‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ’
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ণ, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকে সক্রিয়করণ এবং বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অধিকার নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে ক্রিশ্চিয়ান এইড বাংলাদেশ। সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ইএলএমসি এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সকল প্রকার বৈষম্য দূর করার উদ্দেশ্যে কাজ করা হয়।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘এমপাওয়ারিং লেফট বিহাইন্ড মাইনোরিটি কমিউনিটি (ইএলএমসি)’ প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে এসব তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংখ্যালঘু অধিকার এডভোকেসির একটি কৌশলগত রোডম্যাপ উপস্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পের সম্মিলিত শিক্ষা এবং সর্বোত্তম অনুশীলন তুলে ধরা হয়। রোডম্যাপে প্রকল্পের ভিত্তি গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের দ্বারা ক্রমাগত অ্যাডভোকেসি এবং রিসোর্স মোবিলাইজেশন-ফান্ডিং এবং প্রোগ্রামেটিক দিকনির্দেশনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়।
ক্রিশ্চিয়ান এইড এর কারিগরী সহযোগীতায় এবং ইউরোপিয়ান কমিশনের আর্থিক সহযোগিতায় কনসোর্টিয়াম মেম্বার হিসেবে ব্লাস্ট, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েল সোসাইটি, নাগরিক উদ্যোগ এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের ৩টি বিভাগের মোট ৮টি জেলায় ৪২ মাস মেয়াদী এমপাওয়ারিং লেফট বিহাইন্ড মাইনোরিটি কমিউনিটি (ইএলএমসি) নামক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে।
ঢাকা শহরের পাশাপাশি রাজশাহী, নওগাঁ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, খুলনা, যশোর এবং সাতক্ষীরায় প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে। এই প্রকল্পের লক্ষ্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ৬ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে ১৮ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানো। এই প্রকল্পের লক্ষ্য গোষ্ঠীগুলি হল দলিত অধিকার সিএসও এবং সিবিও, হিজরা অধিকার সিএসও এবং সিবিও, নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু বিশেষত সমতল ভূমির আদিবাসী অধিকার সিএসও এবং সিবিও, পরিবর্তন এজেন্ট (সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দল), উপজেলা-স্তরের অ্যাডভোকেসি ফোরামের সদস্য, জেলা-স্তরের অ্যাডভোকেসি ফোরাম সদস্য, ডিবিশনাল লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড (এলএনওবি) জোটের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম তার বক্তব্যে এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরো নিবন্ধনের সময় সিভিল সোসাইটি সংস্থাগুলো যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হয় এবং এই ছোট সম্প্রদায়-ভিত্তিক সংস্থাগুলোর জন্য সহায়তার প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে দৃঢ়ভাবে তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত নাগরিক উদ্যোগের প্রধান নির্বাহী জাকির হোসেন বলেন, আমরা কেবল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করতে পারি না বরং তাদের অধিকারের জন্য তাদের সাথে সমানভাবে কাজ করতে হবে। সম্পদের ক্ষমতায়নই প্রকৃত ক্ষমতায়ন যা আমাদের এই সম্প্রদায়ের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের ডিজি কেয়া খান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সবাইকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সরকারের একার পক্ষে সবকিছু অর্জন করা সম্ভব নয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে সরকারের আরও কয়েকটি উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল ইতিবাচক পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলেন, স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সমাজ এবং স্মার্ট অর্থনীতি যা আমাদের দেবে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এনজিও অ্যাফেয়ার্স ব্যুরোর ডিজি সাইদুর রহমান, সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসানসহ প্রমুখ।
এতে প্রতিটি স্টেকহোল্ডার গ্রুপের জন্য মূল টেকওয়ে নিয়ে আলোচনা করা হয়, পরবর্তীতে রাজশাহী, খুলনা এবং সিলেট বিভাগ জুড়ে সংখ্যালঘু অধিকারের জন্য করা কাজগুলো প্রজেক্ট ইমপ্যাক্ট ভিডিও দেখানো হয়। অংশীদার সংস্থাগুলো বিগত সাড়ে ৩ বছরে তাদের কৃতিত্বগুলো এক্সটার্নাল স্টেকহোল্ডারদের কাছে প্রদর্শন করার সুযোগ পায়।