবাসিক কয়েকজন কর্মচারী উচ্ছেদ অভিযানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, সাদেক অ্যাগ্রো লিমিটেড অবৈধভাবে খাল ও সড়কের জায়গা দখল করেছে। এ ছাড়া ওই অংশে রিকশার গ্যারেজ ও বস্তিঘরের মতো বেশকিছু অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। সেগুলোই উচ্ছেদ করা হচ্ছে। সাদেক অ্যাগ্রো মোহাম্মদপুরের রামচন্দ্র খালের জায়গা দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে।