মোটর ট্রলির মাধ্যমে চলছে রেললাইন পর্যবেক্ষণ, প্রস্তুতির তোড়জোড়
দীর্ঘ বন্ধের পর পুরোদমে যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে প্রস্তুতি নিচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে রেলের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্নও হয়েছে বলে জানিয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
তিনি বলেছেন, ট্রাকগুলো (লাইন) ভালো করে মনিটর করার জন্য আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোটর ট্রলি ব্যবহার করছেন। ভিন্ন স্থানে যাচ্ছেন। আমাদের লিমিট ক্রসিং গেটগুলো ঠিক আছে কিনা, আমাদের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনগুলো সচল আছে কিনা সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন ঘুরে ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।।
মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, দীর্ঘ ১৭ দিন পর আমরা আগামী ১৫ তারিখ থেকে সম্পূর্ণরূপে সব ধরনের ট্রেন পরিচালনা শুরু করবো। আজকে ঢাকা থেকে যথারীতি দুইটি কন্টেইনার ট্রেন চলে গেছে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। আগামীকাল সকল মেল, লোকাল, কমিউটার ট্রেন যথারীতি চলাচল শুরু করবে এবং ১৫ তারিখ থেকে সকল আন্তঃনগর, মেল, লোকাল, মালবাহী যত ধরনের ট্রেন আছে বিভিন্ন গন্তব্যে আমরা সব চালিয়ে দিব। আমরা আশাবাদী রেল স্টেশন আবার সরব হয়ে উঠবে।
রেল চলাচলের আগে সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশ রেলওয়ে অনেকগুলো ডিপার্টমেন্ট এর সমন্বয়ে পরিচালিত হয়। এখানে আমি যেমন ট্রাফিক কাজ পরিচালনা করি, কমার্শিয়াল দেখি। ট্রেন ম্যাকানিজম ডিপার্টমেন্ট আছে, ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট আছে, ইলেকট্রিক ডিপার্টমেন্ট আছে সব মিলিয়ে আমাদের রেল চালানোর প্রথম যে বিষয়টা সেটা হচ্ছে ট্র্যাকের (লাইনের) কি অবস্থা। এই ট্র্যাক ভালো করে মনিটর করে দেখার জন্য আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মোটর ট্রলি ব্যবহার করছে। ভিন্ন স্থানে যাচ্ছে। আমাদের লিমিট ক্রসিং গেটগুলো ঠিক আছে কিনা। আমাদের লোকোমোটিভ ইঞ্জিনগুলো সচল আছে কিনা। এই বন্ধে আমরা আমাদের পেন্ডিং কাজগুলো আমরা প্রায় সবই সম্পন্ন করে ফেলেছি। আমরা আশাবাদী আমরা আগামী ১৫ তারিখ থেকে যথাযথভাবে ঢাকা থেকে ফুলফিল (সম্পূর্ণ) ভাবে সব ট্রেন চালাতে পারবো। আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে যে দায়িত্ব দেয়া আছে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করবো।
এর আগে গতকাল রোববার ( ১১ আগস্ট) বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক জনসংযোগ কর্মকর্তা মো.নাহিদ হাসান খাঁন গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, মঙ্গলবার থেকে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু টানা ২৩ দিন ধরে বন্ধ থাকার পর আগামীকাল সোমবার থেকে মালবাহী ট্রেন ও ১৩ আগস্ট থেকে মেইল, এক্সপ্রেস, লোকাল, কমিউটার ট্রেন এবং ১৫ আগস্ট থেকে আন্তঃনগর ট্রেন পর্যায়ক্রমে পরিচালনার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পারাবত ও জামালপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকবে। আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট আগামীকাল (সোমবার) বিকাল ৫টা থেকে ক্রয় করা যাবে।
এর আগে, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সরকার কারফিউ জারির পর গত ১৯ জুলাই থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয় ট্রেন চলাচল। ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর গত ১ আগস্ট থেকে স্বল্প দূরত্বে ট্রেন চলাচল শুরু করে। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা অসহযোগ আন্দোলনের প্রথমদিন ফের বন্ধ করা হয় ট্রেন চলাচল।
গত রোববার (৪ আগস্ট) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. নাহিদ হাসান খান এক বার্তায় জানান, পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সব ধরনের ট্রেন চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে সারা দেশের ট্রেন চলাচল।