যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রোববার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক শুরু হয়।
বিজ্ঞাপন
ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গত ৮ আগস্ট ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো কোনো মার্কিন প্রতিনিধি বাংলাদেশ সফর করছে।
এর আগে গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের সহকারী আন্ডার সেক্রেটারি ব্রেন্ট নেইম্যানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ঢাকায় আসেন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিনিধি এই দলে আরও রয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক অ্যাসিস্টেন্ট সেক্রেটারি ডোনাল্ড লু, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ, ইউএসএআইডি এবং মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি কার্যালয়ের প্রতিনিধি।
ড. ইউনূস ছাড়াও আজ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন প্রতিনিধিদলটি।
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস এক বার্তায় জানায়, রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পেরে ভালো লেগেছে। আমরা আমাদের অংশীদার বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে আশরাফুল আলম ও আসাদুল আলমের বিরুদ্ধে প্রকাশিত ‘অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রতিবেদনের’ প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে দেশের বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ।
ওই দৈনিকে গত ১৮ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত প্রতিবেদনে আশরাফুল আলম এবং আসাদুল আলম মাহির ভূয়া ‘পে অর্ডারের' মাধ্যমে অনিয়মের আশ্রয় নেন বলে দাবি করা হয়।
এস আলম গ্রুপের মনোনীত প্রতিনিধি মনোতোষ চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিবেদনটি অসত্য এবং অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।
এস আলম গ্রুপ মনে করে, প্রতিবেদক পুরো প্রক্রিয়াকে ভুল বুঝে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছেন।
ওই প্রতিবেদনে প্রতিবেদক উল্লেখ করেছেন, কালোটাকা সাদা করার জন্য আয়কর অধ্যাদেশের বিধান অনুসরণ করে ট্যাক্স ফাইল জমা দেওয়া হয়েছিল। এমনকি অর্থ সাদা করার বিষয়টির প্রেক্ষাপট যাচাই করতে প্রতিবেদক কর কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করেন। প্রতিবেদন অনুসারে উভয় ফাইলেই, অর্থ সাদা করার জন্য আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা 19AAAA এর অধীনে প্রদত্ত ৩০.০৬.২০২১ তারিখের আগে পে-অর্ডার ইস্যু করে রিটার্ন জমা দেওয়া হয়েছিল।
প্রতিবেদক আরও উল্লেখ করেছেন, ‘নথিপত্র অনুসারে, আশরাফুল এবং আসাদুল ২০২০-২১ অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকার দুটি পে অর্ডারের মাধ্যমে প্রথমবার এই কালো টাকা সাদা করতে ব্যর্থ হন। তবে কয়েকমাস পরে দ্বিতীয়বার চেষ্টা করে তারা সফল হন। এতে বোঝা যায় প্রথম দুটি পে অর্ডার ভূয়া ছিল।’
এস আলম গ্রুপের দাবি, প্রতিবেদক বানোয়াট তথ্য প্রকাশ করেছে।
এস আলম বিবৃতিতে জানায়, যেহেতু রিটার্নের সাথে পে-অর্ডার জমা দেওয়া হয়েছিল। এবং তা আদায়ের জন্য কর অফিস ব্যাংকে পেশ করেছিল। সংগ্রহের জন্য ব্যাংকে দেওয়া হলে ট্যাক্স অফিসের পে-অর্ডারগুলোর সাথে অসাবধানতাবশত নম্বরগুলো স্ট্যাম্প করা হয়েছিল। পে-অর্ডার নগদ না হওয়ায়, ট্যাক্স অফিস নতুন পে-অর্ডারের অনুরোধ জানিয়ে একটি চিঠি পাঠায়। তাদের চিঠির প্রেক্ষিতে, ত্রুটিপূর্ণ পে অর্ডার আদেশ বাতিল করা হয় এবং নতুন পে অর্ডার জারি করা হয়। যা পরবর্তীতে সঠিকভাবে দেওয়া হয়।
যেহেতু উল্লিখিত পে-অর্ডারগুলো দেরিতে সংগ্রহ করা হয়েছিল, তাই বিষয়টি নতুন যুগ্ম কমিশনার অব ট্যাক্সেসের নজরে আসে বিষয়টি। যুগ্ম কমিশনার আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ১২০ এর অধীনে একটি নোটিশ জারি করেন এবং পে অর্ডারের সত্যতা যাচাই করার জন্য কর পরিদর্শককে ব্যাংকে পাঠান। ট্যাক্স ইন্সপেক্টর ব্যক্তিগতভাবে ব্যাংক পরিদর্শন করেন এবং জমাকৃত পে অর্ডারের সত্যতা যাচাই করেন এবং জারিকৃত পে অর্ডার সঠিক বলে তারা তার প্রমাণ পান। এর ফলে যুগ্ম কর কমিশনার ১৪৪ ধারার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
উপরোক্ত বিবৃতি অনুসারে, এটা প্রমাণিত হয় যে, আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪-এ যোগ করা ধারা 19AAAA এর অধীনে প্রদত্ত সমস্ত বিধান এবং সুবিধাগুলি মেনে ২০২০-২১ আর্থিক বছরে যথাযথভাবে কর প্রদান করা হয়েছে। যেহেতু 19AAAA ধারার বিধান সম্পূর্ণরূপে মেনে চলা হয়েছে, কর ফাঁকির প্রশ্নই ওঠেনি।
গ্রুপ তাদের বিবৃতিতে আরও জানায়, প্রতিবেদক পুরো প্রক্রিয়ার নিয়ে ভুল বুঝেছেন। তার ভুল তথ্য নিয়ে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। তাই প্রকাশিত সংবাদের তীব্র প্রতিবাদ জানায় এস আলম গ্রুপ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালযয়ের (বিএসএমএমইউ) সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. হাসানুল হক নিপুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে দুর্বৃত্তের দেয়া আগুনে পুড়ে গেছে ৮০টির বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেলে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। তবে কি কারণে ঘটনার সূত্রপাত সে বিষয়ে প্রশাসনের কেউ কিছু জানাতে পারেনি। সংর্ঘষ চলাকালে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির আওয়াজ শোনা যায়।
স্থানীয়রা জানান, লারমা স্কয়ার এলাকায় বৃহস্পতিবার বিকেলে গত বুধবার খাগড়াছড়ি সদরে নিহত মামুন হত্যার বিচারের দাবীতে বিক্ষোভ চলছিল। বিক্ষোভের এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় দুর্বৃত্তরা লারমা স্কয়ার এলাকায় অগ্নিসংযোগ করে। ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট কয়েকঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসলেও পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রাজেশ বড়ুয়া জানান, আগুনে ৮০টির মতো দোকান পুড়ে গেছে।
সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ জনের মতো আহতের খবর পাওয়া গেছে এবং আশঙ্কাজনক অবস্থায় ২ জনকে রাতে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে আনা হয়েছে।
দীঘিনালার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ জানান, পরিস্থিতি এখন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্যা জানানো হয়। এর আগে হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকা সন্দেহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টোরিয়াল বডি ৫ শিক্ষার্থীকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করে। এছাড়া আরও একজনকে গ্রেফতারের কথা জানায় ডিএমপি।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, মো. মোত্তাকিন সাকিন, আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম।
ডিএমপি জানায়, বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢবির ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের অতিথি কক্ষে চোর সন্দেহে অজ্ঞাতনামা কিছু লোক এক ব্যক্তিকে চড় থাপ্পড় ও মারধর করে। পরবর্তীতে হলের দক্ষিণ ভবনের অতিথি কক্ষে তাকে আবারো বেধড়ক মারপিট করা হয়। এক পর্যায়ে ওই যুবক অচেতন হয়ে পড়ার সংবাদ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের জরুরী বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা শাহবাগ থানায় জানালে পুলিশ মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে। ময়নাতদন্তের পর নিহতের লাশ তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিএমপি জানায়, এই ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার পর তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিএমপি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তারা।