‘কিশোররাই হবে কিশোর গ্যাংয়ের বিপরীতে আরেকটি শক্তি’
জাতীয়
ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেছেন, কিশোররাই হবে কিশোর গ্যাংয়ের বিপরীতে আরেকটি শক্তি।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ডিএমপি এবং জাইকার (JICA) উদ্যোগে পরিচালিত ডিআরএসপি প্রজেক্টের "রোড সেফটি পোস্টার এন্ড স্লোগান কনটেস্ট-২০২৪" এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থী ও দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। কিশোর গ্যাং নির্মূলে সামাজিকভাবে সচেতনতা ও মাদকের বিরুদ্ধেও সচেতনতা তৈরিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার তাগিদ দেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান।
তিনি বলেন, আমরা পোস্টার, স্লোগান কম্পিটিশন করেছি। যারা এতে অংশগ্রহণ করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রধান শিক্ষক, প্রিন্সিপাল তাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
এই প্রজেক্ট ঢাকা বাসী ও ডিএমপির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি। এজন্য জাইকা অথরিটি এবং জাপান সরকারকে ধন্যবাদ জানায়।
কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকাল পত্র পত্রিকার পাতায় নিয়মিত কিশোর গ্যাংয়ের খবর আমরা দেখতে পাই। কিশোর কোনো গ্যাং না। কিন্তু কয়েকজন কিশোর মিলে যখন সংঘবদ্ধভাবে একটি খারাপ কাজে লিপ্ত হয় সেটা কিশোর গ্যাং।
এছাড়াও সড়কে যানযট নিয়ে তিনি বলেন, রাস্তা ঘাটে প্রতিদিন আইন অমান্য করার প্রতিযোগিতা দেখা যায়। শিক্ষিত লোক অশিক্ষিত লোক সবার মধ্যেই আইন অমান্য করার প্রতিযোগিতা দেখা যায়। তাই আমাদের ঢাকা শহরের ট্রাফিক জ্যাম দুর্ঘটনা দেখা যায়।
জ্যামের কারণে অনেক সময় রোগী পরিবহনের অ্যাম্বুল্যান্সেও রাস্তায় আটকে থাকতে দেখা যায়। জ্যামে আটকে থেকে অনেক সময় মুমূর্ষু রোগীরা মারা যাচ্ছে। অথচ দশ মিনিট আগে যদি সেই রোগীকে হাসপাতালে পাঠানো যেতো তাহলে অনেক রোগীকেও বাচানো সম্ভব।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ২০১৮ সালে ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় আবরার নামের এক ছাত্রের মৃত্যুতে সব শিক্ষার্থীরা যেভাবে সাধারণ মানুষকে এমনকি পুলিশকেও তারা আইন মানাতে বাধ্য করেছিলো। তা সত্যি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে যে আইন অমান্য না করেও কিভাবে সড়কে যানবাহন চালানো সম্ভব।
তিনি বলেন, পরিবার থেকেই আইন মানার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। আইন অমান্য করে নিজের এবং অন্য আরেকজনের জীবন যেন ঝুঁকিতে না পড়ে।
কনটেস্টে ২৩৮ টি ছবি থেকে ১০ টি ছবিকে পুরস্কার দেয়া হয়। এতে প্রথম স্থান অর্জন করে ভিকারুননিসা নূন স্কুলের শিক্ষার্থী হালিমা তুন সাদিয়া। এতে প্রত্যেক বিজয়ীর হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করেন তিনি।
দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে দেশের তিন বিভাগে বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার জন্য দেওয়া আবহাওয়ার এক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু'এক জায়গায় হালকা বৃষ্টি/গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
এছাড়া সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থায় বলা হয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এটি তামিলনাডু-শ্রীলংকা উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আগামীকাল বৃহস্পতিবারের (১৪ নভেম্বর) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
এছাড়াও বর্ধিত ৫ দিনের আবহাওয়ার অবস্থায় রাতের তাপমাত্রা কমতে পেতে পারে বলে জানায় সংস্থাটি।
বায়ুদূষণের তালিকার শীর্ষ দশ থেকে বের হতে পারছে না রাজধানী ঢাকা। শহরটিতে বাতাসের মান আজ 'অস্বাস্থ্যকর' পর্যায়ে রয়েছে। পঞ্চম স্থানে থাকা শহরটির স্কোর ১৬৩।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ৮টা ৩২মিনিটে বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের (আইকিউএয়ার) সূচক থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
আইকিউএয়ার'র তথ্য অনুযায়ী, বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। ৮৭৫ স্কোর নিয়ে এই শহরের বাতাস দুর্যোগপূর্ণ বা বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর। এই শহরটির দূষণ স্কোর ৪৯৯ অর্থাৎ সেখানকার বাতাসও বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে।
