ধামরাইয়ে মিছিল নিয়ে বাড়িতে ভাংচুর, মন্দিরে হামলার চেষ্টা
ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে মিছিল নিয়ে একটি বসতবাড়িতে ভাংচুর ও হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া সেখানে থাকা একটি মন্দিরেও ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়।
সোমবার (৫ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধার দিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা আজিজুল হকের নেতৃত্বে একটি মিছিল গিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী একটি বাড়িতে এ হামলা চালায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটিতে প্রবেশের লোহার মূল গেট ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বাড়িটিতে থাকা টিনের ঘরে ঢোকার গেটটি ভাঙা হয়েছে। বারান্দার পাশে থাকা তিনটি কক্ষের তিনটি জানালার থাই গ্লাস ভাঙা হয়েছে। কাঁচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে পুরো বারান্দা জুড়ে। ঘরের ভেতরেও শোবার খাটে কাচের টুকরা দেখা যায়। ঘরে থাকা একটি টিভি ভাঙা দেখা যায়। বাড়িটিতে থাকা দুর্গা মন্দিরের সামনে কয়েকটি চেয়ার ভাঙা দেখা যায়। আর বাড়ির বাইরে থাকা গ্যারেজের দুটি প্রাইভেট কারের সব কাঁচ ভাঙা দেখা যায়।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, সন্ধ্যার দিকে ১০০-১৫০ জনের একটি দল মিছিলসহ এসে গালিগালাজ করে সেখানে ভাংচুর করে। প্রায় ১৫-২০ মিনিট ভাঙচুরের পর তারা পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ওই বাড়ির মালিক মীনা রানি দাস বলেন, ঘরে নিজেদের মতো ছিলাম। হঠাৎ করে ১০০-১৫০ জন লোক আসলো, আইসাই ভাংচুর শুরু করলো। রুমে থেকে দৌড়ে এক রুম থেকে আরেক রুমে গেছি। তারপরও ভাঙ্গাভাঙ্গি করছে। ভয়ে চুপ করে অন্য ঘরে ছিলাম। অনেক গালাগালি করছে। প্রায় ১০-১৫ মিনিট ধরে ভাঙচুর কইরা তারা চলে যায়। ভাঙচুরে বাড়ির সব জানালার কাঁচ চুরমার হয়ে গেছে। একটা টিভি ভাংছে। সোফা, খাট ভাংছে। দুইটা গাড়ি ভাঙছে। মন্দিরের সামনে যায়া মন্দিরও ভাঙার চেষ্টা করছে। কিন্তু তালা ভাঙতে পারে নাই।
তার ছেলে ডা. অনন্ত দাস বলেন, আমরা সবাই ঘরে বসে ছিলাম। তারপর হঠাৎ করে গেটে বাড়ি দেওয়া হচ্ছে শব্দ পাই। মানুষ জনের শব্দ শুনে বাড়ির সবাই অন্য একটা কক্ষে আশ্রয় নেই। তারা বারান্দায় ঢুকে সব জানালা ভাঙচুর করে। দরজা বন্ধ ছিল। কিন্তু জানালার কাঁচ ভেঙে সেখান দিয়ে বড় বাঁশ ঢুকিয়ে একটা টিভি ভাঙচুর করে। গ্যারেজে থাকা দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে। যখন আওয়াজ কমলো তখন বাইরে এসে এসব ভাঙচুর দেখলাম। মন্দিরের গেটে তালা ছিল ঢুকতে পারেনি। তবে চেয়ারসহ আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। সাম্প্রদায়িকতার কারণে এ ভাঙচুর করে থাকতে পারে। আমরা হিন্দু এটাই অপরাধ। তারা মালাউনসহ বিভিন্ন অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমরা খুবই অনিরাপদ বোধ করছি।