দুর্যোগ বাড়লেও বাজেটে মুদ্রাস্ফীতির কারণে কমেছে বরাদ্দ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় এবারের বাজেটে পরিবেশ, বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ১৩০ কোটি টাকা বা ৫২ কোটি টাকা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ বাড়লেও বিদ্যমান মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায় প্রকৃত বরাদ্দ কমেছে। দুর্যোগ বাড়লেও কৃষি, স্বাস্থ্য এবং পানি সম্পদ খাতে জলবায়ু সম্পর্কিত বরাদ্দ প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক বা তার সামান্য বেশি। তীব্র দাবদাহ, শৈত্য প্রবাহ, মৌসুমের বাইরে বৃষ্টিপাতসহ বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং শিলাবৃষ্টির মতো দুর্যোগ বাড়লেও খাদ্য নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্য সেবা, দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা এবং গবেষণা ও জ্ঞান ব্যবাবস্থাপনায় জলবায়ু সম্পর্কিত অর্থায়ন ক্রমেই কমছে। অভিযোজন এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং গবেষণায় জলবায়ু সম্পর্কিত অর্থায়ন ক্রমেই কমছে বলে জানিয়েছেন চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ এর প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান।

শনিবার (২২ জুন) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে 'সবুজ অর্থনীতি ও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু, পরিবেশ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানী সংক্রান্ত বিষয়ে মতামত' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ২০২৪- ২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট বরাদ্দ জিডিপির ১ শতাংশ কম এবং ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের তুলনায় বাজেটে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের বাড়লেও মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় প্রকৃত বরাদ্দ ২ দশমিক ৩৫ শতাংশ কমেছে। জলবায়ু সহনীয়তা ও পরিচ্ছন্ন পরিবেশ নিশ্চিতে বাজেটে জিডিপির প্রায় ৫ শতাংশ ব্যয় করা প্রয়োজন হলেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্যোগের ঝুঁকি বাড়লেও জলবায়ু সম্পর্কিত বাজেট বরাদ্দ জিডিপির মাত্র ০.৭০৬ শতাংশ গত বছরের তুলনায় কমেছে।

তিনি বলেন, প্যারিস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ এনডিসিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৪১১৪.২ মেগাওয়াট। প্রতি অর্থ বছরে গড়ে কম্পক্ষে প্রায় ৩ হাজার ৮৬ কোটি টাকা প্রয়োজন হলেও ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের বাজেটে নবায়নযোগ্য শক্তি বাবদ মাত্র ১০০ কোটি টাকা বা মাত্র ৩.২ শতাংশ তহবিল বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। প্রতি অর্থ বছরে বাংলাদেশে সার্বিক জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি ২৩.৪ বিলিয়ন ডলার। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের হারানো কর্মদিবসের আর্থিক মূল্য বিবেচনায় সার্বিক জলবায়ু অর্থায়নে ঘাটতি বছরে প্রায় ৪০ বিলিয়ন ডলার। ঘাটতির তুলনায় আন্তর্জাতিক উৎস হতে বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। এ প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রতিশ্রুত প্রতি বছর ১১.৪ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়ন সহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রায় ২২৫ বিলিয়ন (প্রায় ২৯.৩ বিলিয়ন ডলার) প্রদানের যে উদ্যোগ নিয়েছে জলবায়ু ঋণ না নিয়ে এ তহবিল থেকে অনুদান পেতে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে দ্বিপাক্ষিকভাবে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, প্যারিস চুক্তির আওতায় সরকার জলবায়ু সহনীয়তার জন্য কার্বন নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর কার্বন কর আরোপ করা উচিত, তাহলে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পাশাপাশি অভিযোজনেও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়া সম্ভব হবে। পাশাপাশি কার্বন নিঃসরণ কমে বায়ু দূষণের পরিমাণ কমে যাবে। কার্বন কর, দূষণ করারোপের মাধ্যম বছরে সর্বোচ্চ ৩.৪ বিলিয়ন ডলার সবুজ অর্থায়ন সম্ভব।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, গ্রিন ফিনিটির প্রধান নির্বাহী ড. দিলরুবা, চেঞ্জ চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের গবেষণা সহকারী তন্ময় সাহা এবং পারমিতা অরণি।