লাহোরে দূষণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় শিশুদের সুরক্ষা দিতে লাহোরের কয়েকটি শহরে সব স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও পাঞ্জাব প্রদেশের কয়েকটি শহরেও এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বায়ু দূষণের তৃতীয় স্থানে রয়েছে ভিয়েতনামের হ্যানয়। এই শহরটির দূষণ স্কোর ২০৪ অর্থাৎ সেখানকার বায়ুর মান খুবই অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে। এরপর চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে কাতারের দোহা। দোহার বায়ু দূষণের মানের স্কোর ১৬৩।
উল্লেখ্য, স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মাঝারি’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ মানের বায়ু হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১০১ থেকে ১৫০ স্কোরকে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ হলে, তা ‘অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ বায়ু ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।
রাজধানীর সড়কে চলাচলকারী মানুষের নিত্যদিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে দীর্ঘ যানজট। আর এই যানজটের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সড়কে চলা অটোরিকশার দাপট। যার নেই কোনো বৈধতা। ফলে তিন চাকার এই যানটিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণও হারাচ্ছেন অনেক মানুষ।
তবে এসব অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তার সুফল মিলছে না। মূলত সড়কে পুলিশের উপস্থিতি টের পেলেই অটোরিকশা চালকরা রাস্তা পরিবর্তন করে পালিয়ে যায়। ফলে এসব অটোরিকশার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনাকারী ট্রাফিক পুলিশের সাথে অটোরিকশা চালকদের ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে বলে মনে করছেন কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, এখন পর্যন্ত প্রায় লাখ খানেক অটোরিকশা ডাম্পিং করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিয়মিত অভিযানও অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে অভিযান অব্যাহত থাকলেও নিয়ন্ত্রণে হিমসিম খেতে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। গেল সেপ্টেম্বর মাসে শুধু রাজধানীতেই ১ সপ্তাহে ২০ হাজার ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের তথ্য মতে, ২২ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সাত দিনের অভিযানে ৯ হাজার ৩০১টি অটোরিকশার বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সেই সাথে ৪ হাজার ১৫৯টি রিকশার সিটও জব্দ করা হয়।
এছাড়াও অভিযানকালে ৬৬০টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ডাম্পিং করা হয় ও ৩টি রিকশার ব্যাটারি জব্দ করা হয় এবং ৫ হাজার ৮৩৯টি রিকশার বিরুদ্ধে অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
নিয়মিত অভিযান পরিচালনার পরও দিন দিন রাজধানীর সড়কে বেড়েই চলেছে অটোরিকশার দাপট। যার ফলে নিয়মিত দুর্ঘটনাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রধান সড়কে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার দাপট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ কি ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছে বা তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার খোন্দকার নজমুল হাসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, 'ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ধরতে পারলে আমরা এদেরকে ডাম্পিংয়ে পাঠাচ্ছি। রাজধানীর সড়কে এদের দাপট কমাতে আমরা নিয়মিত অভিযানও পরিচালনা করছি। অভিযানে এদেরকে ধরতে পারলে আমরা ব্যাটারি ডাম্পিংয়ে দিচ্ছি আবার রিকশাও ডাম্পিংয়ে দিচ্ছি। একটা না একটা ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে আমরা নিচ্ছি।'
এখন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে কি পরিমাণ ব্যাটারি বা রিকশা ডাম্পিংয়ে দিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'এখন পর্যন্ত প্রায় লাখ খানেক ডাম্পিং করেছি। এই অবস্থাই চলছে আরকি, ইঁদুর বেড়াল খেলা।'
এই ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যারা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'যারা এসব অটোরিকশা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ কি পুলিশের কাজ? এদের পারমিশন (অনুমতি) আছে কিনা? এরা বৈধ কিনা? লাইসেন্স ঠিক আছে কিনা? এগুলো দেখাতো আর পুলিশের কাজ না। এই কাজগুলো যাদের; তাদেরই এই উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।'
