বিদ্যুৎ বিতরণ সম্প্রসারণে একনেকে দুই প্রকল্প অনুমোদন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ঢাকা, বার্তা ২৪.কম
ছবি: ফোকাস বাংলা

ছবি: ফোকাস বাংলা

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একই ধরনের দু’টি প্রকল্পের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

এই দু’টি প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে ২ হাজার ২১৫ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ৪ লাখ ১৫ হাজার নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হবে।

মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এই দুই প্রকল্পসহ মোট ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

একনেক সভাশেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ‘এননেক সভায় যে ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে এরমধ্যে ৫টি নতুন এবং ৪টি সংশোধিত প্রকল্প রয়েছে।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ বিতরণ সম্প্রসারণের লক্ষে গৃহীত দুই প্রকল্প ২০২২ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্পন্ন হলে প্রকল্প এলাকায় শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় চলে আসবে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দেশের প্রতিটি মানুষ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিসেবা পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রংপুর বিভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং পুনর্বাসন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১ হাজার ১২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। জানুয়ারি ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রংপুর উপকেন্দ্রের বিদ্যুৎ সঞ্চালন সক্ষমতা ২২০ মেগাওয়াট বৃদ্ধি পাবে এবং রংপুর বিভাগে ১ লাখ ৮০ হাজার নতুন সংযোগ দেয়া হবে।

এছাড়া বিদ্যুৎ বিতরণের লক্ষে অনুমোদিত অপর প্রকল্প ‘রাজশাহী বিভাগ বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও উপকেন্দ্র সম্প্রসারণ এবং পুনর্বাসন’ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে জুন ২০২২ মেয়াদে বাস্তবায়ন হবে। এতে খরচ হবে ১ হাজার ৯১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এই প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে রাজশাহী উপকেন্দ্রের ৪৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালন সক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি রংপুর বিভাগে ২ লাখ ৩৫ হাজার নতুন সংযোগ দেয়া হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় প্রধানমন্ত্রী শিল্প ও কৃষিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের নিশ্চিত করতে ভূমি মন্ত্রণালয়কে একটি জাতীয় নীতি গঠনের নির্দেশনা দিয়েছেন।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সব মিটার গেজ রেলওয়ে লাইনকে ব্রডগেজে রূপান্তরের পরিকল্পনা তৈরিরও নির্দেশনা দেন।

সভায় প্রধানমন্ত্রী সড়ক, রেলওয়ে ও নৌপথ সমন্বয়ের মাধ্যমে সারাদেশে একটি সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিটি উন্নয়ন প্রকল্পে বর্জ্য শোধনাগার স্থাপনে তার দূঢ় অবস্থানের কথা আবারও পুনর্ব্যক্ত করেন।

একনেক অনুমোদন পাওয়া অপর প্রকল্পসমূহ হলো-রেলপথ মন্ত্রণালয়ের ‘৭০টি মিটার গেজ (এমজি) ডিজেল ইলেকট্রিক (ডিই) লোকোমোটিভ সংগ্রহ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানকল্পে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড স্থাপন (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘কক্সবাজারের লিংক রোড-লাবণী মোড় সড়ক (এন-১১০) চারলেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ‘আরিচা (বরঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-টাঙ্গাইল সড়কের ৬ষ্ঠ কিলোমিটারে ১০৩ দশমিক ৪৩ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প।

এছাড়া ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজিটাল কানেকটিভিটি শক্তিশালীকরণে সুইচিং ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন’ প্রকল্প, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘সৈয়দপুর ১৫০ মেগাওয়াট ১০ শতাংশ সিম্পল সাইকেল (এইচএসডি ভিত্তিক) বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ’ এবং পল্লী বিদ্যুতায়ন সম্প্রসারণের মাধ্যমে ১৫ লাখ গ্রাহক সংযোগ (১৯ দশমিক ৫ লাখ গ্রাহক সংযোগের সংস্থানসহ -১ম সংশোধিত)’ প্রকল্প।

একনেক সভায় মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।

   

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় চট্টগ্রামে যত প্রস্তুতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ মোকাবিলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, সিভিল সার্জন ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১ হাজার ৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র। একই সঙ্গে এক হাজার ১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিভিল সার্জনের উদ্যোগে মোট ২৯৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম।

