কোটা সংস্কার আন্দোলনে সরকার পতনের পর প্রথম শুক্রবার বাজারে দেখা গেল স্বস্তির ছোঁয়া। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে শাক-সবজি থেকে শুরু করে মুরগি ও ডিমের দামও কমতে শুরু করেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি পণ্যের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে অন্তত ২০-৩০ টাকা।
শুক্রবার (৯ আগষ্ট) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, গত সপ্তাহে যে করলা বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা কেজি তা আজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা মূল্যে। এছাড়া বেগুন ৭০ টাকা কেজি, ক্যাপসিকাম ২৪০ টাকা কেজি, লেবুর হালি ২০ টাকা, পটল ৪০ টাকা কেজি, শসা ৮০ টাকা কেজি, মিষ্টি কুমড়া প্রতি পিস ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা কেজি, আলু ৬০ টাকা কেজি, জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা, পেয়াজ ১১০ টাকা কেজি, টমেটো ১৪০ টাকা কেজি, আদা ২৮০ টাকা কেজি, রসুন ২২০ টাকা কেজি, ভেন্ডি ৪০ টাকা কেজি, কচুর গাটি ৭০ টাকা কেজি, পেঁপে ৪০ টাকা কেজি, কাচ কলা ৩০ টাকা হালি, কচুর লতি ৫০ টাকা ও বরবটি ৭০ টাকা কেজি।
এদিকে ঠিকঠাক সরবরাহ থাকায় এবং রাস্তায় চাঁদাবাজি না থাকায় দাম কমতে শুরু করেছে মুরগির দাম ৷ বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা কমে ১৭০ টাকায় আর সোনালি মুরগি ৩০ টাকা কমে ২৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে দেশি মুরগির দাম। প্রতি কেজি দেশী মুরগি ৫৫০ টাকা, এছাড়া গরুর মাংস ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১১০০ টাকা করে।
এদিকে ডিমের দামেও মিলেছে স্বস্তির ছোয়া। গত সপ্তাহের চাইতে এই সপ্তাহে ডিমের দাম কমেছে। ফার্মের লাল ডিম প্রতি ডজনে ৬ টাকা কমে ১৪৪ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। আর সাদা ফার্মের ডিম প্রতি ডজন ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে সরবরাহ কম থাকার অজুহাতে এখনো বাড়তি মাছের দাম। যে রুই মাছ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৩৬০ টাকায় তা আজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায়। আর ইলিশের দামেও প্রতি কেজিতে বেড়েছে অন্তত ২০০ টাকা। যে ইলিশ গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ১৫০০ টাকা তা আজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজ সামুদ্রিক চিংড়ি ১৫০০ টাকা, বাতাসি মাছ ১২০০ টাকা, বড় বাইলা ১২০০ টাকা, চিংড়ি ৯০০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৮০-২২০ টাকা, টেংরা ৪৫০ টাকা করে।
কারওয়ান বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী মো. হাসান বার্তা ২৪ কে বলেন, বাজারে মুরগিসহ প্রায় সকল পণ্যের দাম ইতিমধ্যে কমতে শুরু করেছে। তার মতে স্বাভাবিক পণ্যের সরবরাহ থাকলে আর রাস্তায় চাঁদা বন্ধ হলে দাম আরও কমবে। মুরগি ব্যবসায়ী হাসান জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে রাস্তায় মালামাল আনতে এখন আর রাস্তায় চাঁদা দিতে হচ্ছে না।
এদিকে কারওয়ান বাজারে বাজার তদারকি করতে দেখা যায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের। আমিনা আক্তার নামে ফার ইষ্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী বলেন, আমরা গণমাধ্যমে দেখেছি বাজারে পণ্যের দাম কমেছে কিন্তু বাজারে এসে দেখি তার উল্টো চিত্র।
তিনি বলেন, হাসিনার যেদিন পতন হয়েছে তারপর থেকে বাজারে পণ্যের দাম কমার সংবাদ থাকলেও তা বাস্তবে নেই। তাই সাধারণ মানুষের জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত মনিটরিং করবে। এছাড়াও কোথায় কোথায় গ্যাপ রয়েছে তা খুঁজে বের করতে হবে।