ঈদযাত্রায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে নৌ পুলিশ: অতিরিক্ত আইজিপি
প্রতিবারের মতো এবারও আসন্ন পবিত্র- ঈদ-উল-আযহা উদযাপনে নৌ পথের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে বলে জানিয়েছেন নৌ পুলিশ প্রধান বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মোহা. আবদুল আলীম মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) রাজধানীর নৌ পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আয়োজিত আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল- আযহা ২০২৪ উপলক্ষে নৌপথে যাত্রী, পণ্য ও কোরবানীর পশু পরিবহনে নিরাপত্তা সংক্রান্তে এক মত বিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নৌ পুলিশ প্রধান বলেন,'আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের নৌপথে ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন রাখতে এবং পশু ও পন্য পরিবহন নিরাপদ ও নির্ঝঞ্ঝাট করতে নৌ পুলিশ বদ্ধ পরিকর। পবিত্র ঈদে নৌ পুলিশ সকল নৌ ঘাট, নৌ টার্মিনাল সমূহে দায়িত্ব পালন করবে।'
তিনি বলেন, 'কোরবানির পশু পরিবহনে যাতে কোন প্রকার বিঘ্ন না হয় সেজন্য কোরবানির পশু বহনকারী সকল নৌযানে কোন হাটে ভিরবে তা উল্লেখ পূর্বক ব্যানার লাগাতে হবে এবং কোরবানীর পশুসহ অন্যান্য পণ্যবাহী নৌযান নৌপথে কোন প্রকার হয়রানির শিকার না হয় সেদিকে নৌ পুলিশের বিশেষ নজরদারী থাকবে।'
নৌ পথে যেকোন সমস্যায় নৌ পুলিশের কন্ট্রোল রুমের নম্বর-০১৩২০১৬৯৫৯৮ অথবা জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এর মাধম্যে নৌ পুলিশকে অবগত করলে নৌ পুলিশ সাথে সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন,'পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপনে নৌ পথ ব্যবহারকারী প্রত্যকেই যেন নিরাপদে তাদের পরিবার পরিজনদের সাথে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন এবং ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে পন্য ও কোরবানির পশু নির্দিষ্ট স্থানে নিয়ে যেতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে নৌ পুলিশ দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাট সমূহে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করবে।'
এসময় নৌপথ ও নৌযান সংক্রান্ত সকল সরকারী বেসরকারী সংস্থা,সেবা প্রত্যাশী জনগন এবং নৌ পুলিশ সহ সকলে আন্তরিকতা নিষ্ঠার সহিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা দুর্ঘটনা মুক্ত ও নিরাপদ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
সভার ভিডিও এবং পাওয়ার পয়েন্ট প্রদর্শনের মাধ্যমে পবিত্র ঈদ উল-আযহা উদযাপনে নৌপুলিশের বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয় ।এছাড়াও উপস্থিত বক্তারা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ নৌপথ সংক্রান্তে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সভায় জানানো হয়, পবিত্র ঈদে নৌপথ ব্যবহারকারী যাত্রীদের যাত্রা সহজ ও নিরাপদ করতে এবং পন্য ও পশু পরিবহনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নৌ পুলিশ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পন্টুনে হকার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা , লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন করা থেকে বিরত থাকা,ছোট ও ত্রুটিপূর্ণ লঞ্চে যাত্রী পরিবহনে বিরত থাকা,লঞ্চে যাত্রী সংখ্যার আনুপাতিক হারে লাইফ জ্যাকেট,বয়া প্রভৃতির ব্যবস্থা রাখা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান চালানো, সূর্যাস্তের পর বালুবাহী বাল্কহেড ও স্পীড বোট চলাচল সরকার কতৃক নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ১৩ জুন থেকে ২৩ পর্যন্ত এই ১১দিন বালুবাহী বাল্ক হেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়।
এছাড়াও চাঁদাবাজি,চুরি,ছিন্তাই,পকেটমারসহ যেকোন হয়রানি বন্ধে বিশেষ নজরদারি বৃদ্ধি করা,নৌযান চলাচলের পথে মাছ শিকারের জন্য জাল বিছানো প্রতিরোধ করা,বৈধ কাগজপত্র বিহীন কোনো নৌযান না চালানো,ন্যায্যমূল্যে ভাড়া আদায়ে তদারকি,টার্মিনাল ব্যতীত নদীর যেকোন জায়গায় অন্য কোন ছোট নৌযান হতে যাত্রী উঠানো বা নামানো বন্ধ নিশ্চিতকরন,বিভিন্ন নদী কেন্দ্রিক হাটে জোরপূর্বক পশু নামালে বা চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ,পশুবাহী নৌযান কোন হাটে ভিরবে তা ব্যানারে লিখে টানানো, প্রত্যেক লঞ্চে প্রশস্থ সিঁড়ি এবং সিড়ির দুই পাশে রেলিং এর ব্যবস্থা,লঞ্ছের মুরিং কাজে ব্যবহৃত পুরাতন ও জরা জীর্ণ আলাদ পরিবর্তন করে নতুন ও আলাদা সংজোজন, সকল নৌযানে পর্যাপ্ত ফায়ার ফাইটিং এর ব্যবস্থা করণ সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।