চট্টগ্রাম নগরীর লালদীঘির কে সি দে সড়কে অবস্থিত হোটেল সাউদিয়া নামের একটি আবাসিক হোটেলে ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১১ আগস্ট) ভোররাত পাঁচটার দিকে একদল ডাকাত ওই হোটেলে হানা দিয়ে ভাঙচুর করে ক্যাশ থেকে টাকা লুট করেন। ওই সময় বাঁধা দিতে আসলে ডাকাতেরা হোটেলের নিরাপত্তারক্ষীকে মারাত্মকভাবে আহত করেন।
বিজ্ঞাপন
হোটেল সাউদিয়ার ম্যানেজার শাকিল আহমদ বলেন, ভোররাতে একদল দুর্বত্ত টেম্পু ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে এসে হোটেলের নিচে অবস্থান নেয়। পরে তারা হঠাৎ করে হোটেলের নীচতলার গেট ভেঙে ওপরে উঠে পড়েন। পরে আমাকে জিম্মি করে ক্যাশে থাকা টাকা লুট করেন। এরপর হোটেলের বোডারদের খুঁজে ২৬টি রুমের দরজা, জানালা ভেঙে তচনছ করে ফেলে। সামনে যা পেয়েছে তাই নিয়ে গেছে। তাদের বাধা দিতে আসলে নিরাপত্তারক্ষী শাহ আলমকে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে।
এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হোটেল সাউদিয়ার মালিক মাহমুদ আলম পান্না। তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখেছি হোটেলে হানা দেওয়া দুর্বৃত্তরা ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সী। তাদের হাতে অস্ত্র, লোহার হাতল ও হকিস্টিক ছিল। এ বিষয়ে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি রফিকুল ইসলাম-এর নেতৃত্বাধীন একটি উচ্চ প্রতিনিধি দল।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দলটির মহাসচিবের সাথে ব্যবসায়ী নেতারা সাক্ষাৎ করেন।
সাক্ষাতকালে বিজিএমইএ সভাপতি বিএনপি নেতাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে গার্মেন্ট শিল্পের মধ্যে কোনো গোষ্ঠী একধরনের অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান-এর নির্দেশে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং দলের সকল স্তরের নেতাকর্মী সার্বক্ষণিক আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। কোথাও কোথাও নেতাকর্মীরা আমাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে পাহারা দিয়েছন।
সাক্ষাতকালে বিজিএমইএ নেতাদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম স্বরাষ্ট্র সচিবের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন। পরে মির্জা ফখরুল নেতৃবৃন্দকে বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমাধানে এগিয়ে আসতে হবে। অর্থনীতি, রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে।
বিজিএমইএ নেতারাদের সাথে সাক্ষাতকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সাথে ছিলেন সাবেক বাণিজ্য মন্ত্রী বিএনপি স্হায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।
বিজিএমইএ সভাপতির সাথে সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিব, সহ-সভাপতি রকিবুল আলম, পরিচালক শোভন ইসলাম, নুরুল ইসলাম, আবসার হোসেন, সাবেক সভাপতি এস এম ফজলুল হক, কাজী মুনির, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন ও আবুল কালাম উপস্থিত ছিলেন।
ভারত থেকে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য পাচারকালে ভারতীয় মদ, বাংলাদেশী ট্রাক এবং ২ চোরাকারবারীকে আটক করেছে বিজিবি।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর ) ভোমরা চেকপোষ্ট থেকে ট্রাকটি তল্লাশী করে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন, মাদারীপুর জেলার পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামের ননী গোপাল দে'র ছেলে গৌতম দে, মাদারীপুর জেলার পূর্ব চিরাইপাড়া গ্রামের আইয়ুব আলী বেপারীর ছেলে আল-আমিন।
