চট্টগ্রামে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ারা ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মী
চট্টগ্রামে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নামা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সংঘর্ষের সময় পাঁচ তলা ভবনের ছাদ থেকে কয়েকজনের পড়ে যাওয়ার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। ভবনের পাইপ ও লাফ দিয়ে পড়ারা সবাই ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিকেল সাড়ে চারটায় প্রথম দফা সংঘর্ষের পর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বেশিরভাগ নেতাকর্মীরা মুরাদপুর ছেড়ে ষোলশহরের দিকে চলে যান। আর মুরাদপুরে সড়ক দখলে নেন আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের অন্তত ২৭জন মুরাদপুর মোড়ের বেলাল মসজিদ গলির মিয়াদাদ ম্যানশনের ছাদে আশ্রয় নেন। পরে তাদের অবস্থান বুঝতে পেরে আন্দোলনকারীদের একটি দল সেই পাঁচতলা ভবনের ছাদে ওঠে তাঁদের ওপর হামলা চালান।
মঙ্গলবার বিকেলে সংঘর্ষের সময় সরেজমিনে দেখা যায়, আন্দোলনত কয়েকশ শিক্ষার্থী মুরাদপুর মোড়ে অবস্থান নিয়ে মিছিল-স্লোগান দিচ্ছিল। ষোলশহর মোড় থেকে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা আসলে তাদের ধাওয়া দিয়ে পাঠিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এরই মধ্যে মিয়াদাদ ম্যানশনের ছাদে আশ্রয় নেওয়া ছাত্রলীগ-যুবলীগের কয়েকজন নিচে অবস্থান করা ছাত্রদের দিকে ঢিল ও ফুলের টব ছুঁড়ে মারেন। এতে তাদের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যান আন্দোলনকারীরা। পরে তারাও পাঁচ তলার ছাদ লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়তে থাকেন। এ সময় বেলাল মসজিদ ও পাশের একটি ভবনের বেশ কিছু কাচের জানালা ভেঙে যায়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়লে আন্দোলনকারী ছাত্রদের একটি দল সেই ভবনের গেট ভেঙে ছাদে ওঠে যান। এরপর লাঠিসোটা নিয়ে আটকা পড়া ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীদের বেধড়ক পেটাতে থাকেন। মার থেকে বাঁচতে এ সময় অনেকেই ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে নামতে থাকেন। নামতে গিয়ে দুজন চার তলা থেকে নিচে পড়ে যান। পরে ভবন থেকে দুই দফায় চারজনকে নামিয়ে পেটানো হয়। সেখানে আটকা পড়া বেশিরভাগই চট্টগ্রাম কলেজ ও সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী বলে জানা গেছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জাহিদ হাসান জানান ওই ভবনে অন্তত ২৭ জন নেতা-কর্মী ছিলেন। সেখানে তাঁদের আটকে রেখে মারধর করা হয়েছিল। কয়েকজন গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আহতদের মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসীন কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জালাল উদ্দীন জুবায়ের ও ৫ নম্বর মোহরা ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা ধীমান সেন গুপ্ত।