রোববার (২৬ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খোলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি

শনিবার (২৫ মে) রাতে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চট্টগ্রামে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি এক হাজার ১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বরত উচ্চমান সহকারী হাসিবুল হাসান জানান, শনিবার রাতে প্রথমে ৭৮৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত ছিল। পরে আজ (রোববার) সকালে আরও ২৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্র বাড়ানো হয়েছে। এখন মোট ১০৩৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। পাশাপাশি ১১৪০টি বিদ্যালয় ও নয়টি মুজিব কেল্লা আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সিভিল সার্জনের ২৯৫ মেডিকেল টিম

আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি সিভিল সার্জন চট্টগ্রাম কর্তৃক ইউনিয়ন পর্যায়ে ২০০টি, প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫টি, আর্বান ডিসপেন্সারি ৯টি এবং ৫টি জেনারেল হাসপাতালসহ মোট ২৯৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। মজুত রাখা হয়েছে পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য প্রায় তিন লাখ ট্যাবলেট ও চার লাখ খাবার স্যালাইন।

পাহাড়ি ও উপকূলীয় এলাকায় নির্দেশনা

শনিবার রাতে জেলা প্রশাসনের জরুরি সভায় সন্দ্বীপ, আনোয়ারা, বাঁশখালী, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও কর্ণফুলী উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বিশেষভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে চট্টগ্রামে ব্যাপক বর্ষণ ও পূর্ণিমার কারণে তীব্র জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা থাকায় উপকূলবর্তী এলাকাসমূহ ও পাহাড়ি এলাকা থেকে লোকজনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউএনও এবং এসিল্যান্ডদের নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।

এসময় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ শুকনো খাবার, মোমবাতি, ওষুধ, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও খাবার স্যালাইন মজুদ রয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া বিদ্যমান আশ্রয়কেন্দ্র ও কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার উপযোগী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের নিমিত্তে প্রস্তুত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা শিক্ষা অফিসার ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে অনুরোধ জানানো হয়।

সভায় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, জেলা পরিষদের সকল জনপ্রতিনিধিদের নিজ এলাকায় অবস্থান করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে উপজেলাসমূহে অবস্থিত ডাকবাংলো ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এসময় মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশনা দেন এ জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামান।

প্রস্তুত প্রায় ১৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চট্টগ্রামে প্রস্তুত রয়েছে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৮ হাজার ৮৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক। আছে রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়াও বিএনসিসি ও স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবকগণকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কন্ট্রোল রুম

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সমন্বয়ের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। যার নম্বর ০২৩৩৩৩৫৭৫৪৫।

কৃষি অধিদফতর

চট্টগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে প্রায় ৯০ শতাংশ ফসল কাটা হয়েছে। শনিবার রাতে জরুরি সভায় জেলা প্রশাসক মানুষের পাশাপাশি গবাদি পশু ও অন্যান্য প্রাণীর সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সকলকে নির্দেশনা প্রদান করেন।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রস্তুতি

ঘূর্নিঝড় রিমালের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ছাড়তে মাইকিং করছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। এছাড়া জনগণকে তথ্যসেবা দিতে নগরীর দামপাড়াস্থ চসিকের বিদ্যুৎ বিভাগে চালু করা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম।

দুর্যোগ না কাটা পর্যন্ত শনিবার দুপুরে চালু হওয়া এ কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টা দুর্যোগকবলিত জনগণের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদান করা হবে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর ০১৮১৮৯০৬০৩৮।

চসিকের গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে চসিক সচিব মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, রিমালের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর নির্দেশে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। রিমালের ঝুঁকি না কমা পর্যন্ত কন্ট্রোল রুম থেকে নাগরিকদের তথ্য সেবা দেওয়া হবে। এছাড়া, আমরা রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মাইকিং শুরু করেছি যাতে ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকরা নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান। এছাড়াও, জরুরি প্রয়োজনে বিতরণের জন্য শুকনো খাবার প্রস্তুত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের যত প্রস্তুতি

