স্বাচ্ছন্দে চলাচল সাধারণ মানুষের

কোটা আন্দোলনের প্রভাব পড়েনি মতিঝিলে

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর ব্যাংক পাড়া হিসেবে খ্যাত মতিঝিল, ছবি: বার্তা২৪.কম

রাজধানীর ব্যাংক পাড়া হিসেবে খ্যাত মতিঝিল, ছবি: বার্তা২৪.কম

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম ‘বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। বৈষম্য বিরোধী এই আন্দোলনে রাজধানীর বিভিন্ন অংশে সাধারণ মানুষের চলাচল ও যান চলাচল স্থবির হয়ে পড়লেও রাজধানীর ব্যাংক পাড়া হিসাবে খ্যাত মতিঝিলে পড়েনি কোনো প্রভাব। ফলে স্বাচ্ছন্দে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ ও গণপরিবহন।

সোমবার (৮ জুলাই) বেলা ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর মতিঝিলে অবস্থান করে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিন দেখা গেছে, রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিলে স্বাচ্ছন্দে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ। থেমে নেই যান চলাচলও। কর্মব্যস্ত মানুষ ছুটে চলছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। নেই কোনো যানজট। ফুটপাতসহ ওলিতে গলিতে ব্যবসা করছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। নেই কোনো আন্দোলনরত শিক্ষার্থী।

এদিকে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার ও আদালত কর্তৃক ২০১৮ সালে জারিকৃত পরিপত্র বাতিলের প্রতিবাদে এক দফা দাবিতে সারা দেশে দ্বিতীয় দিনের মতো‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটের দিকে ঢাকা কলেজের মূল ফটকের সামনে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হন। এরপর একটি মিছিল নিয়ে সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবরোধ করেন তারা। এর ফলে এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর রোড এবং ধানমন্ডি ২ নম্বর সড়কের যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

এর আগে গত ৬ জুলাই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম ঘোষণা দেন, রোববার বিকেল ৩টা থেকে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি পালিত হবে। শুধু শাহবাগ মোড় নয় ঢাকা শহরের সায়েন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল প্রতিটি পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন।ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা জেলায়–জেলায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন। রোববার শিক্ষার্থীরা চার দফা বাদ দিয়ে এক দফা দাবি ঘোষণা করেন। তা হলো- সকল গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লেখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যুনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাস করতে হবে।

প্রসঙ্গত, ৫ জুন সরকারি দফতর, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন করপোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন উচ্চ আদালত। ওই দিন থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। এ অবস্থায় আদালতের ওই রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে। আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানির জন্য আজ ৪ জুলাই দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদনটির ওপর শুনানি হয়, আপাতত আগের মতোই বহাল থাকছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। তাই পূর্ব ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজও হচ্ছে কোটা সংস্কার আন্দোলন।

উল্লেখ্য, এ সময় ঢাবির বিভিন্ন হল ও বিভাগ থেকে শত শত শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে আসে এবং 'কোটা না মেধা? মেধা মেধা',জেগেছে রে জেগেছে ছাত্র সমাজ জেগেছে, লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে, কোটা না মেধা মেধা মেধা, সারা বাংলায় খবর দে কোটা প্রথার কবর দে সহ শিক্ষার্থীদের নানা স্লোগানে মুখরিত হয় ঢাবির কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার এলাকা।