‘অন্ধকার জীবনে বাত্তি দিয়া কী হইবো’!

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪,এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে কোটাবিরোধী আন্দোলন

ছবি: বার্তা২৪,এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে কোটাবিরোধী আন্দোলন

এক সপ্তাহ ধরে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে চলছে কোটাবিরোধী আন্দোলন। সে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় সোমবার (৮ জুলাই) পালন হচ্ছে 'বাংলা ব্লকেড'!

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেলে শাহবাগ, গুলিস্তান, বাংলামোটর, ফার্মগেট, নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব মোড়সহ আরো বেশ কিছু এলাকায় অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করছেন।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, সরেজমিন দেখা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীরা বাংলামোটর মোড়ে অবস্থান নেন। এসময় অ্যাম্বুলেন্স, অসুস্থ রোগী ও বয়স্কদের ছাড়া কোনো গণপরিবহনকেই রাস্তায় চলাচল করতে দেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ বাংলামোড়েও অবস্থান নেন কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা, ছবি- বার্তা২৪.কম

‘ব্লকেড’ অবস্থায় মধ্যবয়স্ক একজন ইলেক্ট্রিক লাইট ব্যবসায়ী সাইকেল নিয়ে রাস্তা পারাপার হতে চাইলে এক শিক্ষার্থী বলে ওঠেন, 'অন্ধকার জীবনে বাত্তি দিয়া কী হইবো’!

যদিও পরে তাকে রাস্তা পারাপার করে দেন শিক্ষার্থীরা।

তেমনই আরেকজন আক্কাস মিয়া। ৮০-উর্ধ্ব মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে রূপনগর থেকে যাচ্ছিলেন পুরান ঢাকা। বাংলামোটর মোড়ে এসে আটকা পড়েন ‘বাংলা ব্লকেড’-এ। বৃদ্ধা মাকে দেখিয়ে রাস্তা পারাপারের অনুরোধ জানালেও শিক্ষার্থীরা তাদের গাড়ি যেতে দেননি। পরে বাধ্য হয়ে হেঁটে রাস্তা পার হন তারা।

'বাংলা ব্লকেড'-এ আটকা পড়েন রিকশাযাত্রী এক নারী, ছবি-বার্তা২৪.কম


এসময় বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বললে তারা দুঃখ প্রকাশ করে রাস্তার অপর পাশ থেকে একটি সিএনজিালিত অটোরিকশা ঠিক করে দেন আক্কাস মিয়াকে।

শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিকে ঘিরে সোমবার বিকেল থেকেই পুরো রাজধানী অচল হয়ে যায়। থমকে থাকে গণপরিবহন। যাত্রীরা বাধ্য হয়ে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওয়ানা দেন গন্তব্যের পথে।

 বাংলা ব্লকেডে বাধা পেয়ে বাধ্য হয়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা, ছবি- বার্তা২৪.কম


এর আগে রোববার (৭ জুলাই) ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির প্রথমদিনে বিকেল সোয়া ৫টায় শাহবাগের দিক থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বাংলামোটর মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।

মিছিল ও স্লোগানে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এদিন বাংলামোটর এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা থাকলেও তারা কোনোরকম বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেনি। এতে করে নির্বিঘ্নে তারা বাংলামোটর মোড়ে কর্মসূচি চালিয়ে যান।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র নাহিদ ইসলাম ৬ জুলাই এই 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

নাহিদ ইসলাম বলেছিলেন, শুধু শাহবাগ মোড় নয়, ঢাকা শহরের সায়েন্সল্যাব, চানখারপুল, নীলক্ষেত, মতিঝিল প্রতিটি পয়েন্টে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নেমে আসবেন। ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীরা জেলায়–জেলায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মহাসড়কগুলো অবরোধ করবেন।