রথযাত্রায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ৫ জনের মৃত্যু, তদন্তে কমিটি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় রথযাত্রা

বগুড়ায় রথযাত্রা

বগুড়ায় রথযাত্রা উৎসবে বিদ্যুতায়িত হয়ে পাঁচজনের মৃত্যু এবং ৪০ জন আহতের ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পিএম ইমরুল কায়েসকে প্রধান করে গঠিত কমিটি ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে ১০ দিনের মধ্যে তাদের সুপারিশ প্রদান করবেন। এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মারা যাওয়া প্রত্যেক পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে প্রাথমিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বগুড়ার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছেন, অনুষ্ঠানে তিনি নিজেও অতিথি ছিলেন। আয়োজকদের তার কাছে উদাসীন মনে হয়েছে।

ইসকন বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি খরাজিতা কৃঞ্চদাস ব্রক্ষ্রচারী বলেছেন, প্রতি বছর রথ উৎসবের আগে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ছাড়াও পুজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের সাথে বৈঠক করা হয়। সেখানে কখনই রথের চূড়া নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেননি। দুর্ঘটনা ঘটার পর সবাই রথের চূড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, যা দুঃখজনক।

তিনি আরও বলেন, রথের চূড়ায় বিদ্যুতের তার লেগে যাওয়ার পর রথের ওপরে বসে থাকা আমিসহ কমপক্ষে ২৫ জন অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে যায়।

রথ উৎসবের দুর্ঘটনার বর্ণনা করে ইসকন বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি খরাজিতা কৃঞ্চদাস ব্রক্ষ্রচারী বলেন, রথটি চাকাসহ উচ্চতা ৮ ফুট। এর সাথে চূড়া ৩২ ফুট। সব মিলিয়ে চূড়ার উচ্চতা ৪০ ফুট। চূড়াটি নিচু করার জন্য রথের সাথে হাতলসহ চাকা রয়েছে। চাকা ঘুরিয়ে চূড়াটি প্রয়োজন মত উঁচু-নিচু করা যায়।

চূড়া উঁচু-নিচু করার দায়িত্বে ছিলেন অলোক এবং সুশান্ত নামের দুইজন। আর শৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিলেন ইসকনের ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক। সেউজগাড়ি আমতলা এলাকায় সড়কে বিদ্যুতের তার দেখে অলোক চাকা ঘুরিয়ে চূড়া নিচু করা কাজ করছিলেন। কিন্তু সামনে কয়েক হাজার ভক্ত রশি ধরে রথ জোরে টেনে নেওয়ার কারণে চূড়াটি বিদ্যুতের তারে লেগে যায়। এতে রথের ওপরে থাকা যে যার মত লাফিয়ে পড়েন। অলোক সঙ্গে সঙ্গে মারা গেলে সুশান্ত চাকার হাতলে হাত দিলে তিনিও গুরুতর আহত হন।

খরাজিত কৃঞ্চদাস আরও বলেন, রথ জোরে টানার কারণে যেমন দুর্ঘটনা ঘটেছে তেমনি অসংখ্য মানুষ প্রাণেও রক্ষা পেয়েছেন। জোরে টানার কারণে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই রথের চূড়া ভেঙে বিদ্যুতের তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, রথের পুরো কাঠামোটি স্টিলের তৈরি। এর ওপরে বসে ছিল কমপক্ষে ২৫ জন। নিচে যারা রথের কাঠামো ধরে ঠেলে নিয়ে যাচ্ছিলেন তারাই হতাহত হয়েছেন।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৮ জনের মধ্যে আটজনকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। রঞ্জন পাল এবং চন্দন দেবকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এখনও ২৮ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শজিমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া বেগম শজিমেক হাসপাতালে আসেন। তিনি হাসপাতালে বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে চিকিৎসাধীন রোগীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।