ভাগ্য বদলের স্বপ্ন নিয়ে স্থানীয় রঞ্জু মিয়া নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা খরচ করে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়ে প্রতারিত হয়েছেন হাবিব উল্লাহ (৩২) ও মো. শাহজাহন (২২)। সম্পর্কে তারা দুজন মামা-ভাগ্নে। বর্তমানে সৌদি আরবে আরেক প্রতারকের খপ্পরে পড়ে তালাবদ্ধ অবস্থায় খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন তারা।
পরিবারের কাছে ভিডিও কলে প্রবাসে বন্দি জীবনের বর্ণনা জানিয়ে নিজেদের উদ্ধার ও দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, ময়মনসিংহের নান্দাইলের গাঙ্গাইল ইউনিয়নের পাঁচগয়েমপুর গ্রামের বাসিন্দা আলী আকবর ছেলে হাবিব উল্লাহ ও গিয়াস উদ্দিনের ছেলে মো. শাহজাহান ১০ লাখ টাকা দিয়ে গত ১৩ নভেম্বর সৌদি আরবে যান। বাংলাদেশ থেকে রঞ্জু মিয়া নামের এক ব্যক্তি তাদের পাঠালেও ওই দিন সৌদি আরবের রিয়াদে পৌঁছানোর পর দুজনকে রিসিভ করেন সেখানকার দালাল আলম মিয়া। গত কয়েক দিনে ঘুরেফিরে ওই এলাকার তিনটি জায়গায় রাখা হয়েছে তাদের। বিদেশে পাঠানো ব্যক্তির কথামতো কোনো ধরনের কাজ পাননি তারা।
কোনো ধরনের কাজ না পেয়ে তারা দেড় মাস ধরে আটক থাকা অবস্থায় শুধুই ডালের পানি দিয়ে ভাত খেয়ে জীবন পার করছেন। পরিবারের লোকজন এ অবস্থার কথা শুনে ও মোবাইলে দৃশ্য দেখে পাগলপ্রায়। বিদেশে পাঠানো দালাল রঞ্জু মিয়াও এখন লাপাত্তা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভিডিও কলে কান্নায় ভেঙে পড়ে শাহজাহান তার পরিবারকে বলেন, ‘আমি বাঁচতে চাই। দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করো।’
শাহজাহান আরও বলেন, তারা দেড় মাস ধরে আটক রয়েছেন রিয়াদের সোলাই-১৫ এলাকায়। হয়তো নির্ধারিত সময়ের পর এখানকার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী গ্রেফতার করে নিয়ে যাবে।
পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, বিদেশে নেওয়ার আগে দালাল রঞ্জু মিয়া জানিয়েছিলেন, যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমপক্ষে ৪০ হাজার টাকা বেতনের কাজ পাবেন। কিন্তু সৌদিতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা। এ অবস্থায় রঞ্জুকে খোঁজ করে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। ফোন করলেও তিনি ধরেন না।
সৌদিতে থাকা প্রতারণার শিকার শাহাজানের স্ত্রী শরমিন জানান, স্বামীর মোবাইলে ভিডিও কল দেন। স্ত্রীকে দেখেই কান্নায় ভেঙে পড়ে শাহজাহান বলেন, 'আমি বাঁচতে চাই, দেশে যাওয়ার তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করো।'