কোটা আন্দোলন: ছেলেকে আটকের সময় বাবার মৃত্যু

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সাইফ মোহাম্মদ আলী

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সাইফ মোহাম্মদ আলী

লক্ষ্মীপুরে কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী সাইফ মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কিত হয়ে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার বাবা সামছুল আলম মামুন (৫২) মারা গেছেন। আটক শিক্ষার্থীকে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতারা দেখানো হয়।

পরে আবেদনের প্রেক্ষিতে বাবার জানাজায় অংশ নিতে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) বিকেল ৫টা পর্যন্ত তাকে প্যারোলে জামিন দেয় আদালত।

বিজ্ঞাপন

নিহত মামুন লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের মজুপুর এলাকার কালু হাজি সড়কের বাসিন্দা ও পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। গ্রেফতার আলী চন্দ্রগঞ্জ কফিল উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

স্থানীয়রা জানায়, লক্ষ্মীপুরে কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের কর্মসূচিতে আলী অংশ নিয়েছিল। সোমবার রাতে আলীকে আটক করতে পুলিশ তার বাসায় অভিযান চালায়। ঘটনার সময় আলী ঘুমে ছিল। পরে তাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে যান। এ সময় ছেলেকে না নিতে তার বাবা মামুন বাধা দেয়। ছেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে কি না তাও বলেনি পুলিশ। ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার সময় অচেতন হয়ে পড়ে মামুন মারা যান।

বিজ্ঞাপন

পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, পুলিশের দায়ের করা নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আলীকে আদালতে পাঠানো হয়। এতে আদালতে তার পক্ষে আইনজীবী জামিন আবেদন করেন। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান বিষয়টি আমলে নেন। পরে সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় আলীকে বাবার জানাজায় অংশ নিয়ে নির্দিষ্ট সময় (মঙ্গলবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত) দিয়ে জামিন দেন।

আসামির আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। কোনো মামলা ছাড়াই পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পুলিশ তাকে নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে। আটকের বিষয়টি তার বাবা মামুন সহ্য করতে পারেননি। এতে আতঙ্কিত হয়ে তিনি মারা যান। ঘটনাটি উপস্থাপন করে আমরা আদালতে আলীর জামিন চেয়েছিল। আদালত তাকে জানাজায় অংশ নিতে তাকে জামিন দিয়েছে।

গ্রেফতার আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে রাজনীতি করে না। তার নামে কোনো মামলাও ছিল না। পুলিশ জোর করে তাকে তুলে নিয়ে যায়। তা সহ্য করতে না পেরে আমার স্বামী মারা গেছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদার সাংবাদিকদের বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। একই ঘটনায় আরও ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলছে।