ফেনী পৌরসভার অগ্নিসংযোগ-লুট, সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের খবরে ফেনীতে বিক্ষুব্ধ জনতার রোষানলে পড়ে ফেনী মডেল থানা ও পৌরসভা। এতে ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুনে পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর বন্ধ হয়ে যায় নাগরিক সেবা। পৌরসভায় অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, লুটের ঘটনায় ৫ কোটি ৫৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৫০ টাকা সমমূল্যের সামগ্রীর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ২৫টি খাতে নিরূপিত ক্ষতি মূল্যায়ন করে এ আনুমানিক আর্থিক পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন ফেনী পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মো. আবুজর গিফরী।

প্রাপ্ত ক্ষয়ক্ষতির তালিকায় দেখা গেছে, যান্ত্রিক শাখায় ২ কোটি ৯৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা, পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার কক্ষে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মেডিকেল অফিসারের কক্ষের ১৬ লাখ ৩৬ হাজার ৬শ টাকা, সাধারণ শাখার ৫১ লাখ ৩ হাজার টাকা, হিসাব বিভাগ শাখার মালামালের ক্ষতি হয়েছে ৯ লাখ ৮৯ হাজার টাকা, কর নিরূপণ শাখার ৩ লাখ ১২ হাজার ৮৩০ টাকা, কর আদায় শাখার ১৫ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ট্রেড লাইসেন্স শাখার ৬ লাখ ৯৮ হাজার ১শ' টাকা, স্বাস্থ্য শাখায় ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা, কনজারভেন্সি শাখার ২৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কক্ষের ৭ লাখ ২৮ হাজার ৫শ' টাকা ক্ষতি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও উপসহকারী প্রকৌশলী সিভিল-১ কক্ষের ২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, উপসহকারী প্রকৌশলী সিভিল-২ কক্ষের ৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকা, উচ্চমান সহকারির কক্ষের ২ লাখ ৮ হাজার টাকা, উপসহকারি প্রকৌশলী বিদ্যুৎ এর ৪ লাখ ৩ হাজার টাকা, উপসহকারি প্রকৌশলী বিদ্যুৎ এর কক্ষের ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৫শ' টাকার ইলেট্রিক মালামাল, ব্লাড ব্যাংকের ৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা, মশক নিধন কক্ষে ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৩ লাখ ৯০ হাজার ৯শ' টাকা, মসজিদের মালামাল ২ লাখ ২২ হাজার ৬২০ টাকা, রিকশা স্টোরের মালামাল ৪ লাখ ৫৮ হাজার ৬শ' টাকা, পানি শাখার মালামাল ৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫শ' টাকা, পেট্রোবাংলার পানি শাখার ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মালামালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া আগুনে পৌর ভবনের আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা।

পৌরসভা সংস্কার প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক (ডিডিএলজি) গোলাম মোহাম্মদ বাতেন বলেন, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে ক্ষতি নিরূপণের তালিকা করা হয়েছে। এটি সংস্কারে পৌরসভার রাজস্ব তহবিল থেকে কিছু ব্যয় হতে পারে। এক্ষেত্রে পৌর পরিষদকে এটি করতে হবে। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে চিঠি পাঠানো হবে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে ফেনী পৌরসভায় অগ্নিসংযোগ, হামলা ও লুটপাটে বিএনপি কিংবা জামায়াতের লোক নয় বলে দাবি করেছেন দল দুটির নেতারা। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার দাবি করেন, বিএনপির কোন নেতাকর্মী এ সমস্ত অপকর্মে জড়িত নয়। যারা এ সমস্ত কাজে জড়িত ছিল, তাদের কাউকে আমরা চিনি না। টোকাই শ্রেণীর কিছু লোক ফেনী পৌরসভা, ফেনী মডেল থানাসহ সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এসব স্থাপনায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাউদ্দিন মামুন জানান, আমরা জ্বালাও-পোড়াও বা লুটপাটের রাজনীতি করি না। ছাত্রদল শান্তিপূর্ণ সংগঠন। পৌরসভার লুটপাট হওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারে যুবদল-ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ভূমিকা রাখছে।

এদিকে পৌরসভার অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সংস্কার করে সেবা কার্যক্রম চালুর আশ্বাস দিয়েছেন বিএনপির নেতারা। এজন্য পৌরসভায় বৈদ্যুতিক সমস্যা সমাধান, কর্মকর্তাদের বসার জন্য চেয়ার টেবিল ও কম্পিউটার সামগ্রী প্রদান করার আশ্বাস দেন তারা। ইতিমধ্যে ছাত্রদল-যুবদল নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় পৌরসভা থেকে লুট করা বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়েছে।