রোববার সকাল ৯টায় আবহাওয়া অধিদফতর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ নম্বর বিপৎসংকেত ঘোষণার পর সাড়ে ৯টায় চট্টগ্রাম বন্দরে অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, বন্দরে নিজস্ব অ্যালার্ট-৪ জারি করা হয়েছে। বন্দরের সব অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বহির্নোঙরে অবস্থানকারী জাহাজগুলোকে নিরাপদে থাকা এবং বন্দরের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুসরণেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় থেকে চট্টগ্রাম বন্দরকে রক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। বন্দর জেটি থেকে সব জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন সব ইকুইপমেন্ট একস্থানে জড়ো করে নিরাপদে রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জরুরি কন্ট্রোল রুম চালু করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

ঘূর্ণিঝড় রিমাল মোকাবিলায় চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ৮ ঘণ্টা বিমান ওঠানামা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যা দুপুর ১২টা থেকে কার্যকর হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল।

তিনি বলেন, আবহাওয়া সংকেত ৬ থেকে মহাবিপদ সংকেত ৯ এ উন্নিত করার পর ঘূর্ণিঝড় 'রিমাল' মোকাবিলায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এয়ারফিল্ড ঘোষণা করেছে। বিমানবন্দরে আজ দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সব ধরণের বিমান ওঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ তার সম্পদ রক্ষা এবং এর জনশক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সমস্ত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

তিনি আরও বলেন, রাত ৮টার পর আবহাওয়ার পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী সিন্ধান্তের কথা জানানো হবে।

;

ঘুমে ডিস্টার্ব হওয়ায় বাড়ির মালিককে হত্যা করেন ভাড়াটিয়া!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর তেজগাঁও থানার পশ্চিম নাখালপাড়া শিয়া মাজার এলাকায় রনির মালিকানাধীন বাসায় ভাড়া থাকেন মোরশেদ। বাসার মালিক রনি এবং তার বন্ধুদের ‘যন্ত্রণায় ঘুমাতে না পেরে’ রনিকে ভাড়াটিয়া মোরশেদ ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

এ ঘটনায় রনি হত্যা মামলার প্রধান আসামি মোরশেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন।

মোহাম্মদ মহসীন বলেন, রনি হত্যা মামলার আসামি মো. মোরশেদ আহম্মেদ (৩৭) কে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার চর ভাটিয়ালি এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার মোরশেদ জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ থানার চর ভাটিয়ালি গ্রামের মৃত শহীদ আহম্মেদের ছেলে। 

তিনি বলেন, মোরশেদ যে বাসায় ভাড়া থাকেন রনি সেই বাসার মালিক। রনি এবং তার বন্ধুদের ‘যন্ত্রণায় ঘুমাতে না পেরে’ রনিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন মোরশেদ।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন বলেন, মোরশেদ তেজগাঁও থানার পশ্চিম নাখালপাড়া শিয়া মাজার এলাকায় ভাড়া থাকেন। তিনি যে বাসায় ভাড়া থাকেন সেই বাসার মালিক রনির পরিবার। মোরশেদকে যে কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয় সেই কক্ষেই রনি ও তার বন্ধুরা তাস খেলেন, মাদকসেবন করেন। তাদের এই খেলার জন্য মোরশেদকে প্রায়ই দেরিতে ঘুমাতে হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার বাকবিতণ্ডাও হয়। গত ২৫ মে রাতেও সেই কক্ষে রনি তার বন্ধু মশিউর, বায়জুদুল ইসলাম, একিন, অবিতকে নিয়ে খেলছিলেন। পরে মোরশেদ আসার পর তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে মোরশেদ ছুরি দিয়ে রনিকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এসময় রনির বন্ধুরা চিৎকার করলে রনির ভাই রফিক ছুটে আসেন। তিনি বাধা দিতে চাইলে তাকেও ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান মোরশেদ। গুরুতর আহতাবস্থায় রনি ও রফিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রনিকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরপরই জামালপুর পালিয়ে যান মোরশেদ। পরে পুলিশ কৃষকের ছদ্মবেশে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।

;

ঘূর্ণিঝড়ের নাম যেভাবে ‘রিমাল’ হলো!