সড়কে দায়িত্বরত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা একাধিক কর্মকর্তাদের কাছে অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের কোনো বিষয়ে কথা বলার অনুমতি নেই বলে জানানো হয়। তারা বলেন, 'আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ বিষয়ে বলতে পারবেন। আমাদের কথা বলা নিষেধ আছে। যেকোন বিষয়ে কোনো বক্তব্য দিতে গেলে অনুমতি লাগবে।'
এদিকে দেশের ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার মধ্যে অন্যতম রাজধানী ঢাকা। সর্বশেষ ২০২৪ সালের জনশুমারির প্রতিবেদন লক্ষ্য করলে দেখা যায়, এই শহর ও পাশ্ববর্তী জেলায় বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯৯৫ জন। আর ২০১৪ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরোর বস্তি শুমারি অনুযায়ী, দেশে বস্তিবাসীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২২ লাখ এবং ঢাকা শহরের দুই সিটি করপোরেশনে মোট ৩ হাজার ৩৯৪টি বস্তিতে মোট ঘরের সংখ্যা প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজারের মতো। এ হিসাব অনুযায়ী, সাড়ে ৬ লাখের মতো লোক এসব বস্তিতে বসবাস করেন, যা গত ১০ বছরের ব্যবধানে বহুগুণ বেড়েছে।
রাজধানীর বস্তিতে বসবাসকারী পুরুষের অধিকাংশের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যম এই রিকশা। ফলে বস্তিতে বসবাসকারী মানুষের হিসেবের মতই অন্ধকারেই থেকে যায় রাজধানীতে চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার সঠিক পরিসংখ্যানও।
সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীতে রিকশার সংখ্যা কত, এর সঠিক কোনো তথ্য নেই কোনো সংস্থার কাছে।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় আনুমানিক প্রায় ৪ লাখেরও অধিক অবৈধ রিকশা ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায়ও প্রায় ৪ থেকে ৫ লাখ অবৈধ রিকশা রয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গেছে।
এছাড়াও রাজধানীর সড়কে প্রতিদিনই বাড়ছে নতুন নতুন রিকশার চলাচল। এর মধ্যে বড় একটি সংখ্যা ব্যাটারিচালিত। শারীরিক কষ্ট লাঘব করতে রিকশাচালকরা ব্যাটারিচালিত রিকশা চালাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন। ফলে মালিক পক্ষও রিকশায় যুক্ত করছেন ব্যাটারি। সেই সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনার সংখ্যাও। গেল (৭ নভেম্বর) বৃহস্পতিবারও রাজধানীর ডেমরা বামৈল এলাকায় অটোরিকশার ধাক্কায় ইউসুফ (৬৫) নামে এক ব্যক্তি প্রাণ হারান।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. হাদিউজ্জামান অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ ও পুনর্বাসনে কি করা উচিত এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। মামলা দিচ্ছে, কিন্তু এটা সমাধান নয়। আমাদের ঢাকা শহরের আশেপাশে অসংখ্য লোকাল গ্যারেজ রয়েছে। এই লোকাল গ্যারেজগুলো থেকে উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদন যদি বন্ধ করা না হয় তাহলে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। গ্যারেজগুলো থেকে অবৈধভাবে উৎপাদন করা হয়, সেজন্য গ্যারেজে অভিযান চালাতে হবে। ব্যাটারিচালিত রিকশার যে সরঞ্জামগুলো রয়েছে সেগুলোর আমদানি নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। আমদানি নিয়ন্ত্রণে না আনলে শুধু সড়ক থেকে রিকশা ধরে লাভ নেই। এই অটোরিকশার পরিমাণ এমন পরিমাণে গিয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষ এখন জীবন জীবিকার জন্য অনেকেই নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। এটি এখন একটি জটিল সমস্যায় পরিণত হয়েছে।'
'এই অটোরিকশার সমস্যা রাতারাতি কমানো যাবে না। সেক্ষেত্রে আমাদের সরকারের অতি দ্রুত কিছু নীতিমালা তৈরি করা উচিত। প্রথমত, সড়কের সক্ষমতা কতটুকু হবে এবং তার বিপরীতে কি পরিমাণ এধরনের রিকশাকে সড়কে চলার অনুমতি প্রদান করা হবে সেটির বিজ্ঞানসম্মত হিসাব-নিকাশ থাকতে হবে। সড়কে তো শুধু ব্যাটারি চালিত রিকশা চলবে না, প্রাইভেটকার থেকে শুরু করে আরো বিভিন্ন ধরনের যান চলাচল করে। সেজন্য সড়কে কি পরিমাণ অটোরিকশা চলবে এই ধরনের নীতিমালা তৈরি করা অতি গুরুত্বপূর্ণ। বি আর টি এ অনুমোদন না দেওয়ার কারণে এখন যে যার মতো করে গ্যারেজ তৈরি করছে। সরকারের উচিত একটা স্ট্যান্ডার্ড ডেভলপমেন্ট করা। অটোরিকশাগুলো যেভাবে তৈরি করা হচ্ছে সেখানে তারা বিজ্ঞানসম্মত থেকে অনেক দূরে আছে। এটার কাঠামোগত দুর্বলতা, ডাম্পিং দুর্বলতাসহ অনেক ধরনের দুর্বলতা রয়েছে। যার ফলে দুর্ঘটনাও ঘটছে। সে জন্য টেকনিক্যাল ইন্সট্রাকশন তৈরি করতে হবে। এই অটোরিকশা এখন অনেক বড় জটিল সমস্যা। জীবন-জীবিকার জন্য ঢাকা শহরে এখন ৮ লাখ ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চলাচল করে। পরিবারের চারজন ধরলেও প্রায় ৩২ লাখ মানুষ এই রিকশার জীবিকার ওপর নির্ভরশীল। আমাদের পলিসির দুর্বলতা থেকে যাচ্ছে। সেজন্য মোটরসাইকেলও বাড়ার পর এখন আর নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। ব্যাটারি চালিত রিকশার একই অবস্থা।'