সাতক্ষীরা ব্যাটালিয়ন (৩৩ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আশরাফুল হক জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ভোমরা স্থল বন্দর দিয়ে ভারত হতে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য পাচার হবে। উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে ভোমরা স্থল বন্দরের চেকপোষ্ট এলাকায় ভোমরা বিওপির না. সুবে. মো. জহিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে ভোমরা চেকপোস্ট থেকে বৈশাখী ট্রেডার্স এর ১টি খালি ট্রাক ও ১৯ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়। এ সময়ে অবৈধ মাদকদ্রব্য পাচারের দায়ে ট্রাকের দুইজন চালককে আটক করা হয়। আটককৃত ট্রাকের নাম্বার- ঢাকা মে্ট্টো ট-১৬২০৮২।
এ ব্যাপারে আটককৃত আসামিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে সাতক্ষীরা সদর থানায় মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আনারসকে ঘিরে জমে উঠেছে রংপুরের বিভিন্ন বাজারের ফল ব্যবসা। ছোট-বড় দোকান থেকে শুরু করে ভ্যান কিংবা রাস্তার পাশে দাড়িয়েও আনারস বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। অন্যান্য সময় থেকে দাম একটু কম হওয়ায় ক্রেতাদেরও রয়েছে বেশ ভিড়। মৌসুমের শুরু থেকেই আনারসের চাহিদা বাজায়ে রয়েই গেছে।
নগরীর টাউন হল সাথেই আনারসের পাইকারি বাজার। এখান অনেক দূর থেকে এসেও বিক্রেতারা কেনা-বেচায় ব্যস্ত হয়ে পরেন। বিশেষ করে এলাকার ছোট-বড় দোকানদার ও ভ্যানে করে আনারস বিক্রি করা ব্যবসায়ীদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। আনারস পিসপ্রতি কিছুটা লাভের আশায় পাইকারি এই বাজারে সকাল থেকে ভিড় জমে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসাধারণের।
সিটি বাজার থেকে আনারস কিনতে আসা ক্রেতা রমজান আলী বলেন, এ্যালা যত গরম পলছে ঘরোত সউক গুলারই জ্বর ধরছে। আনু বাজারোত আনারস কিনিম বুলি। দ্যাখো দামও কম নোয়ায়। এ্যালা আর কি করি নেওয়ায় খাইবে। এইজইনতে ৬০ ট্যাকা দি নিনু এখান আনারস।
নগরীর মাহিগঞ্জের আনারস ব্যবসায়ী মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, পেট চালাতে ভ্যানে করি আনারস ঝালাই নিয়া গ্রামের মোড়ে মোড়ে বিক্রি করি৷ এখান থাকি আনারস কিনলে ৫-১০ টাকা হইলেও কম পাওয়া যায় ওইটাই লাভ৷ আনারসে আকার মত কোনোটা ২০ থেকে ৪০ টাকা করে কিনি। কিন্তু বাজারে এইটাই ৫০-৬০ টাকা। তাই প্রতিদিন এখান থাকি কিনি ব্যবসা করি।
খুচরা ব্যবসায়ী রাসেল মিয়া বলেন, আনারসের মৌসুমের শুরু থাকি ১৪ হাজার আড়াই হাজার পিসেরও বেশি বিক্রি করছি আনারস। কেনা পরছে ২০-৪০ টাকা বিক্রি করি ১০ টাকা লাভে৷ আনারসের চাহিদা খুব, প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৩৫০ টা আনারস বিক্রি করি৷
নগরীর বেতপট্টিতে ভাসমান আনারস বিক্রেতা জাহিদ বলেন,আকার অনুযায়ী আনারসের দাম ৩০-৫০ টাকা। লাভ কম করি সেল বেশি হয়। প্রতিদিন অনায়াসে ১০০ পিস আনারস বিক্রি হয়। সেই সাথে আনারস ঝালাইের চাহিদা প্রচুর দম ফেলাতে পারিনা। ১০-২০ টাকার করে ঝালাই রাত পর্যন্ত। বিকেল থাকি ব্যবসাটা বেশি ভালো হয় শহরে লোকসমাগম বাড়ে।
পাইকারি বাজারের আনারস ব্যবসায়ীরা বলেন, সরাসরি আনারসের আড়ত থেকে আনি হাজার হাজার পিস আনারস। গড়ে পিস প্রতি পরে ২০ টাকা পড়েছে। এখানে যেমন বড় আনারস আছে, তেমনি ছোটও আছে। আমি তিনটি ভাগে আনারস বিক্রি করছি। যেগুলো একটু বড় সেগুলো ৫০ টাকায়, মাঝারি সাইজ ৪০ টাকায় এবং তুলনামূলক ছোট আনারস ২০ টাকায় বিক্রি করছি। তবে পচনশীল পন্য যেহেতু সেল বেশি হওয়ার জন্য খুব বেশি লাভ না করেই ছেড়ে দিচ্ছি।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী কার্যালয়। আধুনিক স্থাপত্যে নির্মিত এই ভবনটি বছরখানেক আগেই উদ্বোধন করেন দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের বছর পেরোতেই এখন ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে এই কার্যালয়টি।
