টাঙ্গাইলে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে শিক্ষার্থীদের মিছিল, পুলিশের বাধা
কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও ‘হত্যার’ বিচার দাবিতে টাঙ্গাইলে মাথায় লাল কাপড় বেঁধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে শহরের রেজিস্ট্রিপাড়া এলাকায় শাহীন স্কুলের সামনে থেকে ১০-১২ জন শিক্ষার্থী মিছিল বের করেন। পরে মিছিলটি বিন্দুবাসিনী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের বাধায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা মঙ্গলবার সকল শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষদের মুখে এবং চোখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তুলে সেটি অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় টাঙ্গাইলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাথায় লাল কাপড় বেঁধে মিছিল বের করে।
এদিকে, শহরে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি, র্যাব ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।
অপরদিকে, টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সকালে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ তথ্য জানান। মাভাবিপ্রবির কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থীরা ঢাকার নেতাদের সঙ্গে জুম মিটিং শেষে এ সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেন। ওই জুম মিটিংয়ে অংশ নেন কোটা সংস্কারের দাবিতে ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে থাকা অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফিহাদ হোসেন, বিএমবি বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুখী আক্তার, জুনায়েদ আলী প্রমুখ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হওয়ায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেন এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা টানা কয়েকটি দিন শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। গত ১৭ জুলাই হল বন্ধ করে দেওয়ার পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাসায় চলে যায় এবং কোনো প্রকার আন্দোলন, বিভিন্ন সরকারি স্থাপনায় হামলা বা কোনো প্রকার সহিংসতার সঙ্গে তারা কোনোভাবে সম্পৃক্ত হয়নি। সংঘটিত সহিংসতার সঙ্গে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক নেই।
তারা জানান, এমতাবস্থায় কোটা সংস্কার হওয়ায় আদালতের রায়ের প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। কোটা সংস্কারের দাবি আদায়ে যে সকল শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, দাবি আদায়ের জন্য যারা রক্ত দিয়েছেন, তাদের যেন সরকারের পক্ষ থেকে পূর্ণ সহায়তা এবং সঠিক তদন্ত করে ন্যায় বিচার পাইয়ে দেওয়া হয়, সেজন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।
এতে কাউকে যেন হয়রানি বা মিথ্যা মামলায় জড়িত না করা হয়, তার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তা কামনা এবং অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।