'অটোরিকশা সরঞ্জাম উৎপাদন করা এখন এক ধরনের শিল্প হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের ব্যাপার আছে। যে মোটর ও ব্যাটারিগুলো বাহির থেকে দেশে আসতেছে, সেটা কি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই আসতেছে? সেজন্য তাদেরকেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। বিআরটিএ যদিও বলে তারা এটির অনুমোদন দেয়নি এবং এগুলো তারা নিয়ন্ত্রণ করে না, কিন্তু আমি বলবো বিআরটিএ হচ্ছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা। ট্রাফিক পুলিশ সড়কে নামার পর অটোরিকশার লাইসেন্স আছে কিনা, বৈধতা আছে কিনা এগুলো তারা চেক করছে। কিন্তু এটার উৎপাদন যেখান থেকে হচ্ছে, যেখানে আমদানি হচ্ছে সেই জায়গায় আমাদের গুরুত্বপূর্ণ যে সকল স্টেক হোল্ডার রয়েছে তাদের পার্টিসিপেশন থাকতে হবে। কিন্তু এ জায়গায় যথেষ্ট দুর্বলতা রয়েছে। সেজন্য সংখ্যাত্মিকভাবে এই অটোরিকশা ক্রমশই বেড়ে যাচ্ছে। এটা ঠেকাতে হলে মূল জায়গা থেকে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। শুধু সড়ক থেকে সরালে হবে না।'
দিন দিন বস্তিগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বস্তির যে জনসংখ্যা রয়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহের প্রধান মাধ্যম হলো রিকশা। ফলে দিন দিন রিকশার পরিমাণ বেড়েই যাচ্ছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, 'আমাদের যেসকল পলিসি মেকার রয়েছে তাদেরকে এটা গভীরভাবে ভাবা উচিত। যেভাবে রিকশার পরিমাণ বাড়ছে এটা শুধু সড়কে চাপ তৈরি করছে শুধু তাই নয়, মানুষের মাইগ্রেশনেও চাপ তৈরি করছে। ঢাকা শহরে এটা চালানোর জন্য মানুষ গ্রাম থেকে চলে আসতেছে। বস্তিগুলোতে মানুষের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সবগুলোর ওপরে চাপ পড়তেছে। ঢাকা শহর এমনিতেই পরিবেশগত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ঢাকা শহর এমনিতেই যাই যাই অবস্থা। সেখানে এই অতিরিক্ত চাপের প্রতিঘাত অনেক জায়গায় গিয়ে পড়বে।'
আজ বুধবার কনফারেন্স অব দ্য পার্টিস-২৯ (কপ২৯)-এ ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা আজ বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিট থেকে বিকাল ৩টার মধ্যে কপ২৯-এ ওয়ার্ল্ড লিডারস ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন।
আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে সোমবার কপ২৯ শুরু হয়েছে। ওই জলবায়ু সম্মেলনে যোগ দিতে চার দিনের সফরে এখন বাকুতে রয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে তিনি ব্যস্ত সময় পার করেন।
প্রাপ্ত এক বার্তা অনুসারে, ২০০৬ সালে নোবেল শান্তি বিজয়ী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অন্তত ২০ জন শীর্ষ নেতা এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
প্রফেসর ইউনূস কপ২৯ ভেন্যুতে বিশ্ব নেতাদের শীর্ষ সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান ও তুর্কি ফার্স্ট লেডির সাক্ষাৎ করেন। জলবায়ু সম্মেলনের ফাঁকে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পোডেলের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এবং তাকে শুভেচ্ছা জানান।
অন্যদের মধ্যে অধ্যাপক ইউনূস বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী, ঘানার প্রেসিডেন্ট, বসনিয়া হার্জেগোভিনার প্রধানমন্ত্রী, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট, আলবেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী, মন্টিনিগ্রোর প্রেসিডেন্ট, বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী, ব্রাজিল ও ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট, ফিফা সভাপতি ও আইওএম-এর মহাপরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
এছাড়া আল-আজহার আল শরীফের গ্র্যান্ড ইমাম আহমেদ আল তাইয়েব মঙ্গলবার সকালে বাকুর রিৎজ কার্লটন হোটেলে অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধান উপদেষ্টা সোমবার স্থানীয় সময় বিকাল সোয়া ৫টার দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বাকুতে পৌঁছান।