উদ্বোধনের পর থেকেই নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতিতে কার্যালয়টি সরগরম থাকতো দিন রাত ২৪ ঘণ্টায়। তবে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে জনরোষে পড়ে এই ভবনটি। উত্তেজিত জনতা সেদিন কার্যালয়টি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেই।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) কার্যালয়টির বর্তমান অবস্থা দেখতে গেলে এমনই চিত্র পাওয়া যায়। যদিও বাহির থেকে গেইট দুটি আটকে রাখা হয়েছে তারপরও বাহির থেকে দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো উত্তেজিত জনতার কতটা আক্রোশের মুখে পড়েছিলো এই ভবনটি। ভাঙচুর ও আগুনের লেলিহান শিখায় কঙ্কালসার হয়ে পরেছে ভবনটির কাঠামো।
এদিন দেখা যায়, কার্যালয়টির মূল ফটক অক্ষত থাকলেও কর্মীদের প্রবেশের জন্য যে ফটকটি নির্ধারিত ছিলো সেটির কোন অস্তিত্ব নেই। ফলে ককশিট ও বাঁশ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ফটকটি। এক সময়ের ব্যস্ততম এই কার্যালয় এখন জনমানবহীন।
দলের মন্ত্রী-এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের আসা যাবার পথ নির্বিঘ্ন রাখার জন্য কার্যালয়ের সামনের রাস্তাটি সবসময় ফাঁকা করে রাখা হতো। থাকতো পুলিশ সহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের দ্বারা নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। তবে এসবই এখন অতীত।
সড়কটি এখন ট্রাক মালিকদের দখলে। ফুটপাত দখল করে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন দোকানপাট। কার্যালয়টিতে প্রবেশের মত স্থানও আর অবশিষ্ট নেই। আওয়ামী লীগের এমন আকষ্মিক পতনে মানুষ তার নিজস্ব প্রয়োজনে অতীতের খাতায় ফেলে দিচ্ছে তাদের যত সৌর্য-বীর্য।
কার্যালয়টির মূল ফটকের পাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি দোকান। এরকমই একটি সদ্য গড়ে উঠা চায়ের দোকানে কথা হয় বেসরকারি চাকরিজীবী তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে। বার্তা২৪.কম কে তিনি বলেন, 'এই রাস্তাটা সবসময় নেতাকর্মীরা দখল করে রাখতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চাপাচাপিতে দাঁড়ানোটাও ছিলো দুরুহ। এখন এখানেই চায়ের দোকানে গড়ে উঠেছে, সেখানে বসে চা খাচ্ছি।'
এই যে দোকান দিচ্ছেন, সামনে এতো ট্রাক দাড় করিয়ে রাখছে কেউ কিছু বলছে না জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানদার বার্তা২৪.কম কে বলেন, 'এইখানে তো আর আগের মত নেতাকর্মীর আসে না। পুলিশও এইদিকে আসে না। রাস্তাটা খালিই থাকে তাই ট্রাক এখানে এনে রেখে দেয়। আমিও দোকান দিছি। এখনো কোন সমস্যা হয়নি।'
এর আগে গত ৬ আগস্ট কার্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙচুর করে নিয়ে যায় চেয়ার টেবিলসহ গুরুত্বপূর্ণ সব আসবাবপত্র। পরে আগুন লাগিয়ে দিলে পুড়ে যায় সব কিছু। সে পোড়া ধ্বংসস্তূপ খুঁজে কিছু মানুষ বের করছেন লোহা ও অন্যান্য ধাতপ পদার্থ।
স্টিলের স্ট্রাকচারের উপর নির্মিত এই আধুনিক স্থাপত্যের ভবনটি আগুনের তান্ডবে কঙ্কালসার দাঁড়িয়ে আছে। পুড়ে গেছে দ্বিতীয় তলার সেমিনার হলের স্টেজও। আগুনের লেলিহান শিখা থেকে রক্ষা পায়নি একমাত্র লিফটটিও। পুড়ে যাওয়া এসব জিনিস ভেঙে লোহাসহ ধাতপ অংশটুকু ভেঙে নিচ্ছিলেন টোকাইরা।
এর আগে, ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে সাবেক সরকার প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশত্যাগ করেন। তার দেশ ত্যাগের খবরে আন্দোলনকারীদের রোষের মুখে পরে এসব স্থাপনা।
এদিন, দুপুরের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং ধানমন্ডি ৩ নম্বরে দলটির সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়, তেজগাঁও ঢাকা জেলা কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে আন্দোলনকারীরা।