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিভিন্ন সময়ে ঘূর্ণিঝড়ের নাম আমরা বিভিন্ন রকম হতে দেখেছি। এবারও তেমনি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’! এর আগেও দেখেছি বিভিন্ন সময় ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড়ের নাম রাখা হয়েছে, ‘আইলা’, ‘আমফান’, ‘মোখা’ ইত্যাদি।

২০০৪ সালে ভারত মহাসাগর অঞ্চলের জন্য ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণে একটি কমিটি করা হয়। ৮টি দেশ নিয়ে তখন একটি কমিটি গঠন করা হয়। এগুলি হচ্ছে- বাংলাদেশ, ভারত, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড। পরে ২০১৯ সালে ইরান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইয়েমেন নামকরণ কমিটিতে যুক্ত হয়।

যখন একটি ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়, তখন এই ১৩টি দেশ তাদের ক্রম অনুসারে নাম নির্ধারণ করে। সোমালিয়ায় যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে, তার নামকরণ করেছিল ভারত, যার নাম ছিল ‘গতি’।

একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ঘুর্ণিঝড় বিপর্যয়ের নামকরণ করেছে বাংলাদেশ। এবার ২০২৪-এ ‘রিমাল’-এর নামকরণ করেছে ওমান।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘রিমাল’ নামটি ওমানের দেওয়া। এবারের ঘূর্ণিঝড়ের আনুষ্ঠানিক নামকরণের দায়িত্ব ছিল ওমানের। ‘রিমাল’ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হচ্ছে-‘বালু’।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার অধীনে আরব মহাসাগর ও ভারত মহাসাগরের উত্তরাঞ্চলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণের জন্য একটি কমিটি রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ এমনভাবে করা করা হয়, যাতে সাধারণ মানুষ ঘূর্ণিঝড়ের নাম মনে রাখতে ও শনাক্ত করতে পারেন।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) এশিয়ার জন্য জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিশন এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের জন্য জাতিসংঘের ‘ওয়ার্ল্ড মেট্রোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন’ (ডব্লিউএমও) কিছু নিয়ম তৈরি করেছে। ১৯৫৩ সাল থেকে আটলান্টিক মহাসাগর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণের অনুশীলন শুরু হয়। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ২০১৪ সাল থেকে নামকরণের অনুশীলন শুরু হয়

;

বাগেরহাটে 'রিমালে'র আঁচ পড়তে শুরু করেছে, আশ্রয়কেন্দ্রে ছুঁটছে মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে মোংলায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এর ফলে মোংলা বন্দরে নিজস্ব এলার্ট -‘৪’ জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। বন্ধ রয়েছে মোংলা বন্দরে অবস্থান করা জাহাজে পণ্য ওঠানামার কাজ। এছাড়া ঝড়ের কবলে পড়ে দুর্ঘটনা এড়াতে বন্দরে ৬টি বাণিজ্যিক জাহাজ নিরাপদে নোঙ্গরে রাখা হয়েছে। 

এদিকে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে রোববার (২৬ মে) দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। দমকা বাতাসও বইছে। ১০৩টি আশ্রয় কেন্দ্রে ছুঁটছেন দুর্গতরা।

মোংলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, সুন্দরবন সংলগ্ন ও পশুর নদের পাড়ে বসবাসকারী উপকূলবাসীদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনার জন্য সব কিছুই করা হচ্ছে। তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাবারেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এখনও যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেনি তাদেরকে আনার জন্য তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এছাড়া সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলে সতর্ক মাইকিং প্রচারণা অব্যাহত রয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের বাসিন্দারা। তারা সুন্দরবনের পাশেই বসবাস করেন। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গাজী আকবর হেসেন বলেন, 'তার ইউনিয়নে ২৫টি আশ্রয়কেন্দ্রের প্রায় সবগুলোতেই উপকূলবাসীকে আনা হচ্ছে। ২৫টি কেন্দ্রের জন্য খিচুড়িসহ শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করেছি'।

মোংলা কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট মুনতাসীর ইবনে মহসীন জানান, 'শনিবার (২৫ মে) থেকেই আমরা সতর্ক রয়েছি। উপকূলবাসীকে প্রতি মুহূর্তে সচেতন করার লক্ষ্যে সতর্কমূলক প্রচার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রোববার (২৬ মে) ভোর থেকে মোংলার পশুর নদে ও সুন্দরবন তীরবর্তী এলাকায় আমাদের সদস্যরা অবস্থান করছে। যে কোন পরিস্থিতি সামাল দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি।'

;