কুয়াকাটার হোটেলের শেয়ার নিয়ে আবেদ আলীর ফাঁদ

  • কেএম শাহাবুদ্দিন শিহাব, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

কুয়াকাটার হোটেলের শেয়ার নিয়ে আবেদ আলীর ফাঁদ

কুয়াকাটার হোটেলের শেয়ার নিয়ে আবেদ আলীর ফাঁদ

বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের পরীক্ষাসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীকে নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।এদিকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় একটি হোটেলের শেয়ার বিক্রি নিয়ে গত ১৮ মে সৈয়দ আবেদ আলীর দেওয়া প্রতারণামূলক পোস্ট নিয়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে এলাকাজুড়ে।

কুয়াকাটার হোটেল নিয়ে সৈয়দ আবেদ আলীর দেওয়া মিথ্যা পোস্ট নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে হোটেল কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

গত ১৮ মে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পোস্টে (হোটেল সান মেরিনার) প্রস্তাবিত তারকামানের হোটেলের সাইনবোর্ডের ছবি দিয়ে শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করার অনুরোধ করেন আবেদ আলী। সেখানে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর করেছেন এমন দাবিও করেন।

তার নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া পোস্টটি হল ‘আমাদের নতুন হোটেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম আজ। হোটেল সান মেরিনা, কুয়াকাটা। সমুদ্রকন্যার পারে আজীবন নিজের জন্য একটা থাকার ব্যবস্থা ও একই সঙ্গে একটা হোটেলের মালিকানা অর্জন করতে আপনিও শেয়ার কিনতে পারেন। শেয়ার কিনতে যোগাযোগ করুন।’

বিজ্ঞাপন

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সৈয়দ আবেদ আলী মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার পশ্চিম বেতলা গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মীরের ছেলে। আব্দুর রহমান মীরের তিন ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে আবেদ আলী মেজো। রহমান মীরের বড় ছেলে জবেদ আলী কৃষিকাজ করেন। ছোট ছেলে সাবেদ আলী এলাকায় অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের ভাই আবেদ আলী জীবন। এলাকার মানুষের কাছে তিনি পরিচয় দিতেন শিল্পপতি হিসেবে।

হোটেলের শেয়ার বিক্রি নিয়ে আবেদ আলীর ফেসবুক পোস্ট

সর্বশেষ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের জন্য প্রচারণা চালিয়েছিলেন আবেদ আলী। আবেদ আলী সমাজের বিত্তবান ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে নিয়মিত চলাফেরা করতেন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গেও উঠাবসা ছিল তার। ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ছিলেন।

মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সরেজমিনে হোটেল সান মেরিনার জায়গাটি ঘুরে দেখা যায়, সাগরকন্যা খ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটার রাখাইন মহিলা মার্কেট রোডে অবস্থিত কথিত ওই জমিতে এখনও কোনো হোটেল নির্মিত হয়নি। ৪০ শতক জমির চারদিকে ইট দিয়ে তৈরি সীমানা প্রাচীর রয়েছে, যার সঙ্গে সাইনবোর্ডটি টাঙানো রয়েছে। একপাশে একটি টিনশেডের লম্বা ঘরে বেশ কয়েকটি রুম রয়েছে, যেখানে ওই প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক থাকেন।

প্রস্তাবিত হোটেল সান মেরিনা প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মো. ফারুক হোসেন রুবেল জানান, গত ৮ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানটিতে চাকরি করি। আবেদ আলী নামের এই লোককে কখনও আমাদের মালিকের সঙ্গে দেখিনি। এটার মালিক মোশাররফ হোসেন নামের একজন ঠিকাদার ব্যবসায়ীর।

হোটেল সান মেরিনার (প্রস্তাবিত) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মোশাররফ হোসেন বার্তা২৪.কে বলেন, আমি ২০১০ সালে জমিটা ক্রয় করি। এখন পর্যন্ত আমিই এই জমির মালিক, কোনো পার্টনার নেই। আমরা শেয়ার বিক্রির জন্য সাইনবোর্ড লাগিয়েছি তবে এখন পর্যন্ত কোনো শেয়ার বিক্রি হয়নি। আবেদ আলী নামের এই লোককে আমি চিনি না। আমার টাঙানো ছবি দিয়ে তিনি শেয়ারের মালিকানা দাবি করে প্রতারণা করেছেন। উনি একজন প্রতারক। আমি এজন্য ঢাকার গুলশান থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করব।

এর আগে, বিভিন্ন সময় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় আলোচনায় এসে গ্রেফতার হয়েছেন সৈয়দ আবেদ আলী ও তার ছেলে সোহানুর রহমান সিয়াম। ইতোমধ্যে এই দুইজনসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।